১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপ জয়ের পর থেকে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটকে চরম মাত্রার দুর্নীতি ঘিরে ধরেছে বলে অভিযোগ করেছেন দেশটির বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক অর্জুনা রানাতুঙ্গার ছোট ভাই। এক সময় রানাতুঙ্গা নিজেও দ্বীপরাষ্ট্রটির মন্ত্রী ছিলেন। বর্তমানে তার ভাই প্রসন্ন রানাতুঙ্গাও রয়েছেন নগর উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে। আজ (বৃহস্পতিবার) জাতীয় সংসদে তিনি শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট নিয়ে গুরুতর একটি অভিযোগ তুলেছেন।

ফ্রান্সের সংবাদসংস্থা এএফপি এই তথ্য জানিয়েছে। সংসদে দেওয়া বক্তব্যে লঙ্কানদের বিশ্বকাপ জয়কে ‘অভিশাপ’ বলে উল্লেখ করেন প্রসন্ন রানাতুঙ্গা। এ সময় তিনি লঙ্কান ক্রিকেট বোর্ডে ব্যাপক অর্থনৈতিক অনিয়ম চলমান রয়েছে বলে অভিযোগ করে সংস্কারের দাবি করেন।

শ্রীলঙ্কার কিংবদন্তি ক্রিকেটারের ভাই বলেন, ‘বিশ্বকাপ জয় আমাদের দেশের ক্রিকেটের জন্য সবচেয়ে বড় অভিশাপ। ১৯৯৬ সালের পর থেকে ক্রিকেট বোর্ডে ব্যাপক অর্থের প্রবাহ শুরু হয় এবং যারা চুরিতে অভ্যস্ত তারাই বোর্ডের দায়িত্বে আসেন। এরপর থেকে বিষয়টি স্বাভাবিক হয়ে গেছে।’

শ্রীলঙ্কার নগর উন্নয়ন মন্ত্রী প্রসন্ন রানাতুঙ্গা

এর আগে দেশের ক্রিকেট বোর্ডের সংস্কার এবং দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের জন্য আরেক সংসদ সদস্য প্রস্তাব করেন। এরপরই এ বিষয়ের ওপর নিজের মন্তব্য প্রকাশ করেন প্রসন্ন রানাতুঙ্গা। সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির বেশকিছু স্থানীয় সংবাদমাধ্যম শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ডের (এসএলসি) কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তহবিল অপব্যবহারের অভিযোগ করে। যেখানে বোর্ড কর্তাদের আত্মীয় স্বজনকে গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ চলাকালে অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণের জন্য অর্থ প্রদানেরও অভিযোগ রয়েছে।

ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের এই টুর্নামেন্টটি থেকে লঙ্কানদের লজ্জাজনক বিদায় হয়েছিল। পাশাপাশি দলটির ক্রিকেটারদের বিরুদ্ধেও শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ উঠে। পরবর্তীতে ক্রিকেটারদের আচরণ এবং বোর্ডের দুর্নীতির বিষয়ে স্বাধীন তদন্ত শুরু হয় চলতি বছর। এর আগে লঙ্কান ব্যাটার দানুশকা গুনাথিলাকার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছিল। তার বিরুদ্ধেও অপরাধমূলক বিচার প্রক্রিয়া শুরু করে দেশটি।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে শ্রীলঙ্কার বিদায়ের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই গ্রেফতার হন গুনাথিলাকা। অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে এক নারীকে যৌ হয়রানির অভিযোগ আনা হয় তার ওপর। একই সময়ে অস্ট্রেলিয়ায় লঙ্কান ক্রিকেট বোর্ডের আর্থিক অনিয়মের একটি অডিট প্রতিবেদন ফাঁস হয়। যদিও এরপর বোর্ডের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ তারা অস্বীকার করে।

এএইচএস