অবিস্মরণীয় ও ট্র্যাজেডি ঘেরা বিশ্বকাপের ১২ ‘আইকনিক’ মুহূর্ত
৪৮ বছরের মধ্যবয়স পার করছে আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ। আরও বিশেষভাবে বললে এই ইতিহাস ওয়ানডে ফরম্যাটের। এরপর ক্রমান্বয়ে এসেছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের মতো আয়োজন।
১৯৭৫ সালে ক্রিকেটের প্রথম শ্রেষ্ঠত্বের প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। এরপর একে একে অনুষ্ঠিত হয়েছে ওয়ানডে বিশ্বকাপের ১২টি আসর। যেখানে উত্থান কিংবা স্বীকৃতি পেয়েছেন ক্রিকেট কিংবদন্তিরা, কেউবা অভিজ্ঞতা নিয়েছেন দুর্ভাগ্যে মোড়ানো অশ্রুসিক্ত ট্র্যাজেডির। তেমনই বিগত হওয়া আসরের ১২টি ‘আইকনিক’ মুহূর্ত তুলে ধরা হলো ঢাকা পোস্টের আয়োজন ‘বিশ্বকাপের রঙ্গমঞ্চে’।
বিজ্ঞাপন
ক্রিকেটের মর্যাদাপূর্ণ পঞ্চম দশকের বিদায়লগ্নে এবার ভারতে বসছে ত্রয়োদশ ওয়ানডে বিশ্বকাপ। রোমাঞ্চকর এই প্রতিযোগিতার মঞ্চে যেমন স্মরণীয় অনেক পরিস্থিতি তৈরি হয়, তেমনি আসে দুঃসহনীয় মুহূর্তও। কিছু দৃশ্য আনন্দের ভাবাবেগ দেয়, আবার এমনও হয়- যেসব দৃশ্য তীব্র সমালোচিত ও বিতর্কে ভরা। আগামী ৫ অক্টোবর হুইসেল বাজবে বিশ্বকাপের, যার ইতি ঘটবে ১৯ নভেম্বর।
আইসিসি ও বিশ্বকাপের জন্মলগ্ন
ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার সমন্বয়ে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) জন্ম ১৯০৯ সালে। এরপর ১৯১২ সালে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম কোনো ত্রিদেশীয় টেস্ট সিরিজের লড়াইয়ে নামে। তবে আয়োজক দেশ ইংল্যান্ডের প্রতিকূল আবহাওয়া ও ২২ গজের খেলায় সাধারণ মানুষের অনীহার কারণে ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা দেখা দেয়। এরপর বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশ নিয়মিত বিরতিতে ব্যাট-বলের খেলায় মুখোমুখি হতো। একপর্যায়ে ১৯৬০ সালে আসে ওয়ানডে ফরম্যাট। যা ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা অর্জন করতে থাকে।
আইসিসি যখন বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট আয়োজনের পরিকল্পনা করছে, তখন ১৯৭৩ সালে ইন্টারন্যাশনাল ওমেনস ক্রিকেট কাউন্সিল মেয়েদের বিশ্বকাপ আয়োজন করে। যদিও পরবর্তীতে মেয়েদের সংস্থাটি একীভূত হয় আইসিসির সঙ্গে। এরপর প্রথম মঞ্চস্থ হয় ছেলেদের ক্রিকেট বিশ্বকাপের। ১৯৭৫ সালের উদ্বোধনী আসরে অংশগ্রহণ করে ৮টি দেশ। তৎকালীন সময়ে টেস্ট মেম্বারশিপ থাকা ৬ দেশ- অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, ভারত, নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং বাইরে থেকে যুক্ত হয় শ্রীলঙ্কা ও পূর্ব আফ্রিকা (মহাদেশীয় কয়েকটি দেশের সমন্বয়ে)।
প্রথম বিশ্বকাপ, ১৯৭৫
আইসিসি ওয়ানডে ফরম্যাটের অনুমোদন দেওয়ার পঞ্চম বছর ১৯৭৫ সালে বিশ্বকাপের উদ্বোধন ঘটে। তখন ওয়ানডে ম্যাচ খেলা হতো ৬০ ওভারে। ওই সময়ে দক্ষিণ আফ্রিকা ছিল পরাক্রমশালী ক্রিকেট দেশগুলোর একটি। তা সত্ত্বেও বর্ণবাদী অভিযোগ ও আন্দোলনে উত্তাল দেশটি তখন ক্রিকেটে নিষিদ্ধ ছিল। বিশ্বকাপের অভিষিক্ত সময়ে ক্রিকেটাররা সাদা জার্সি এবং লাল বলে খেলেছেন। এছাড়া ওয়ানডে ফরম্যাটে হলেও তখন ম্যাচ পরিচালিত হতো ৬০ ওভারে।
