এবারের বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত প্রতিপক্ষ বোলারদের উপর রীতিমত তান্ডবই চালিয়েছেন প্রোটিয়া ব্যাটাররা। ৪ ম্যাচের তিনটিতে স্কোর করেছেন ৩০০ এর বেশি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৪২৮ রান করে বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন, আবার ইংলিশদের সঙ্গে স্কোরবোর্ডে উঠিয়েছেন ৩৯৯ রান। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ম্যাচটা বাদ দিলে আর সবম্যাচেই বোলারদের উড়িয়ে দিয়েছেন তারা। 

বাংলাদেশি চলচ্চিত্র ‘হাওয়া’য় অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরীর সংলাপ ‘ভয় পাচ্ছিস’ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল চলচ্চিত্র মুক্তির পরপরই। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে সেই সংলাপ আবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হতে শুরু করেছে। বিশ্বকাপে প্রোটিয়াদের পারফর্ম্যান্স নিশ্চিতভাবেই ভয়ের কারণ টাইগার ভক্তদের জন্য। দক্ষিণ আফ্রিকার সামর্থ্যের পাশাপাশি নিজেদের মলিন ফর্মটাও ভয় পাওয়ার বড় কারণ। 

বাংলাদেশের বোলাদের মধ্যে এবারের বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি উইকেট সাকিব আল হাসান এবং মেহেদি হাসান মিরাজের। টাইগার অধিনায়ক ৩ ম্যাচে দিয়েছেন ১৩৬ রান। নিয়েছেন ৫ উইকেট। উইকেটপ্রতি দিয়েছেন ২৭ রান। স্পিন বিভাগের আরেক নির্ভরতা মিরাজও অবশ্য ৫ উইকেট নিয়েছেন। তবে ইংল্যান্ড এবং নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে স্পেল শেষ করেছিলেন উইকেটশুন্য থেকে। আফগানদের বিপক্ষে ৩টি আর ভারতের বিপক্ষে ছিল ২ উইকেট।

হতাশ করেছেন দেশের পেসাররা। বিশ্বকাপে যাওয়ার আগে এই পেসারদের উপরেই সবচেয়ে বেশি আস্থা রেখেছিল দল। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হারের পর পেসার তাসকিন আহমেদ জানিয়েছিলেন, ২০১৫ বা ২০১৯ বিশ্বকাপের তুলনায় এবারের পেস বিভাগই বেশি সফল। আবার মুস্তাফিজুর রহমান উইকেট না পেয়ে বলেছিলেন, অনেক সময় আল্লাহ-বিল্লাহ করেও উইকেট পাওয়া যায় না। 

দুই পেসারের দুই বিপরীত ভাষ্যের মতই গোলকধাঁধায় আছে বাংলাদেশের পেস বোলিং ইউনিট। হাসান মাহমুদ ১ ম্যাচ খেলে ১ উইকেট পেয়েছেন। ৪ ম্যাচে ১৬৩ রান খরচা করে মুস্তাফিজের উইকেট মোটে ২টি। মানে ১টি উইকেট পেতে ৮০ এর বেশি রান দিয়েছেন তিনি। শরীফুল ২০৬ রান দিয়ে নিয়েছেন ৫ উইকেট। তবে, এরমাঝে ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই ছিল ৪টি। তাসকিন আহমেদ আবার ৪ ম্যাচে ৩ উইকেট পেয়েছেন। তার গড়টাও পঞ্চাশের কাছাকাছি। 

আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটা বাদ দিলে আর সব ম্যাচেই বোলিং বিভাগ ছিল একেবারেই মলিন। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ রান দিয়েছে ওভারপ্রতি ৭ এর বেশি। ৭.২৮ গড়ে ৩৬৪ রান জমা করে ইংলিশ ব্যাটাররা। আবার চেন্নাইয়ের মন্থর উইকেটের ফায়দাও নিতে পারেনি বাংলাদেশ। সাড়ে ৫ এর বেশি গড়ে রান দিয়েছেন বোলাররা। ভারতের বিপক্ষে রান দিয়েছে ওভারপ্রতি ৬ এর বেশি। 

দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিংয়ের দিকে তাকানো যাক। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে অঘটনের সেই ম্যাচ বাদ দিয়ে ৩ ম্যাচেই তারা রান তুলেছে ৬ এর বেশি। অজিদের বিপক্ষে ওভারপ্রতি ৬.২২ করে রান তুললেও বাকি দুই ম্যাচে রান এসেছে প্রায় ৮ এবং সাড়ে ৮ গড়ে। এমন প্রতিপক্ষকে হয়ত ভয় না পেয়েও উপায় নেই বাংলাদেশের। 

জেএ