মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়াম। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পরের ম্যাচের ভেন্যু মুম্বাই শহরের এই ঐতিহাসিক মাঠ। মুম্বাই শহরকে পুরো বিশ্ব চেনে দুই কারণে। একটা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ মুভি ইন্ডাস্ট্রি বলিউডের জন্য। অন্যটি ক্রিকেটের সর্বকালের সেরা শচীন টেন্ডুলকারের জন্য। ১ যুগ আগে এই ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামেই শচীন পেয়েছিলেন তার ক্যারিয়ারের পূর্ণতা। ২০১১ বিশ্বকাপ ফাইনালের ভেন্যুতে বাংলাদেশ নামবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে। 

বিশ্বকাপ নিয়ে ঢাকাপোস্টের ধারাবাহিক আয়োজন বিশ্বকাপের মাঠ। আজ থাকছে মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়াম নিয়ে। 

টেস্ট ম্যাচ শেষ। সব আয়োজন শেষ। তবু মাঠভর্তি দর্শক। এরইমাঝে একজন বেরিয়ে এলেন ড্রেসিংরুম থেকে। বাউন্ডারি লাইন পেরিয়ে ২২ গজের ক্রিজে এসেছে হাত রাখলেন। তিনি শচীন টেন্ডুলকার। মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়াম শচীনের ঠিক ততটাই আপন। কিংবা মহেন্দ্র সিং ধোনি নুয়ান কুলাসেকেরার বলটা উড়িয়ে মেরেছেন। বল সীমানার বাইরে। বিশ্বকাপ ভারতের। ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়াম এমন বহু আইকনিক মুহূর্তের সাক্ষী। সেই স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ খেলতে নামছে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে। 

কোন দলের অতীত কেমন? 

মুম্বাইয়ের এই মাঠে বাংলাদেশ কেবল একবারই খেলেছিল। সেটা ১৯৯৮ সালে। ম্যাচটা বাংলাদেশ হেরেছিল। শুধু হার না। ওই ম্যাচেই লজ্জার রেকর্ডও গড়েছিল বাংলাদেশ। ভারতের বিপক্ষে ১১৫ রানে আউট হওয়া বাংলাদেশের ইনিংস এই মাঠে সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহ। 

আবার ঠিক বিপরীত অবস্থা দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য। এই মাঠের সর্বোচ্চ দুই স্কোরের দুটোই দক্ষিণ আফ্রিকার দখলে। ভারতের বিপক্ষে মুম্বাইয়ের মাঠে ৪৩৮ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করায় প্রোটিয়ারা। আর সবশেষ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে এসেছিল ৩৯৯ রান। দুই ম্যাচেই বড় ব্যবধানের জয় পেয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। সবমিলিয়ে মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে ৩ ম্যাচে হার আর ২ ম্যাচে জয় এসেছে প্রোটিয়াদের। 

স্কোর কেমন হবে? 

মুম্বাইয়ের এই পিচে ৩০০ এর বেশি রান উঠেছে কেবল তিনবার। তার মাঝে দুইবারই করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। সর্বোচ্চ রান ৪৩৮। সেটা এসেছে প্রোটিয়া ব্যাটারদের হাত ধরে। ভারতের বিপক্ষে সেই ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছিলেন তিন দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটার কুইন্টন ডি কক, ফাফ ডু প্লেসিস এবং হাশিম আমলা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৯৯ রানের ইনিংসটাও দক্ষিণ আফ্রিকার করা। 

ওয়াংখেড়ের পিচে ২৫০ থেকে ৩০০ এর মাঝে রান এসেছে ১৭ বার। ২০০ থেকে ২৫০ এর মাঝে রান এসেছে ১২ রান। আর সর্বনিম্ন রানের স্কোর ১১৫। সেটা অবশ্য বাংলাদেশেরই। 

প্রথম ইনিংসে গড় ব্যাটিং স্কোর ২৫১। ওভারপ্রতি ৫.৮১ এবং উইকেটপ্রতি ৩১ এর বেশি রানের রেকর্ড আছে এই পিচে।  

কাদের জয়ের সম্ভাবনা বেশি

আদর্শ উইকেট বলতে যা বোঝায় ওয়াংখেড়ের উইকেট তেমনই। কুইক আউটফিল্ড, ব্যাট-বলের ভারসামু সবমিলিয়ে আদর্শ এক পিচেই খেলতে নামবে বাংলাদেশ। এখন পর্যন্ত এই মাঠে ১৩ বার ম্যাচ জিতেছে আগে ব্যাট করা দল। আর ১১ বার জিতেছে পরে ব্যাট করা দল। 

কেমন হবে পিচ? 

মুম্বাইয়ের পিচ বেশ আগ থেকেই বোলারদের সুইং এর সুবিধা দিয়ে আসছে। সাগরপাড়ের শহর হওয়ায় এখানে বাতাসে সুইং মুভমেন্ট ভাল পেয়ে থাকেন বোলাররা। পেস কিংবা স্পিন দুই ধরনের বোলারই এখানে নিজেদের কারিশমা দেখাতে পারেন। তবে, ব্যাটারদের জন্যও আছে সুবিধা। বেশকিছু বড় স্কোর এখানে দেখা গিয়েছে। তাই এককভাবে ব্যাটিং বা বোলিং সহায়ক উইকেট বলার সুযোগ থাকছে না। 

জেএ