বিশ্বকাপের ক্ষণ গণনা প্রায় শেষ পর্যায়ে। আগামীকাল (৫ অক্টোবর) পর্দা উঠতে যাচ্ছে ত্রয়োদশ ওয়ানডে বিশ্বকাপ আসরের। অবশ্য অনেক আগে থেকেই আইসিসির এই মেগা আসর নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী দিয়ে আসছেন কিংবদন্তি ক্রিকেটাররা। কেউবা ফাইনালিস্ট-সেমিফাইনালিস্ট দল আবার কেউ দিচ্ছেন সম্ভাব্য সেরা খেলোয়াড়ের তালিকা। এবার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত-পাকিস্তানের সম্মিলিত একটি একাদশ নিয়ে হাজির হয়েছেন কিংবদন্তি ক্রিকেটার ওয়াসিম আকরাম। 

তবে এই একাদশ আসন্ন বিশ্বকাপের জন্য নয়। দুই দেশের সর্বকালের সেরা খেলোয়াড়দের নিয়ে আকরাম পছন্দের এই একাদশ বানিয়েছেন। যেখানে পাঁচ পাকিস্তানি ক্রিকেটারের সঙ্গে আছেন ছয়জন ভারতীয়। তবে স্বপ্নের একাদশে নিজেকে রাখেননি ওয়াসিম আকরাম। 

দলটির নেতৃত্বভার দিয়েছেন স্বদেশি বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ইমরান খানকে। ১৯৯২ আসরে তার অধীনেই তো সবাইকে চমকে দিয়ে বিশ্বকাপ জিতেছিল পাকিস্তান। সাত নম্বরে আকরাম রেখেছেন আরেক বিশ্বজয়ী অধিনায়ক ও অলরাউন্ডার কপিল দেবকে। আশির দশকে একে অপরের সঙ্গে লড়তেন ইমরান-কপিল। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই কিংবদন্তি খেলোয়াড়কে আকরাম একই দলে মিলিয়ে দিলেন।

‘সুলতান অব সুইং’ খ্যাত আকরামের পছন্দের একাদশে ওপেনার হিসেবে রয়েছেন সাঈদ আনোয়ার ও বীরেন্দর শেবাগ। ১৯৯০ দশকে স্টাইলিস্ট ওপেনার হিসেবে পাকিস্তানের আনোয়ারের খ্যাতি ছিল বিশ্বজোড়া। সে সময় সেঞ্চুরির দিক থেকে শচীন টেন্ডুলকারের সঙ্গেও পাল্লা দিয়েছেন এ বাঁ-হাতি। নিজের দিনে একাই শেষ করে দিতে পারতেন যেকোনো বিশ্বসেরা বোলিং লাইনআপকে। ভারতের বিপক্ষেই চেন্নাইয়ে বিশ্বরেকর্ড গড়ে খেলেছিলেন সে সময়ের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ১৯৪ রানের অবিশ্বাস্য এক ইনিংস। ব্যাট হাতে ওপেনিংয়ে ঝড় তুলতে সিদ্ধহস্ত ছিলেন শেবাগ। ওপেনিংয়ে আনোয়ার-শেবাগ জুটি কী ভয়ঙ্কর হতে পারে— ক্রিকেটভক্ত মাত্র-ই সেই ধারণা রাখেন।

ওয়ান-ডাউনে আকরাম রেখেছেন লিটল মাস্টার শচীন টেন্ডুলকারকে। অনেকের চোখে সর্বকালের সেরা ব্যাটার শচীন ৪৬৩ ওয়ানডেতে ৪৪.৮০ গড়ে করেছেন ১৮ হাজার ৪২৬ রান। যেখানে ৪৯টি সেঞ্চুরির সঙ্গে আছে ৯৬টি ফিফটি। চার নম্বরে আকরামের পছন্দ পাকিস্তান ক্রিকেটের ‘বড়ে মিঁয়া’খ্যাত জাভেদ মিঁয়াদাদ। পাকিস্তানের সর্বকালের অন্যতম সেরা ব্যাটার হিসেবে বিবেচনা করা হয় তাকে। অস্ট্রেল-এশিয়া কাপে মিঁয়াদাদ ভারতের বিপক্ষে শেষ বলে ছক্কা মেরে ম্যাচ জিতিয়েও অমর হয়ে আছেন। সঙ্গে স্লেজিংয়েও প্রতিপক্ষকে অস্বস্তিতে ফেলতেন এই মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যান।

এ যুগের কিংবদন্তি বিরাট কোহলিকে ৫ নম্বরে রেখেছেন আকরাম। বর্তমান সময়ের অন্যতম সেরা এ ব্যাটার মাঝের কিছু সময় বাদ দিলে অনেকদিন থেকেই রানমেশিন। ২০১১ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপ জেতা দলের সদস্য খেলবেন এবারও। অলরাউন্ডার হিসেবে আকরাম রেখেছেন নিজের সাবেক অধিনায়ক এবং কিংবদন্তি ইমরান খানকে। উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান হিসেবে আকরামের পছন্দ আরেক বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক—ভারতের মহেন্দ্র সিং ধোনি। তার নেতৃত্বে ২০১১ বিশ্বকাপে শিরোপা জিতেছিল ভারত। অনেকের কাছে ধোনি ভারতের সর্বকালের সেরা অধিনায়কও।

একমাত্র স্পিনার হিসেবে আকরামের স্বপ্নের দলে জায়গা পেয়েছেন সাকলায়েন মুশতাক। ‘দুসরা’র জনক সাকলায়েন নিজের সময়ের অন্যতম সেরা স্পিনার ছিলেন । আকরামের একাদশে পেস জুটি হিসেবে আছেন জসপ্রীত বুমরাহ ও ওয়াকার ইউনিস। বুমরাহ বর্তমান সময়ের বিধ্বংসী ফাস্ট বোলারদের একজন। আর ওয়াকার ছিলেন তার সময়ের অন্যতম সেরা। ‘টু ডব্লিউস’ নামে আকরামের সঙ্গে তার বোলিং জুটি পরিচিত ছিল।

আকরামের ভারত-পাকিস্তান একাদশ

সাঈদ আনোয়ার, বীরেন্দর শেবাগ, শচীন টেন্ডুলকার, জাভেদ মিঁয়াদাদ, বিরাট কোহলি, ইমরান খান (অধিনায়ক), কপিল দেব, মহেন্দ্র সিং ধোনি, সাকলায়েন মুশতাক, জসপ্রীত বুমরাহ, ওয়াকার ইউনিস।

এএইচএস