বিশ্বকাপের প্রথম আসরের ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়েছিল ঐতিহাসিক লর্ডস ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। যেখানে অস্ট্রেলিয়াকে ১৭ রানে হারিয়ে প্রথম শিরোপা ঘরে তোলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মজার বিষয় হলো, তৎকালীন সময়ে ম্যাচ শেষ হলে দর্শকরা মাঠে নেমে খেলোয়াড়দের উল্লাসে শামিল হতেন। তারই এক ফাঁকে জনপ্রিয় ব্রিটিশ আম্পায়ার ডিকি বার্ডের মাথায় থাকা ক্যাপটি কেউ চুরি করে নিয়ে যায়।
১৯৭৯ বিশ্বকাপ
ক্রিকেটের প্রথম বৈশ্বিক আসর সফল হওয়ায় প্রতি চার বছর পরপর বিশ্বকাপ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যালেন্ডারে স্থান করে নেয়। দ্বিতীয় বারও প্রতিযোগিতার আসর বসে ইংল্যান্ডে, সেখানে আয়োজক দেশ ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন উইন্ডিজদের কাছে ৯২ রানের বড় ব্যবধানে পরাজিত হয়।
ইংলিশদের প্রধান তারকা বোলার বব উইলিস সেমিফাইনালে ইনজুরিতে পড়েছিলেন। যে কারণে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচটি তিনি খেলতে পারেননি। বিপরীতে কিংবদন্তি ক্যারিবীয় ব্যাটার ফাইনালে ১৫৭ বলে ১৩৮ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন, যা তাকে ফাইনালসেরার পুরস্কার এনে দেয়।
তৃতীয় বিশ্বকাপ আসর, ১৯৮৩
ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হওয়া এবারের টুর্নামেন্টেও টানা তৃতীয় বারের মতো ফাইনালে ওঠে উইন্ডিজরা। তবে তাদের আর ট্রেবল জেতা হয়নি। প্রথমবারের মতো এই উপমহাদেশে বিশ্বকাপ ট্রফি আনার গৌরব অর্জন করেন ভারতীয় অধিনায়ক কপিল দেব।
বিশ্বকাপের অন্যতম প্রধান আইকনিক ধরা হয় ম্যাচটিতে তালুবন্দি করা কপিল দেবের একটি ক্যাচকে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সর্বশেষ ব্যাটার স্যার ভিভ রিচার্ডসের ব্যাট থেকে শূন্যে উড়তে থাকা একটি ক্যাচ ধরতে পেছনে দৌড় দেন কপিল। সফল সেই চেষ্টায় রিচার্ডসের ইনিংস থামে ৩৩ রানে, আর তাতেই ৪৩ রানের জয়ে ভারত চ্যাম্পিয়নের মুকুট নিশ্চিত করে। ওই সময় উইজডেন ক্রিকেট মান্থলি পত্রিকার সম্পাদক ডেভিড ফ্রিথ বলেছিলেন, ‘আমাকে এমন একজন ব্যক্তি দেখাও যে কপিল দেবের ভারতকে ১৯৮৩ বিশ্বকাপ জেতার সুযোগ দেবে এবং আমি দেখিয়ে দেব সে একজন মিথ্যাবাদী এবং সুবিধাভোগী।’
ভারত ‘আন্ডারডগ’ দল হিসেবে সেবার বিশ্বকাপে অংশ নিয়েছিল, তবে কপিল দেবের দূরদর্শী নেতৃত্ব তাদের সর্বোচ্চ সাফল্য এনে দেয়। যা ওই সময়ে অনেকের কাছেই ছিল অবিশ্বাস্য। ভারতের সেই অবিস্মরণীয় স্মৃতি নিয়ে বানানো ‘৮৩’ নামে সিনেমা বলিউড ২০২১ সালে মুক্তি দেয়।
ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম আয়োজন
১৯৮৭ সালে প্রথম কোনো বিশ্বকাপ আসর বসে ভারতীয় উপমহাদেশে। চতুর্থ সেই বিশ্বকাপ যৌথভাবে আয়োজন করে ভারত ও পাকিস্তান। সেবারই প্রথম ৫০ ওভারের ওয়ানডে টুর্নামেন্ট মাঠে গড়ায়। এর আগের তিন আসরেই আয়োজক ইংল্যান্ডের আম্পায়াররা পুরো টুর্নামেন্ট পরিচালনা করতেন। চতুর্থ আসরে প্রথম বারের মতো দায়িত্ব দেওয়া হয় নিরপেক্ষ ম্যাচ পরিচালকদের।
আরও পড়ুন
এই প্রতিযোগিতার ফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয় কলকাতার বিখ্যাত ইডেন গার্ডেন্স স্টেডিয়ামে। এর আগেই দুই সহযোগী আয়োজক দেশ ভারত-পাকিস্তান সেমিফাইনালে তাদের বিদায় নিশ্চিত করেছিল। শিরোপার মঞ্চে ওঠে অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড। যাকে বলা হয় সর্বোচ্চ প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ ফাইনাল ম্যাচগুলোর একটি। ফাইনালে ইংলিশদের ৭ রানে হারায় ক্যাঙ্গারু-বাহিনী। ৭৫ রান করে ম্যাচসেরা হন ডেভিড বুন। টুর্নামেন্টের আগে হট ফেভারিট বিবেচিত হওয়া ক্যারিবীয়রা এই আসরের গ্রুপপর্বও পেরোতে পারেনি।
