বাংলাদেশ - ২৬৫/৮ (৫০.০ ওভার)

ভারত - ২৫৯/১০ (৪৯.৫ ওভার)

ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের সান্ত্বনার জয়

ভারতকে ২৬৫ রানের টার্গেট দিয়ে আগেই লড়াইয়ের ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু মাঝপথে গলার কাঁটা হয়ে উঠেন শুভমান গিল। তিনি তুলে নেন ব্যক্তিগত সেঞ্চুরি। এরপর বাকি গল্পটা কেবলই টাইগার বোলারদের। শেষ পর্যন্ত ৬ রান দূরত্বে ভারতকে গুটিয়ে দিয়েছে।

‘গলার কাটা’ গিলকে সরালেন মেহেদী

বাংলাদেশের গলার কাটা হয়ে উঠছিলেন শুভমান গিল। অন্যপ্রান্তে সতীর্থদের যাওয়া-আসা দেখলেও একপ্রান্তে তিনি অটল ছিলেন। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে বোলারদের ওপর চড়াও হচ্ছিলেন গিল। আগের বলেও শেখ মেহেদীর বলে লেগ সাইডে বিশাল ছক্কা হাঁকান।

ঠিক পরের বলে আবারও সেই চেষ্টা করবেন, এটা ভেবেই মেহেদী কৌশল খাটিয়ে দিলেন অফ স্টাম্পের অনেক বাইরে। এবার স্ট্রেইট ব্যাট চালিয়ে বাউন্ডারিতে হৃদয়ের হাতে ধরা শুভমান গিল। ১৩৩ বলে ১২১ রান করেছেন তিনি।

জাদেজার স্টাম্প ভাঙলেন মুস্তাফিজ, গিলের সেঞ্চুরি

বলটা ছিল কিছুটা শর্ট লেংন্থের। মুস্তাফিজের ওপর চড়াও হতে গিয়ে সেই বলের লাইন মিস করে গেছেন রবীন্দ্র জাদেজা। আর তাতেই ভারতীয় অলরাউন্ডারের মিডল স্টাম্প উড়ে গেল। ১২ বলে ৭ রান করেই ফিরেছেন জাদেজা। ৬ উইকেটে ভারতের সংগ্রহ ১৭১ রান।

অন্যপ্রান্তে একা লড়াই করতে থাকা গিল নিজের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন। ম্যাজিক ফিগার ছুঁতে তিনি খেলেছেন ১১৬ বল। 

সূর্যের স্টাম্প ভেঙে সাকিবের বেকথ্রু

বেশ কয়েকবার আউটের সম্ভাবনা জাগিয়েও উইকেটের দেখা পাচ্ছিলেন না টাইগার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ফলে বড় জুটি গড়ে ভারতকে জয়ের দিকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন শুভমান গিল ও সূর্যকুমার যাদব। ধারাবাহিকভাবে সুইপ শট খেলার চেষ্টা করছিলেন সূর্য। সেটারই সুযোগ নিলেন সাকিব।

লেংন্থে ফেলা মিডল-অফ স্টাম্পের মাঝামাঝি বলটা মিস করে যান সূর্য। আর তাতেই ২৬ রান (৩৪ বল) করা ডানহাতি এই ব্যাটারের স্টাম্প উড়ে গেল। ১৩৯ রানে পঞ্চম উইকেট হারাল ভারত।

ইশানকে ফেরালেন মিরাজ, দিশেহারা ভারত

উইকেটে এসেই রানের জন্য হাস-ফাস করছিলেন ইশান কিষাণ। বাউন্ডারির জন্য মিরাজকে রিভার্স সুইপের অপশন বেছে নিয়েছিলেন তিনি। ব্যর্থ হলো সেটি। আম্পায়ার রিচার্ড ইলিংওর্থ এলবিডব্লিউ দেন, সেটি রিভিউও করেন ইশান। তবে বল ট্র্যাকিং দেখানোর আগেই হাঁটা ধরেন। ফেরার অপশন খুঁজে পাননি আর। ১০০ রান তোলার আগেই টপ অর্ডারের চার উইকেট হারিয়ে কিছুটা হলেও চাপে ভারত।

শামীমের দুর্দান্ত ক্যাচে আটকে গেলেন রাহুল

উইকেটে এসে শুরু থেকেই ভুগছিলেন লোকেশ রাহুল। একও পাশে গিল সাবলীল থাকলেও রাহুল যেন খোলসবন্দি ছিলেন। শেষ পর্যন্ত খোলস ছেড়ে বেরিয়ে এসে বড় শট খেলতে গিয়ে ধরা পড়েন। আর আঁটসাঁট বোলিংয়ের পুরস্কার পেলেন শেখ মেহেদী। রাহুল থেমেছেন ৩৯ বলে ১৯ রানে। রানের গতি বাড়াতে গিয়ে ধরা পড়লেন মিডউইকেটে।

