আরও একবার উত্তাল দেশের ক্রিকেটপাড়া। জয়-পরাজয় কিংবা মাইলফলক না, এবারের আলোচনার বিষয়বস্তু তামিম ইকবাল। জুলাই মাসে আকস্মিক অবসরের ঘোষণা দিয়ে খবরের শিরোনাম হয়েছিলেন তিনি। সেবার ২৮ ঘন্টার ব্যবধানে ফিরে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে। এবার তামিম অবশ্য পাশে পাচ্ছেন না তেমন কাউকে। তাকে ছাড়াই বিশ্বকাপ মিশনে গিয়েছে বাংলাদেশ। 

তামিম কেন বিশ্বকাপে নেই, কোন পরিস্থিতিতে তিনি দলের সঙ্গে বিশ্বকাপে যেতে চাননি সে কথা পরিষ্কার করেছেন নিজের ফেসবুকে প্রকাশিত এক ভিডিওবার্তায়। ১২ মিনিটের সেই ভিডিওর শেষে তামিম অনুরোধ করেছেন, তাকে যেন ভুলে যাওয়া না হয়। কিন্তু তামিম কি জানেন, তাকে ভুলে যাওয়ার সাধ্য বাংলাদেশের ক্রিকেটের নেই। 

আরও পড়ুন>> নোংরামির মধ্যে দলে থাকতে চাইনি : তামিম

২০০৭ বিশ্বকাপে জহির খানের বিপক্ষে ডাউন দ্য় উইকেটে তার সেই ছয় সম্ভবত দেশের ক্রিকেটেই নতুন এক যুগের সূচনা করেছে। যেখান থেকে নির্ভয় ক্রিকেটের শুরু করেছিল বাংলাদেশ। ২০১০ সালে লর্ডসে বলে-কয়ে সেঞ্চুরি। অনার্স বোর্ডে নাম লেখানোর সেই অনন্য উদযাপন। কিংবা ২০১২ সালে চার ম্যাচে চার অর্ধশতক। ২০১৮ সালে ভাঙা হাতে ব্যাটিং করতে নামা… তামিম ইকবালকে ভুলে যাওয়ার সাধ্য কই। 

এতো গেল কেবল ঘটনা কিংবা মুহূর্তের কথা। পরিসংখ্যানের পাতা ওল্টালে তামিমকে বাংলাদেশের ক্রিকেট থেকে ভুলে যাওয়া আরও বেশি কষ্টকর। দেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি রানের মালিক (১৫ হাজার ১৯২ রান) চট্টগ্রামের এই লোকাল হিরো। তিন ফরম্যাটেই সবার ওপরে আছেন তিনি। বাংলাদেশের হয়ে সব ফরম্যাটেই সেঞ্চুরি করা একমাত্র খেলোয়াড় তিনি।   

নিজের শেষ ম্যাচে খেলতে নেমেও রেকর্ডবুকে নাম লিখিয়েছিলেন তামিম। প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটার হিসেবে ওয়ানডে ক্রিকেটে ঘরের মাঠে চার হাজার ওয়ানডে রান স্পর্শ করেছেন। আর এক স্টেডিয়ামে সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ড আগে থেকেই তামিমের দখলে আছে (২ হাজার ৮৯৭)। 

আবার ক্রিকেটের তিন ফরম্যাট মিলিয়ে মিরপুরের হোম অফ ক্রিকেটে তামিমের রান ৪ হাজার ৫২৯। এক মাঠে সর্বোচ্চ রানের বিচারে যা পুরো বিশ্বে তৃতীয় সর্বোচ্চ। 

বাংলাদেশ তো বটেই, বিশ্ব ক্রিকেটেও বেশকিছু রেকর্ড গড়েছেন এই বাঁ-হাতি ওপেনার। ওয়ানডে ফরম্যাটে একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে ৫ হাজার রান এবং ৫০টি ফিল্ডিং ডিসমিসালের একমাত্র রেকর্ড আছে তামিম ইকবাল খানের। 

ওয়ানডে ফরম্যাটে আরও এক রেকর্ডেও আছে তামিমের নাম। ওপেনিং জুটিতে সবচেয়ে বড় পার্টনারশিপের ক্ষেত্রে তামিম আছেন তৃতীয় অবস্থানে। মাশরাফির বিদায়ী ম্যাচে লিটনের সঙ্গে তিনি ২৯২ রানের জুটি গড়েছিলেন। যেকোনো উইকেটে সর্বোচ্চ পার্টনারশিপের ক্ষেত্রে এই জুটি আছে তালিকার ষষ্ঠ স্থানে। 

অন্তত ৫০০ রান করা ব্যাটসম্যানদের মধ্যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের সেরা ব্যাটিং গড় তামিমের, ৩৫ দশমিক ৩৯।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি বাউন্ডারি এসেছে তামিমের ব্যাট থেকে। ১ হাজার ৭৬০ টি চার মেরেছেন তিনি। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের হয়ে ছক্কা মেরে সেঞ্চুরি করা একমাত্র ব্যাটারও তামিম। এই সংস্করণে ১০৩টি ছক্কা তার। টেস্টেও সবচেয়ে বেশি ৪১ ছক্কা মেরেছেন তিনি। তিন সংস্করণ মিলিয়ে দেশের রেকর্ড ১৮৮ ছক্কা তার। ১৬৬ ছক্কা মেরে দুইয়ে মাহমুদউল্লাহ।

জেএ