বাংলাদেশ দলে যতই হাইপ্রোফাইল কোচ থাকুন না কেন, ক্রিকেটারদের দুঃসময়ে সবচেয়ে বড় ভরসার নাম সম্ভবত কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার হয়েও সাকিব আল হাসান নিয়মিত ছুটে যান প্রিয় ‘স্যার’ সালাউদ্দিনের কাছে। একই অবস্থা তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিমদের বেলায়। 

নিজের হাতে সাকিব-তামিম-মুশফিকদের মত সেরা ক্রিকেটারদের গড়ে তুলেছেন কোচ সালাউদ্দিন। তার কাজ চলছে এখনও। কাজ করছেন আরও অনেক তরুণদের নিয়ে। এদের মাঝে একজনের প্রতি অবশ্য আলাদা করে নজর রাখতেই হচ্ছে। নাম তার সানজিদ। মিরপুরের অ্যাকাডেমি মাঠে চায়নাম্যান বোলার হিসেবে আছেন তিনি। তবে আলাদা করে নজর রাখার আরেক কারণ, তিনি কোচ সালাউদ্দিনের বড় ছেলে। 

সালাউদ্দিনের নিজের সবচেয়ে প্রিয় শিষ্য সাকিব আল হাসান। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার তার গুরুর প্রিয় ছাত্র এতে অবাক হবার কিছু নেই। তবে, নিজের ছেলেকে সেই সাকিবের মত হতে দিতে চাননা এই কোচ। তার প্রত্যাশা ছেলে হবে নিখুঁত চায়নাম্যান বোলার। কিন্তু কেন এমন সিদ্ধান্ত। এর উত্তরও দিয়েছেন তিনি। 

আরও পড়ুন: ৭৫ নয়, সাকিবের জার্সি নম্বর ৬৭!

দেশের এক অনলাইন গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাতকারে প্রিয় শিষ‌্য সাকিব আল হাসানের উদাহরণ টেনে সালাউদ্দিন ছেলেকে পরামর্শ দিয়েছিলেন, ‘আমরা বসে ছিলাম। ওকে বললাম, ‘‘বাবা তুমি যদি লেফট আর্ম অর্থডক্স বল করো (সাকিবের মতো) এটাতে তুমি জীবনেও বাংলাদেশের ক্রিকেটে সাকিব আল হাসানের চেয়ে বড় ক্রিকেটার হতে পারব না। কারণ, এই রেকর্ড তুমি কোনোদিন ভাঙতে পারবা না। তার যেই মেধা, তার বোলিংয়ের যেই সামর্থ‌্য, যেভাবে খেলাটা সে ভালো বোঝে এটা দিয়ে সাকিবের রেকর্ড ভাঙা যাবে না। 

এরপরেই ছেলেকে দেখিয়ে দিলেন, নতুন কিছু করার পথটা। ‘আমার মনে হয় তোমার (সানজিদ) নতুন কিছু করতে হবে। তুমি এটা (চায়নাম‌্যান) চেষ্টা করে দেখ। যখন একেবারেই ছোট ছিল তখন না। তবে দুই তিন বছর আগে, নিজ থেকেই পরিবর্তন করল। আগে অর্থডক্স বোলারই ছিল। যদি তাকে আলাদা কিছু করতে হয় তাহলে আলাদা কিছু হতে হবে। এই কারণেই তাকে চায়নাম‌্যান বানানো।’

শুধু নিজের ছেলেকেই নয় তার কাছে কোচিংয়ে আসা তরুণদেরও একই পথ দেখান সালাউদ্দিন, ‘আমি কেবল আমার ছেলে নয়, যাকেই কোচিং করাই, আমি চাই, পরবর্তী ক্রিকেটাররা যেন সাকিব-তামিমের চেয়ে বড় হয়। যে-ই আসুক না কেন আমার কাছে কোচিংয়ে। সে পারুক আর না পারুক তাকে সেই স্বপ্নটা দেওয়া আমার দায়িত্ব এবং নৈতিক কর্তব‌্য আমি মনে করি।’

ছেলে সানজিদ কতটুকু পথ যেতে পারবে, কতটুকু সফল হবে তা নিয়ে সালাউদ্দিন মোটেও চিন্তিত নন। মনের আনন্দে বল হাতে ছুটছে সানজিদ এটাই বাবা সালাউদ্দিনের আনন্দ, ‘আমার ছেলে ক্রিকেট খেলছে সেটাই আমার কাছে আনন্দ লাগে। সে পারে কি না পারে সেটা আপাতত ভাবছি না। সে ক্রিকেট খেলছে, উপভোগ করে, এটার প্রতি প‌্যাশন আছে তাতেই আমি আনন্দিত। 

বাবা হিসেবে ছেলের এমন অবস্থানেও খুশি সালাউদ্দিন, ‘ভালো লাইনে আছে এটা বাবা হিসেবে ভালো লাগে। সে যখন ক্রিকেট বল হাতে নেয় তখন দেখতেই ভালো লাগে। কিছুদিন আগেও ছোট ছিল, এখন ব‌্যাটিং করে বোলিং করে। তার ভবিষ‌্যৎ সে পরবর্তীতে নিজে ঠিক করবে। এখন আমি তাকে দেখে আনন্দ পাচ্ছি।’

এসএইচ/জেএ