কিউইদের দাপটে ২৮২ রানে থামল ইংল্যান্ড
অনেকটা ফাঁকা মাঠেই শুরু হলো বিশ্বকাপের ১৩তম আসর। গত আসরের দুই ফাইনালিস্ট ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ড আজ (বৃহস্পতিবার) উদ্বোধনী ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংলিশরা আক্রমণাত্মক মেজাজে খেলবে—সেটা সবারই জানা। তবে বিশ্বকাপের সূচনায় তাদের সেভাবে দাপট দেখাতে দেয়নি কিউই বোলাররা। ইংল্যান্ডের হয়ে প্রথম ইনিংসে একমাত্র পঞ্চাশোর্ধ ব্যাটার জো রুট। অভিজ্ঞ এই ব্যাটারের ৭৭ রানে ভর করে ইংলিশদের সংগ্রহ ৯ উইকেটে ২৮২ রান।
এর আগে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ছাড়াই মাঠে নামে বিশ্বক্রিকেটের দুই পরাশক্তি দল। যেখানে টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন কিউই অধিনায়ক টম ল্যাথাম। আগেই শোনা গিয়েছিল, নিয়মিত অধিনায়ক কেইন উইলিয়ামসন ও টিম সাউদিকে ছাড়াই নিউজিল্যান্ডকে প্রথম ম্যাচ খেলতে হবে। অন্যদিকে, চোটের কারণে একাদশে নেই ইংলিশদের বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক অলরাউন্ডার বেন স্টোকস।
বিজ্ঞাপন
উদ্বোধনী ম্যাচের শুরুটা অবশ্য খারাপ ছিল না ইংলিশদের। ওভারপ্রতি প্রায় ৬ গড় নিয়ে শুরু থেকেই জস বাটলারের দল রান তুলছিল। দ্বিতীয় বলেই ছয় হাঁকিয়ে তাদের রানের খাতা খুলেন জনি বেয়ারস্টো। ট্রেন্ট বোল্টের প্রথম ওভারে আসে ১২ রান। অপরপ্রান্তে তার ওপেনিং সঙ্গী ডেভিড মালান রান পেতে কিছুটা হিমশিম খেয়েছেন। যার ধারাবাহিকতায় চাপে পড়ে কিউই পেসার ম্যাট হেনরির করা ইনিংসের অষ্টম ওভারে তিনি পা হড়কান। উইকেটরক্ষক টম ল্যাথামকে তিনি ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ১৪ রানে (২৪ বল)।
এরপর থেকে ইংলিশদের ওপর নিয়ন্ত্রণ ফেলতে শুরু করেন বাঁ-হাতি স্পিনার মিচেল স্যান্টনার। যা তিনি পুরো ইনিংসজুড়ে ধরে রেখেছিলেন। স্বাভাবিকভাবে খেলতে থাকা বেয়ারস্টোকে নিজের প্রথম শিকার বানান স্যান্টনার। তার বল লং অফের ওপর দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ দেন ড্যারিল মিচেলের হাতে। তার আগে ৩৫ বলে ৩৪ রান করেন বেয়ারস্টো। এরপর সেই ধাক্কা সামলে ইংলিশদের স্বপ্ন দেখাতে থাকেন হ্যারি ব্রুক ও রুট। স্বাভাবিক মেজাজে খেলতে থাকা রুটের অপরপ্রান্তে ব্রুক আগ্রাসী মেজাজে ব্যাট চালাতে থাকেন। কিন্তু সেই মনোভাবই কাল হলো তার। রাচিন রবীন্দ্র’র বলে দু’টি চার এবং একটি ছক্কা মারার পরের বলেই আবার বড় শট খেলতে গিয়ে ব্রুক উইকেট দিয়ে বসেন। ২৫ রান (১৬ বল) করে তিনি তালুবন্দি হন ডেভিড কনওয়ের।
ম্যাচে মাত্র তিন ওভারের জন্য আক্রমণে এসেছিলেন অনিয়মিত বোলার গ্লেন ফিলিপস। এর ভেতরই তিনি গুরুত্বপূর্ণ দুটি উইকেট নেন, প্রত্যেকটিই আবার বোল্ড। তার প্রথম শিকার মঈন আলি। মাত্র ১১ রানেই ইংলিশ অলরাউন্ডার ফিলিপসের বলে নিজের স্টাম্প হারান। দলীয় ১১৮ রানেই ৪ উইকেট হারানো ইংলিশদের বড় সংগ্রহের স্বপ্ন তখন শঙ্কায় পড়ে যায়। তবে স্বপ্ন জোড়া লাগানোর চেষ্টায় নামেন অধিনায়ক বাটলার ও রুট। দুজনে মিলে জুটি গড়েন ৬০ রানের। এর ভেতর রুট ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৩৭তম ফিফটি তুলে নেন।
তাকে যোগ্য সঙ্গ দিতে থাকা বাটলারও হাঁটতে থাকেন ফিফটির পথে। দুটি করে চার-ছয়ে একশ স্ট্রাইকরেটও ধরে রাখেন ইংলিশ অধিনায়ক। ম্যাট হেনরির করা কিছুটা লাফিয়ে ওঠা বল খেলতে গিয়ে বাটলারের ব্যাট ছুঁয়ে যায় কিপারের হাতে। ফলে ৪৩ রানেই (৪২ বল) থামে তার ইনিংসটি। এরপর লিয়াম লিভিংস্টোন ও রুট আউট হয়ে যান অল্প সময়ের ব্যবধানে। লিভিংস্টোন ২০ রানে আউট হন বোল্টের বলে। ফিলিপসকে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান রুট। তার আগে তিনি ৮৬ বলে চারটি চার ও এক ছক্কায় ৭৭ রানের ইনিংস খেলেন।
তার বিদায়ের পর আর কেউই সেভাবে ইংল্যান্ডকে আশা দেখাতে পারেনি। ক্রিজে থিতু হতে পারেননি স্যাম কারানও। শেষদিকে আদিল রশিদের ছোট্ট ক্যামিওতে ইংল্যান্ড লড়াইয়ের পুঁজি পায়।
কিউইদের হয়ে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট পান ম্যান হেনরি। মিতব্যয়ী বোলিংয়ে স্যান্টনার নেন দুই উইকেট। এছাড়া ফিলিপস দুটি এবং একটি করে শিকার করেছেন বোল্ট ও রবীন্দ্র।
এএইচএস