এশিয়া কাপের শুরুতে বড়সড় ধাক্কা খাওয়া বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত দাপট দেখিয়েই সুপার ফোরে উঠেছিল। যেখানে প্রথম পরীক্ষাতেই ব্যর্থ টাইগারদের ব্যাটিং লাইনআপ। অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম বাদে সেভাবে কেউই ক্রিজে থিতু হতে পারেননি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চলমান টুর্নামেন্টে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ব্যাটিংয়ে এই দশা দেখেছিল বাংলাদেশ। পরবর্তীতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে উদ্ভুত হওয়া আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ যেন আবারও পথ হারিয়েছে। 

পাকিস্তান এই ম্যাচের আগের দিনই একাদশ ঘোষণা করে দেয়। ফলে তখনই জানা গিয়েছিল তাদের বিপক্ষে খেলার চ্যালেঞ্জটা কত বড়! নতুন বলে শাহিন শাহ আফ্রিদি ও নাসিম শাহর প্রথম স্পেল যেকোনো দলের টপ অর্ডারের জন্য বিশাল হুমকি। এই দুজন উইকেট নিতে ব্যর্থ হলে হারিস রউফ তো আছেনই। বাংলাদেশের বিপক্ষে পেস বোলিংটা শক্তিশালী করতে একাদশে নেওয়া হয় ফাহিম আশরাফকেও। সেই আক্রমণভাগের সামনে বাংলাদেশের শুরুতে ব্যাটিং নেওয়া নিয়েও প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।

পাকিস্তান পেস অ্যাটাকের সামনে টাইগার ব্যাটাররা ছিলেন আজ (বুধবার) রীতিমতো অসহায়। শুরুটা মেক-শিফট ওপেনার মেহেদী হাসান মিরাজকে দিয়েই হয়েছে। আগের ম্যাচের এই সেঞ্চুরিয়ান এদিন সফট ডিসমিসাল হয়ে ফিরেছেন কোনো রান না করেই। জ্বর কাটিয়ে তিনে নামা লিটন দাস ভালো শুরুর আভাস দিয়েও ১৬ রানে বিদায় নেন।

আরও পড়ুন >> মাঠে নামার আগেই সুখবর সাকিবের

অন্যদিকে আরেক ওপেনার নাঈম শেখ এদিনও বেশ সাবলীলভাবে খেলেছেন। তবে পাক পেসারদের সামনে উইকেট বিলিয়ে দেন ব্যক্তিগত ২০ রানের মাথায়। চলমান এশিয়া কাপে ব্যাট হাতে তৃতীয়বারের মতো ব্যর্থ হয়েছেন তরুণ ক্রিকেটার তাওহীদ হৃদয়। পাক পেসার হারিস রউফের বলে তিনি ২ রানে বিদায় নেন।

পরের সময়টাতে সাকিব আল হাসান এবং মুশফিকুর রহিম বাংলাদেশকে স্বপ্ন দেখান। এই দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার মিলে দলকে বড় পুঁজির দিকেই নিয়ে যাচ্ছিলেন। তবে দলীয় ১৪৭ রানে ব্যক্তিগত ৫৩ রানে বিদায় নেন সাকিব। এরপর একপ্রান্ত আগলে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন মুশফিক, যার ধারাবাহিকতায় তিনিও অর্ধশতকের দেখা পান। যদিও সেটিকে বেশি দূর নিয়ে যেতে পারেননি মিস্টার ডিফেন্ডেবল, তিনি বিদায় নেন ৬৪ রানে।

আরও পড়ুন >> বাংলাদেশের বিপক্ষে নেমেই ‘দ্রুততম ফিফটি’ রউফের

এদিকে শামীম পাটোয়ারীর আউট হওয়ার ধরন নিয়েও চলছে সমালোচনা। ইনিংস মেরামতের দায়িত্ব পেয়েও কাজে লাগাতে পারলেন না এই ব্যাটার। অহেতুক মারমুখী মেজাজে দেখাতে গিয়েই বিদায় নেন। পরবর্তীতে আফিফ হোসেন আবারও হতাশ করেছেন, ফিরেছেন মাত্র ১২ রানে। শেষদিকে দলের টেল-এন্ডার ব্যাটারদের উইকেট পড়েছে তাসের ঘরের মতো। ফলে বাংলাদেশ মাত্র ১৯৩ রানেই থামে।

তার আগে মুশফিক-আফিফদের আউট হওয়ার ধরনও ছিল বেখেয়ালী! যথেষ্ট ওভার বাকি থাকা সত্ত্বেও অপ্রয়োজনীয় শট খেলেছেন এসব টাইগার ব্যাটার। বাংলাদেশের যখন প্রথম ইনিংস শেষ হয়, তখনও বাকি ছিল ১১.২ ওভার।

রীতিমত আরেকটি ব্যাটিং ব্যর্থতার মিছিলেরই প্রদর্শনী হয়েছে। এই দায়টা আসলে কার, সমস্যাটা কোথায়? আগের ম্যাচে ধারাবাহিক হয়ে ওঠার ইঙ্গিত দিয়েও কেন ফের দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় দিলেন ব্যাটাররা। দ্রুত এমন অবস্থা থেকে ফিরতে না পারলে আসন্ন বিশ্বকাপে ভালো কিছুর স্বপ্ন দেখাটাও কঠিন হয়ে উঠবে টাইগার ক্রিকেটভক্তদের জন্য।

এসএইচ/এএইচএস