পাকিস্তানের সহযোগী আয়োজক হিসেবে শ্রীলঙ্কার মাটিতে বসেছে এশিয়া কাপের আসর। ইতোমধ্যে বাংলাদেশকে হারিয়ে তারা চলমান অভিযানের শুভসূচনা করেছে। অন্যদিকে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের থাবা পড়েছে দেশটির ঘরোয়া ক্রিকেটে। সে কারণে অনেকটা আচমকা-ই শ্রীলঙ্কার সব ধরনের ঘরোয়া টুর্নামেন্ট বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে দেশটির ক্রিকেট বোর্ড (এসএলসি)। পরবর্তীতে পুনরায় টুর্নামেন্ট চালুর ক্ষমতা ক্রীড়ামন্ত্রী রোশান রানাসিংহের হাতে দেওয়া হয়েছে।

গতকাল (শুক্রবার) এক বিবৃতিতে এসএলসি জানিয়েছে, ‘বোর্ড পরিচালিত সব ধরনের ঘরোয়া টুর্নামেন্ট সাময়িকভাবে বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনদিনের চলমান মেজর ক্লাব টুর্নামেন্ট এবং ‘বি’ স্তরের তিনদিনের আমন্ত্রণমূলক ক্লাব টুর্নামেন্টও এর আওতাধীন।’ 

অবশ্য এই সমস্যা এ বছরই নতুন নয়, এর দুই বছর আগে ২০২১ সালে লঙ্কানদের ঘরোয়া ক্রিকেটের কাঠামো পুনর্গঠন নিয়ে বোর্ডে ঝামেলা শুরু হয়েছিল। সেই সূত্র ধরেই বোর্ডের সদ্য বিলুপ্ত কারিগরি উপদেষ্টা কমিটি দুই স্তরের কাঠামো বাতিল করে দুটি গ্রুপে ১৩টি করে দল নিয়ে তিনদিনের টুর্নামেন্ট আয়োজনের সুপারিশ করেছিল। এই কমিটির প্রধান ছিলেন লঙ্কান কিংবদন্তি অরবিন্দ ডি সিলভা।

এর আগে গেস্টো ক্রিকেট ক্লাব (জিসিসি) নিজেদের দাবি নিয়ে শ্রীলঙ্কার ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের কাছে হাজির হয়েছিল। সে সময় তাদের দাবি আমলে নিয়ে ক্রীড়ামন্ত্রী রানাসিংহে বিষয়টি সমাধানের দায়িত্ব দেন মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালককে। মন্ত্রীর নির্দেশে মহাপরিচালক গত ২৫ আগস্ট লঙ্কান বোর্ডকে একটি চিঠি পাঠায়। চিঠিতে লেখা ছিল, শ্রীলঙ্কার ক্রীড়া আইন অনুযায়ী, এসএলসি তাদের সংবিধানে কোনো পরিবর্তন আনতে চাইলে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিতে হবে।  

এরপর মন্ত্রণালয়ের কাছে অনুমতি চায় এলএসসি। কিন্তু মন্ত্রণালয় এখনও সাড়া না দেওয়ায় বন্ধই করে দেওয়া হলো বোর্ড পরিচালিত সব ধরনের ঘরোয়া টুর্নামেন্ট। 

ডি সিলভার নেতৃত্বাধীন কমিটির পরিকল্পনা অনুযায়ী, দুই গ্রুপের পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থাকা দুটি করে মোট চার দল প্রথম দুই বছরের জন্য অবনমিত হবে। আর তৃতীয় বছর থেকে অবনমিত হবে তিনটি করে দল। আর তেমনটা হলে শ্রীলঙ্কার শীর্ষ ঘরোয়া টুর্নামেন্টে দলের সংখ্যা নেমে আসত ১৫–তে। কমিটির ভাষ্য, এর মধ্য দিয়ে ঘরোয়া ক্রিকেট সংস্কৃতিতে প্রতিদ্বন্দ্বীতা আরও বাড়বে।

এই নিয়ম মানা হলে অবনমিত হওয়া দলগুলো আর তিনদিনের টুর্নামেন্টে অংশ নিতে পারত না। এর পরিবর্তে গভর্নরস ট্রফি নামে সীমিত ওভারের টুর্নামেন্ট খেলতে হতো তাদের। বিষয়টা আঁচ করতে পেরে অবনমিত হওয়া বেশ কয়েকটি ক্লাব কম ম্যাচ পাওয়ার ও অপেক্ষাকৃত নিম্নমানের টুর্নামেন্টে নেমে যাওয়ার অভিযোগ দিয়েছিল। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৭ জুন লঙ্কান বোর্ড জরুরি সভা ডাকে। সেখানে দুই স্তরের টুর্নামেন্টের পক্ষে-বিপক্ষে ভোট চাওয়া হয়। বোর্ড সদস্যদের অনুমোদন সাপেক্ষে ওই মাসেই তিনদিনের চলমান মেজর ক্লাব টুর্নামেন্ট এবং ‘বি’ স্তরের তিনদিনের আমন্ত্রণমূলক ক্লাব টুর্নামেন্ট শুরু হয়।

এএইচএস