পাঁচ বছর পর পঞ্চম বিশ্বকাপ
বেশকিছু উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন নিয়ে পাঁচ বছর পর মাঠে গড়ায় পঞ্চম বিশ্বকাপ আসর। সে সময় থেকে ওয়ানডেতে রঙিন জার্সি ও সাদা বলের আগমন এবং ফ্লাডলাইটের আলোয় দিবারাত্রীর ম্যাচের খেলা শুরু হয়। একইসঙ্গে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারও বাড়ে ক্রিকেটে। প্রথমবারের মতো টিভি রিপ্লে এবং রান-আউটের সিদ্ধান্ত নিতে ম্যাচে থার্ড আম্পায়ারের সংযুক্তি আনা হয়।
এছাড়া গৃহযুদ্ধ শেষে আবারও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরে দক্ষিণ আফ্রিকা। ফলে টুর্নামেন্টে প্রতিযোগী দেশের সংখ্যা বেড়ে ৯-এ উন্নীত হয়। ১৯৯২ বিশ্বকাপের প্রথম বৃষ্টি আইনের প্রয়োগ করা হয়। যেখানে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ইমরান খানের দল জয়লাভ করে ২২ রানে। তবে সেই নিয়ম নিয়ে সে সময় বেশ বিতর্ক দেখা দিয়েছিল।
বিতর্ক নিয়ে উপমহাদেশে বিশ্বকাপের ফেরা
আগেরবার যৌথভাবে বিশ্বকাপ আয়োজন করেছিল ভারত-পাকিস্তান। ১৯৯৬ আসরে তাদের সঙ্গে সহযোগী আয়োজক হিসেবে যোগ দেয় শ্রীলঙ্কা। তবে টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই সেখানে বিতর্ক হানা দেয়। বেশ কয়েকটি দেশ লঙ্কানদের মাটিতে বিশ্বকাপ খেলতে অনাগ্রহের কথা জানায়। মূলত বিশ্বকাপ শুরুর তিন সপ্তাহ আগে দেশটির সেন্ট্রাল ব্যাংকে বোমা হামলার কারণে কলম্বোয় ম্যাচ খেলেনি অস্ট্রেলিয়া ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সে কারণে আইসিসি শ্রীলঙ্কাকে দুটি পয়েন্ট দিয়ে দেয়, যা নিয়ে তারা ওঠে যায় আসরের কোয়ার্টার ফাইনালে।
এরপর মহামারির মতো আরও বিতর্ক ছড়িয়ে পড়ে টুর্নামেন্টজুড়ে। কলকাতায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ভারতের অষ্টম উইকেটের পতনের পর গ্যালারিতে ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্বাগতিক দর্শকরা। অন্যদিকে, ভারতের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে পাকিস্তানের পরাজয়ের পর কতিপয় বিক্ষুব্ধ সমর্থক ওয়াসিম আকরামের লাহোরের বাড়িতে পাথর ছুড়ে মারে। পরবর্তীতে লাহোর গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ফাইনালে নামে শ্রীলঙ্কা। যেখানে অর্জুনা রানাতুঙ্গার লঙ্কাবাহিনী ২৪২ রানতাড়া করে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার উল্লাসে মাতে।
বাংলাদেশের অভিষেক আসর—১৯৯৯
১৬ বছর পর ১৯৯৯ সালে ফের ইংলিশদের মাটিতে বিশ্বকাপ ক্রিকেট আয়োজন করা হয়। পরের বছরই সিডনিতে অলিম্পিক গেমসের নির্ধারিত সূচি ছিল, সে কারণে ক্রিকেট টুর্নামেন্টটি এগিয়ে আনা হয় এক বছর। ওই আসরে দল বেড়ে হয় ১২। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ খেলতে যায় বাংলাদেশ, জিম্বাবুয়ে, কেনিয়া ও স্কটল্যান্ড।
টপ ফেভারিট পাকিস্তান ও অস্ট্রেলিয়া মুখোমুখি হয় ১৯৯৯ আসরের ফাইনালে। মাত্র ১৩২ রানেই পাকিস্তানের ইনিংস গুটিয়ে যাওয়ায় ম্যাচটি পুরোটাই একপেশে হয়ে পড়ে। অনায়াসেই দ্বিতীয় শিরোপা ঘরে তোলে অস্ট্রেলিয়া।
দক্ষিণ আফ্রিকায় শচীনময় এক আসর