তিলককে বোকা বানালেন সাকিব

সর্বশেষ দুই জনের দেখা হয়েছিল অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে। ২০২০ সালের পর এবার আরও একবার সাকিবের সামনে তিলক ভার্মা। সেবার পারেননি এই টপ অর্ডার ব্যাটার, আর এবারও প্রতিশোধ নেওয়া হয়নি। উল্টো আরও একবার সাকিবের সামনে অসহায় আত্মসমপর্ণ করলেন তিলক। সাকিবের অফ স্টাম্পের বাইরের বল ছেড়ে দিয়ে বোল্ড হয়েছেন। 

প্রথম ওভারেই রোহিতকে ফেরালেন সাকিব

অভিষিক্ত তানজিম সাকিবের হাতে প্রথম ওভারেই বল তুলে দেন সাকিব আল হাসান। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বল হাতে সাকিবের শুরুটা হল ওয়াইড দিয়ে। তবে ফিরতে খব বেশি সময় নেওনি। ওভারের দ্বিতীয় বৈধ ডেলীভারীতেই উইকেটের দেখা পেলেন। রোহিত শর্মা কভার ড্রাইভ করতে গিয়ে পয়েন্টে ধরা পড়েন। ভারত অধিনায়ককে ফিরিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে উইকেটের খাতা খুলেছেন তানজিম সাকিব।

লড়াইয়ের পুঁজি পেল বাংলাদেশ

পুরো আসর জুড়েই টপ অর্ডার ব্যর্থতায় ভুগেছে বাংলাদেশ। ব্যাতিক্রম কিছু হয়নি শেষ ম্যাচেও। লিটন-তামিমদের বাজে শুরুর পর অবশ্য দলের হাল ধরেন মিডল অর্ডার ব্যাটাররা। বিশেষ করে সাকিব-হৃদয়। এই দুই জনের ফিফটিতে ভারতের বিপক্ষে লড়াই করার পুঁজি পেল বাংলাদেশ। 

সাকিব-হৃদয়ের ব্যাটে লড়াইয়ের পুঁজি পেল বাংলাদেশ

টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৬৫ রান তুলেছে বাংলাদেশ। দলে হয়ে সর্বোচ্চ ৮০ রান এসেছে সাকিব আল হাসানের ব্যাট থেকে। 

ফিফটি হাতছাড়া করলেন নাসুম

নাসুমের চোখেমুখে হতাশাটা স্পষ্ট। ড্রাইভ করতে চেয়েছিলেন, তবে সে লেংথে ছিল না ঠিক বলটি। ইনসাইড-এজে লেগে মাটিতে পড়ার পর গিয়ে লেগ স্টাম্পে আঘাত করেছে প্রসিধ কৃষ্ণার বলটি। ৪৫ রানেই শেষ হলো নাসুমের লড়াই। ৪৪ রানেই থামল মেহেদীর সঙ্গে তাঁর অষ্টম উইকেট জুটি।

ফিফটির পর ফিরলেন হৃদয়

আসরের শুরুটা ভালো হয়নি হৃদয়ের। টানা তিন ম্যাচে ছিলেন ব্যর্থ। তবে শেষটা রানে রাঙাচ্ছেন এই টপ অর্ডার ব্যাটার। গত ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দলের হয়ে একাই লড়াই করেছিলেন। হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন। এবার আরও একবার এই মাইলফলক ছুঁলেন তিনি। তাতে খরচ করেছেন ৭৭ বল। অবশ্য ফিফটির পর আর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ৪২তম ওভারে শামিকে পুল করতে গিয়ে বাউন্ডারির কাছে ক্যাচ দিয়েছেন হৃদয়। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৮১ বলে ৫৪ রান। 

সাকিবের পর ফিরলেন শামীমও

পঞ্চম উইকেটে হৃদয়কে নিয়ে বড় সংগ্রহের পথেই এগোচ্ছিলেন সাকিব। জুটিতে শরান পেরিয়ে ব্যাক্তিগত সেঞ্চুরির পথে হাঁট ছিলেন সাকিব। তবে ৮০ রানে বাংলাদেশ অধিনায়ককে থামালেন শার্দুল ঠাকুর। এই পেসারের বলে বোল্ড হয়েছেন সাকিব। এর আগে দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ৮৫ বলে করেছেন ৮০ রান।

সাকিব ফেরার পর শামিম উইকেটে আসেন। বলা যায়, এলেন আর গেলেন। মাঝের সময়টুকুতে ৫ বল খেলে করেছেন ১ রান। জাদেজার ফ্লাইট মিস করে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়া এই ব্যাটার আছেন বাজে ফর্মের মধ্যে। আজ সুযোগ ছিল আরও একবার ফেরার। তবে পারেননি। উল্টো দলকে অলআউটের শঙ্কায় ফেলেছেন।

সাকিবের ফিফটি

টপ চার ব্যাটারের দ্রুত বিদায়ে বেশ বিপদে পড়েছিল দল। সেখান থেকে টেনে তুললেন সাকিব। যাকে বলে, সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া। উইকেটে এসে দেখে-শুনে ঠান্ডা মাথায় ইনিংস গড়েছেন। ইতোমধ্যেই তুলে নিয়েছেন ব্যাক্তিগত অর্ধশতক। এই মাইলফলকে পৌঁছাতে খেলেছেন ৬৫ বল।

