এশিয়া কাপে সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ দলের প্রতিপক্ষ ছিল পাকিস্তান। সেই ম্যাচে বাবর আজমের দল টাইগারদের বড় ব্যবধানে পরাজিত করেছিল। যা তাদের জন্য চলমান এশিয়া কাপের ফাইনালে ওঠা অনেকটাই কঠিন করে তুলেছে। তবে সেসব ভুলে সুপার ফোরের দ্বিতীয় ম্যাচে আগামীকাল (শনিবার) শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে লড়বে সাকিব আল হাসানের দল। ফাইনালের লড়াইয়ে টিকে থাকতে এই ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই তাদের।

কলোম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে কাল বাংলাদেশ সময় দুপুর সাড়ে ৩টায় মাঠে নামবে দুই দল। অবশ্য মূল লড়াইয়ে নামার আগে ওই ভেন্যুতে আজ অনুশীলন করেছে টাইগাররা। অনুশীলন শেষে দলের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে হেরেছিল বাংলাদেশ দল। পাকিস্তান ম্যাচের মতো সেদিনও টাইগারদের শোচনীয় ব্যাটিং বিপর্যয় দেখা গিয়েছিল। তবে আগামীকালের ম্যাচে ভালো চ্যালেঞ্জের কথা বলছেন হাথুরু, ‘আমার মনে হয় না এখানে কন্ডিশন বা প্রতিপক্ষের খুব বেশি ব্যাপার আছে। আমরা দেশের বাইরে খেলছি, দুই দেশেই আলাদা কন্ডিশন। আমাদের জন্য ভালো চ্যালেঞ্জ, এটাকে কাটিয়ে উঠতে হবে আমাদের।’

আরও পড়ুন >> সাকিবের অধিনায়কত্ব নিয়ে কথা বলে বিতর্ক চান না তামিম

এছাড়া ম্যাচের উইকেট নিয়ে হাথুরু বলেন, ‘আমরা এখনও সিদ্ধান্ত নিইনি কারা ওপেন করবে। কাল এসে সিদ্ধান্ত হবে। কন্ডিশন, পিচের ওপর নির্ভর করছে। আবহাওয়ার কারণে পিচ বদলে যেতে পারে। গত কিছুদিন আবহাওয়া কেমন ছিল আমরা জানি। তাই সিদ্ধান্ত ম্যাচের আগমুহূর্তে নেওয়া হবে।’

হাথুরু আরও বলেন, ‘আমরা ঘরের বাইরে খেলছি। কন্ডিশন আমাদের অজানা। লাহোরের কন্ডিশন আর এখানকার কন্ডিশনও অনেক ভিন্ন। এটা বড় চ্যালেঞ্জ আমাদের জন্য। আমাদের ঘুরে দাঁড়াতে হবে। গত ৩ ম্যাচ ধরে ভিন্ন ভিন্ন কন্ডিশনে খেলতে হচ্ছে, ভিন্ন প্রতিপক্ষের সঙ্গে। এটা অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। তবে আমরা যা করে দেখিয়েছি, তার চেয়েও ভালো কিছু করার সামর্থ্য আমাদের আছে। কাল ভালো কিছু করার জন্য মুখিয়ে আছি।’

অন্যদিকে, সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের পেস বোলিং আক্রমণকে শক্তিশালী দাবি করে লঙ্কান কোচ ক্রিস সিলভারউড বলেন, ‘আমার মনে হয় বাংলাদেশ দারুণ একটা বোলিং ইউনিট পেয়েছে। এই প্রতিযোগিতায় এখন পর্যন্ত যা দেখেছি তাই মনে হয়েছে। আমি তাদের বোলিংয়ে মুগ্ধ হয়েছি, বিশেষ করে পেস বোলারদের দেখে। তারা বড় মাপের পেসার, তারা শক্তিশালী, তারা অ্যাকুরেট এবং তারা মুভমেন্ট পাচ্ছে। আমাদের এটা নিশ্চিত করতে হবে আমরা ভালোভাবে প্রস্তুত আছি এবং এটা নিশ্চিত করতে হবে আমাদের দলের প্রত্যেক ব্যাটা কিভাবে তাদের দলের প্রত্যেক বোলারকে কিভাবে মানিয়ে নেয়।’

মুখোমুখি দেখায় বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা

এখন পর্যন্ত ৫২ বার একে অন্যের মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা। মুখোমুখি জয়ের হিসেবে অবশ্য শ্রীলঙ্কাই এগিয়ে। এখন পর্যন্ত ৪১ ম্যাচে জয় পেয়েছে দ্বীপরাষ্ট্রটি। জয়ের হার ৭৮ দশমিক ৪৩ শতাংশ। আর বাংলাদেশের পক্ষে ফল এসেছে ৯ ম্যাচে। জয়ের হার ১৭ দশমিক ৬৪ শতাংশ।

আরও পড়ুন >> এসিসির ‘অদ্ভুত’ সিদ্ধান্তে হতাশ হাথুরু

মুখোমুখি দেখায় সর্বোচ্চ রানের হিসেবেও এগিয়ে থাকছে লঙ্কানরাই। ২০০৮ এশিয়া কাপের ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৩৫৭ রান সংগ্রহ করে লঙ্কানরা। কুমার সাঙ্গাকারার শতরানের পাশাপাশি সনাৎ জয়সুরিয়া এবং চামিরা কাপুগেদেরার অর্ধশতকে বড় সংগ্রহ পেয়েছিল লঙ্কানরা। ২০১৭ সালে কলম্বোতে প্রথম ওয়ানডেতে ৩২৪ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। তামিম ইকবালের ১২৭ রান সাকিবের অর্ধশতক বাংলাদেশকে সেই ম্যাচে জয় এনে দিয়েছিল।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের কীর্তিও বাংলাদেশের মুশফিকুর রহিমের। দুবাইয়ে ২০১৮ সালে খেলেছিলেন ১৪৪ রানের মহাকাব্যিক ইনিংস। লঙ্কানদের হয়ে রেকর্ড অবশ্য তিলেকারাত্নে দিলশানের। তার ব্যাট থেকে এসেছিল ১৬১ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস। বোলিং রেকর্ডেও এগিয়ে লঙ্কানরাই। ক্রিকেট কিংবদন্তি মুত্তিয়া মুরালিধরন উইকেট নিয়েছেন ৩১টি। বাংলাদেশের পক্ষে সবচেয়ে বেশি উইকেট সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার। দুই দলের খেলায় নড়াইল এক্সপ্রেসের ঝুলিতে আছে ২৬ উইকেট।

এসএইচ/এএইচএস