বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ম্যাচ যেন নাগিন ডার্বি
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রতিপক্ষ কে। এমন এক প্রশ্নের উত্তরে অনেকেরই উত্তর সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কা অথবা ভারত। জিম্বাবুয়ের সঙ্গে প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বিতার দিন ফুরিয়েছে বহু আগেই। আফগানিস্তানের বিপক্ষে কিছু প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচ থাকলেও তাদের বিপক্ষে বাংলাদেশের মনোবল সবসময়ই তুঙ্গে। বাংলার ক্রিকেটে বড় প্রতিপক্ষ হিসেবে তাই শ্রীলঙ্কার নাম বলাই যায়।
বাংলাদেশ আর শ্রীলঙ্কা ম্যাচের আগে আরও একবার ফিরে এলো নাগিন নাচের প্রসঙ্গ। দুই দলের এবারের লড়াইকে নাগিন ডার্বি হিসেবেই দেখছেন অনেকে। কিন্তু কেন এই নাম। কেনোই বা শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচের আগে উত্তপ্ত থাকে পরিবেশ।
বিজ্ঞাপন
উত্তরটা পেতে ফিরে যেতে হবে বছরখানেক আগে। ঘটনার সূত্রপাত বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) থেকে। স্পিনার নাজমুল হাসান অপু নিজেদের ড্রেসিংরুমেই করেছিলেন নাগিন নাচের উৎসব। তাতে মন মজেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের তারকা ড্যারেন স্যামির। অপুকে বলেছিলেন, উইকেট পাওয়ার পর এটাই তার ট্রেডমার্ক করা যেতে পারে।
আরও পড়ুন: অভিষেকের অপেক্ষায় তামিম
অপু সেই কথা শুনেছেন। বিপিএল তো বটেই, জাতীয় দলে এসেছেন করেছেন নাগিন সেলিব্রেশন। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ সফরে আসে শ্রীলঙ্কা। সেই সিরিজেও এমন উদযাপন করেন অপু। আর সেটাই নকল করেন শ্রীলঙ্কান খেলোয়াড় দানুশকা গুনাথিলাকা। তিনি নিজেও উইকেট পাওয়ার পরেই শুরু করেন এই উদযাপন।
পুরো বিষয়টি তখন সহজভাবে নেননি বাংলাদেশের সিনিয়র ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম। নিজ দলের খেলোয়াড়ের প্রতি এমন আচরণ মোটেই ভালো লাগেনি তার। নিদহাস ট্রফিতে লঙ্কাবধের নায়ক ছিলেন মুশফিক। ম্যাচ শেষে যা বেশ আলোচনার জন্ম দেয়। এরপরেই নাগিন নাচ হয়ে পড়ে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ম্যাচের বড় প্রতীক।
নিদহাস ট্রফিতেও আরও একবার মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কা। মাস্টউইন সেই ম্যাচে রেফারির সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ সাকিব দলকে মাঠ ছাড়ার নির্দেশ দেন। এনিয়ে বেশ কিছুটা সময় বন্ধ থাকে ম্যাচ। শেষে অবশ্য মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের দুর্দান্ত ক্যামিওতে জয় পায় টাইগাররা। আর পুরো দলই এবার যোগ দেয় নাগিন নাচের উৎসবে।
সর্বশেষ গত বছর আরব আমিরাতে এশিয়া কাপের নকআউট ম্যাচে বাংলাদেশকে হারিয়ে লঙ্কান ড্রেসিংরুমে নাগিন ডান্স করেন আসিথা ফার্ন্দান্দো আর মহেশ থাকসিনা। আজ ফের সেই এশিয়া কাপে দু’দলের দেখা।
আজ আবার সেই দুই দলের দেখা। দুই দলের অধিনায়করা অবশ্য জানিয়েছেন, তাদের মাঝে তিক্ততা নেই। কিন্তু দলের সব সদস্যদের তাতে দমিয়ে রাখা কতখানি সম্ভব হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। আর দর্শকদের কথা তো বলাই বাহুল্য। সব ছাপিয়ে বাংলাদের আর শ্রীলঙ্কার দ্বৈরথ এখন নাগিন ডার্বি।
জেএ