ম্যাচ চলাকালে মাঠেই নামাজ-সিজদাহ করার জন্য পাকিস্তানের উইকেটকিপার ব্যাটার মোহাম্মদ রিজওয়ানের বিরুদ্ধে আইসিসির কাছে শাস্তি দাবি ভারতীয় আলোচিত আইনজীবী বিনীত জিন্দালের। একই আইনজীবী এর আগে পাকিস্তানি উপস্থাপক জয়নাব আব্বাসের বিরুদ্ধে ‘হিন্দু-বিরোধী’ বক্তব্যের জন্য অভিযোগ দায়ের করেছিলেন, যার ফলে সেই উপস্থাপিকা বিশ্বকাপ চলাকালেই ভারত ছেড়েছিলেন

যদিও বিষয়টি নিয়ে রিজওয়ান বা পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) তরফে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। অফিসিয়ালি কোনো মন্তব্য করেনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থা-আইসিসিও।

ঘটনাটি ঘটে গত ৬ অক্টোবর হায়দরাবাদে পাকিস্তান বনাম নেদারল্যান্ডসের মধ্যকার বিশ্বকাপের ম্যাচ চলাকালে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, রাজীব গান্ধী আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে সেদিন ম্যাচের মধ্যবিরতিতে মাঠেই নামাজ আদায় করেন রিজওয়ান।

এর আগেও বহুবার এমনটা করতে দেখা গেছে তাকে। নিজের ধর্মচর্চার জন্য সমর্থকদের কাছে প্রশংসিতও হয়েছেন। শ্রীলঙ্কায় গত এশিয়া কাপেও ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের ফাঁকে তাকে মাঠে নামাজ পড়তে দেখা গেছে। তবে এবার সেই একই কাজে ভারতীয় অনেক সমর্থকের সমালোচনার মুখে পড়েছেন রিজওয়ান।

খেলাধুলার পাশাপাশি ধর্মচর্চার জন্য আলাদা পরিচিতি আছে রিজওয়ানের। এর আগেও তিনি মাঠে নামাজ পড়েছেন।

এক ভারতীয় সমর্থক পাক ব্যাটারকে ক্রিকেট এবং ধর্মের মিশ্রণের জন্য অভিযুক্ত করে লিখেছেন, ‘মোহাম্মদ রিজওয়ান কখনই ক্রিকেট এবং ধর্মকে মেশাতে ব্যর্থ হন না। তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে এটি করেন যখন সেখানে ভারতীয়রা তাকে দেখছে। তিনি এখানে ক্রিকেট খেলতে এসেছেন, নাকি ধর্ম প্রচার করতে এসেছেন?’ 

ডাচদের পর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচজয়ী সেঞ্চুরির পর রিজওয়ান তার সেঞ্চুরিটি ফিলিস্তিনের গাজার জনগণকে উৎসর্গ করেছিলেন। টুইটারে রিজওয়ান লিখেছেন, ‘গাজায় নিহত আমাদের ভাই-বোনদের জন্য ঐ জয়টা উৎস্বর্গ করলাম। তাদেরকে কিছু দিতে পেরে আমরা খুশী। এই জয়ের কৃতিত্ব পুরো দলের, বিশেষ করে আব্দুল্লাহ শফিক ও হাসান আলির কথা আলাদা করে বলতেই হয়। তাদের কারনেই জয়টা সহজ হয়েছে।’

খেলার সঙ্গে রাজনীতি ও ধর্ম জড়িয়ে ফেলার অভিযোগ সামনে আনছেন কেউ কেউ। এবার তো ভারতীয় আইনজীবী বিনীত জিন্দাল আইসিসির কাছে রিজওয়ানের বিচার চাইলেন।আইসিসিকে দেওয়া চিঠিতে ভারতীয় এই আইনজীবী দাবি করেছেন, জাতি, ধর্ম, বর্ণের ঊর্ধ্বে বিভিন্ন দেশের মধ্যে ভালো সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য আন্তর্জাতিক খেলাধুলোর আয়োজন করা হয়। আর খেলাধুলোর সেই স্পিরিটের বিরুদ্ধে কেউ কোনো কাজ করলে তার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে।

অভিযোগপত্রে বিনীত দাবি করেছেন, গত ৬ অক্টোবর হায়দরাবাদে নেদারল্যান্ডস-পাকিস্তান ম্যাচর মধ্যেই নামাজ পড়তে দেখা গিয়েছে রিজওয়ানকে। অনেক ভারতীয়ের মধ্যে নামাজ পাঠ করে ইচ্ছাকৃতভাবে নিজের ধর্মকে তুলে ধরেছেন পাকিস্তান তারকা। যা খেলার স্পিরিটের বিরোধী। তিনি যে কাজ করেছেন, তা ইচ্ছাকৃতভাবেই করেছেন। তিনি বার্তা দিতে চেয়েছেন যে তিনি মুসলিম। 

এফআই