২০০৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে শচীন টেন্ডুলকার ব্যক্তিগত ৬৭৩ রানের মাইলফলক গড়েন। অন্যদিকে, নিষিদ্ধ মাদক সেবনের দায়ে কিংবদন্তি স্পিনার শেন ওয়ার্ন ওই আসরে ছিলেন নিষিদ্ধ। তাকে ছাড়াই অস্ট্রেলিয়া ভারতকে ১২৫ রানে হারিয়ে জোহান্নেসবার্গে তৃতীয়বারের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়।
ওয়েস্ট ইন্ডিজে বিতর্ক—ট্র্যাজেডি ও হতাশাপূর্ণ বিশ্বকাপ
২০০৭ আসরে গ্রুপপর্বে পাকিস্তান আয়ারল্যান্ডের কাছে তিন উইকেটে তিক্ত হারের স্বাদ পায়। এরপরই দলটির প্রোটিয়া কোচ বব উলমারের মৃতদেহ পাওয়া যায় টিম হোটেলে। পরেও তার এই মৃত্যু-রহস্যের কোনো কূলকিনারা মিলেনি।
ওই ঘটনার পর গ্যালারির স্ট্যান্ডে আয়োজকরা মিউজিক ও উদযাপনের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। তার আগে ভারতীয় রূপকথায় ট্র্যাজেডির ছোঁয়া দেয় বাংলাদেশ। গ্রুপপর্বে টাইগাররা তাদের ৫ উইকেটের ব্যবধানে পরাজিত করে। এরপর সুপার এইটে উঠতেও ব্যর্থ হয় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দু’দেশ ভারত-পাকিস্তান। ফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে ৫৩ রানে হারায় চতুর্থ শিরোপা জেতা অস্ট্রেলিয়া।
বাংলাদেশের স্মরণীয় বিশ্বকাপ আয়োজন
২০১১ সালে ভারত ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে সহযোগী দেশ হিসেবে বিশ্বকাপ আসর বসে বাংলাদেশে। যার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান এখনও সতেজ হয়ে আছে ভক্তদের মনে। আসর শেষে ঘরের মাঠে দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা উৎসব করে ভারত। মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বাধীন ভারত ঘরের মাঠে হওয়া প্রথম কোনো চ্যাম্পিয়ন দল।
এর মাধ্যমে ১২ বছরের রাজত্ব গুটিয়ে যায় অজিবাহিনীর। তারা ভারতের কাছে কোয়ার্টার ফাইনালে হেরেই দেশের বিমান ধরে। এর আগে ২০০৯ সালে পাকিস্তানে খেলতে যাওয়া শ্রীলঙ্কার টিম বাসে বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটে। যে কারণে বিশ্বকাপের আয়োজক স্বত্ব হারায় ইনজামাম-উল হকের দেশ।
আয়োজক ও ফাইনালিস্ট অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড
২০১৫ বিশ্বকাপের আয়োজন করে তাসমান সাগরপাড়ের দু’দেশ অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। তারা-ই পরে আসর শেষের চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় মুখোমুখি হয়েছিল। তবে স্বল্প রানের ম্যাচটিতে একপেশে জয় তুলে নেয় সর্বোচ্চ পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া।
সেবার প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে দ্বিশতকের রেকর্ড গড়েন কিউই ওপেনার মার্টিন গাপটিল। কোয়ার্টার ফাইনালে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে তিনি ২৩৭ রানের অবিশ্বাস্য এক ইনিংস খেলেন।
সুপার ওভারে জিতে ইংলিশদের প্রথম শিরোপা
২০১৯ বিশ্বকাপ আসর বসেছিল ইংল্যান্ড এন্ড ওয়েলসে। আসরটির ফাইনাল ছিল ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ ও দীর্ঘতম ম্যাচগুলোর একটি। নিউজিল্যান্ড ও ইংল্যান্ডের মধ্যকার ফাইনাল গড়ায় সুপার ওভারে। এরপর সেই ওভারটিও টাই হয়ে যায়। ফল নির্ধারণ করা হয় বাউন্ডারির হিসাবে।
ইংলিশরা বাউন্ডারির সংখ্যায় প্রথম কোনো বিশ্বকাপ শিরোপা জেতার সৌভাগ্য অর্জন করে। অজি পেসার মিচেল স্টার্ক টুর্নামেন্ট সর্বোচ্চ ২৭টি উইকেট শিকার করেন আসরটিতে।
এএইচএস