এশিয়া কাপের দুই দেখায় বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুবারই পরাজিত হয়েছিল। সুপার ফোরের ম্যাচে সাকিব আল হাসানের দল লড়াই জমিয়ে তুললেও শেষ পর্যন্ত জিততে পারেনি। এবার নিয়মিত অধিনায়ককে ছাড়াই বিশ্বকাপের ওয়ার্ম-আপে লঙ্কানদের মুখোমুখি বাংলাদেশ। ফুটবল নিয়ে অনুশীলনের সময় পায়ে চোট পেয়েছেন সাকিব। তার অনুপস্থিতিতে ম্যাচের শুরুতে বেশ চড়াও ছিলেন লঙ্কান ব্যাটাররা। পরে শেখ মেহেদী-মিরাজদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে তারা বড় সংগ্রহ পায়নি। প্রথম ইনিংস শেষে দাসুন শানাকার দলের সংগ্রহ ৯ উইকেটে ২৬৩ রান।

এর আগে আজ (শুক্রবার) দুপুর আড়াইটায় গুয়াহাটিতে প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে টস জিতে শ্রীলঙ্কা। এরপর আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন অধিনায়ক শানাকা। শুরুতে ব্যাট করতে নামা লঙ্কানরা টাইগার বোলারদের ওপর বেশ চড়ি ঘুরিয়েছেন। মাত্র ১৪ ওভারেই তারা দলীয় একশ রানের সংগ্রহ পেয়ে যায়। রানের গতি দেখে মনে হয়েছিল, অনায়াসে তিনশ পার করবে শানাকার দল।

এদিন বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে খরুচে ছিলেন পেসার হাসান মাহমুদ। তিনি আক্রমণে আসলেই যেন বাউন্ডারির নেশা পেয়ে বসত লঙ্কান ব্যাটারদের। লঙ্কান ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা ও কুশল পেরেরা ৯.১ ওভারেই ৬৪ রান তোলেন। এরপর হাতের পেশীতে অস্বস্তি নিয়ে মাঠ ছাড়েন পেরেরা। তার আগে আক্রমণাত্মক মেজাজে এই বাঁ-হাতি ব্যাটার করেন ৩৪ রান (২৪ বল)। এরপর ক্রিজে আসা কুশল মেন্ডিসের সঙ্গে ওপেনার নিশাঙ্কা জুটি গড়েন ৪০ রানের। মেন্ডিসকে ফিরিয়ে বাংলাদেশের হয়ে প্রথম উইকেটের সূচনা করেন নাসুম আহমেদ। নাজমুল হোসেন শান্ত’র হাতে ক্যাচ দেওয়ার আগে এই ডানহাতি ব্যাটার ২০ রান করেন।

অন্যপ্রান্তে থাকা ইনফর্ম ব্যাটার নিশাঙ্কা ব্যক্তিগত অর্ধশতক তুলে নেন এরই মধ্যে। শেখ মেহেদীর বলে তারই হাতে ক্যাচ দেওয়ার আগে তার ব্যাটে আসে ৬৮ রান (৬৪ বল)। তার আউটের পরই নিয়মিত বিরতিতে আরও দুই উইকেট হারায় লঙ্কানরা। সাম্প্রতিক সময়ে বেশ ধারাবাহিক সাদিরা সামারাবিক্রমা এদিন মাত্র ২ রানেই ফিরেন, তিনি মেহেদীর শিকার। টাইগার এই স্পিনারের বলে এরপর চারিথ আসালাঙ্কাও ফেরেন ১৪ রানে। ফলে তাদের রানের চাকা ধীরগতির হয়ে পড়ে।

সাকিবের অনুপস্থিতিতে ম্যাচে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। পুরো ম্যাচজুড়ে তার বলে অস্বস্তিতে ছিলেন লঙ্কান ব্যাটাররা। যে কারণে চাপে পড়ে তাদের উইকেট পড়েছে নিয়মিত বিরতিতে। সর্বশেষ এশিয়া কাপেও রানখরায় ভোগা লঙ্কান অধিনায়ক শানাকা এদিন মাত্র ৩ রানে শরীফুলের বলে ক্যাচ আউট হয়েছেন। এরপর ইনিংস বড় করার চেষ্টা চালান ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ও দিমুথ করুণারত্নে। করুণারত্নে (১৮ রান) আউট হতেই ২১৮ রানে ৬ উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা।

এরপর ডি সিলভার অর্ধশতকের সুবাদে আড়াইশ রান পেরোয় তারা। মাঝে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ দুটি রান-আউটে বড় অবদান রাখেন। করুণারত্নকে তিনি আউট করেন সরাসরি থ্রোতে স্টাম্প ভেঙে দিয়ে। এরপর আর কোনো লঙ্কান ব্যাটার বলার মতো রান পাননি। পেরেরা আগেই রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়ায় ৪৯.১ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে গুটিয়ে যায় তাদের ইনিংস। 

বাংলাদেশের হয়ে ৯ ওভারে ৩৪ রানে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নিয়েছেন শেখ মেহেদী। সবচেয়ে সাশ্রয়ী বোলিং করা মিরাজ ১০ ওভারে ৩২ রানে নেন এক উইকেট। এছাড়া শরীফুল, নাসুম ও তানজিম সাকিব একটি করে শিকার করেছেন।

এএইচএস