দুই জীবনেও ব্যর্থ মিরাজ

দশম ওভারে শার্দুল ঠাকুরকে ফুললেংথ থেকে ফ্লিক করেছিলেন মিরাজ। সরাসরি ক্যাচ গিয়েছিল মিডউইকেটে থাকা অভিষিক্ত তিলকের কাছে। তার বাড়িয়ে দেওয়া হাতে পড়েছিল ক্যাচটি, তিলক রাখতে পারেননি সেটি। একই ওভারে, একই ব্যাটারের ফেলেছেন সূর্যকুমার যাদবও। অফ স্টাম্পের বাইরের লেংথ বলে জোরের ওপর পাঞ্চ করতে চেয়েছিলেন মিরাজ। দ্বিতীয় স্লিপে থাকা সূর্যকুমার একটু ঝুঁকে ছিলেন। মাথার ওপরে হাত নিয়ে অবশ্য বলের নাগাল পেয়েছিলেন ভালোভাবেই। রাখতে পারেননি। ৩ ও ৫ রানে দুটি জীবন পান মিরাজ। তবে আনলাকি থার্টিনে গিয়ে ঠিকই ধরা পড়েছেন এই ব্যাটার। এবার আর জীবন পাননি। আক্ষর প্যাটেলকে খেলতে গিয়ে স্লিপে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি।

পারলেন না বিজয়ও, বিপর্যয়ে বাংলাদেশ

দীর্ঘদিন পর জাতীয় দলে ফিরে সুযোগ হয়েছিল একাদশেও। কিন্তু সেটার সিকি ভাগও কাজে লাগাতে পারলেন না এনামুল হক বিজয়। দ্রুত দুই উইকেট হারিয়ে দল যখন ধুঁকছে তখন দলের বিপদ আরও বাড়িয়েছেন এই টপ অর্ডার ব্যাটার। ১১ বলে ৪ রান করে আউট হয়েছেন তিনি। ফলে ২৮ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়েছে টাইগাররা।

আবারও ব্যর্থ তামিম

 অভিষেকে গোল্ডেন ডাকের দুঃস্মৃতি ভুলে শুরুটা ভালোই পেয়েছিলেন তানজিদ তামিম। শার্দুল ঠাকুরের পরপর দুই বলে দারুণ দুটি চেক শটে কাভার ও মিড অফের মাঝ দিয়ে দুটি চার মেরেছিলেন। কিন্তু পরের ওভারে বোল্ড তিনি। ক্রস সিম ডেলিভারি ছিল। যতটা ভেবেছিলেন, ততটা গতি ছিল না। পুল শটে ইনসাইড-এজে বোল্ড হয়েছেন তামিম। সাজঘরে ফেরার আগে ১২ বলে করেছেন ১৩ রান।

ডাক খেলেন লিটন

জ্বর থেকে সেরে ওঠে তিন ম্যাচ খেলে ফেলেছেন লিটন দাস। কিন্তু এখনো স্বরূপে ফিরতে পারেননি। আগের দুই ম্যাচে ব্যর্থতার পর আজ তার সামনে সুযোগ ছিল ঘুরে দাঁড়ানোর। কিন্তু সেটা খানিকটা পায়ে ঠেললেন এই ওপেনার। শামির ইন সুইংয়ে বোকা বনে বোল্ড হয়েছেন। খুলতে পারেননি রানের খাতা। ফলে বাংলাদেশের শুরুটাও ভালো হলো না।

৫ পরিবর্তন নিয়ে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ

টাইগারদের বিপক্ষে পাঁচ পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নেমেছে ভারত। বাংলাদেশের একাদশেও এসেছে একাধিক পরিবর্তন। একাদশে ফিরেছেন এনামুল হক বিজয়, তানজিদ হাসান তামিম, শেখ মেহেদি, মুস্তাফিজুর রহমান। তাছাড়া অভিষেক হচ্ছে তানজিম হাসান সাকিবের।

বাংলাদেশ একাদশ- সাকিব আল হাসান, লিটন দাস, তানজিদ হাসান তামিম, তাওহীদ হৃদয়, এনামুল হক বিজয়, শামীম হোসেন, মেহেদি হাসান মিরাজ, শেখ মেহেদি, মুস্তাফিজুর রহমান, নাসুম আহমেদ, তানজিম হাসান সাকিব।

ভারত একাদশ- রোহিত শর্মা, শুবমান গিল, সূর্যকুমার যাদব, তিলক ভার্মা, লোকেশ রাহুল, ইশান কিষান, রবীন্দ্র জাদেজা, অক্ষর প্যাটেল, শার্দুল ঠাকুর, মোহাম্মদ শামি ও প্রসিদ্ধ কৃঞ্চা।

এইচজেএস/এএইচএস