লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগের (এলপিএল) ফাইনালে যেতে প্রথম সুযোগ কাজে লাগাতে না পারলেও, দ্বিতীয় সুযোগ ছিল গল টাইটান্সের সামনে। এবারও সেই ধাপে উৎরাতে পারলেন না সাকিব আল হাসান ও লিটন দাসরা। আগের কয়েকটি ম্যাচে ভালো করতে না পারা লিটন এদিন ভালো কিছুর আভাস দিয়েও, ইনিংস বড় করতে পারেননি। অন্যদিকে মোটামুটি অলরাউন্ড নৈপুণ্য দেখালেও দলকে জেতাতে পারেননি সাকিবও। বিপরীতে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার ব্যাট-বলের দারুণ লড়াইয়ে বি-লাভ ক্যান্ডি ফাইনালে পৌঁছে গেল।

শনিবার (১৯ আগস্ট) কলম্বোর আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৭ উইকেটে ১৫৭ রান তুলেছিল ক্যান্ডি। বিপরীতে গল থেমেছে মাত্র ১২৮ রানে। ফলে হাসারাঙ্গার দল ৩৪ রানের জয় পেয়েছে।

এদিনও বোলিংয়ে নিজের দায়িত্ব ঠিকঠাক পালন করেছেন সাকিব। ৪ ওভারে ২৪ রানে একটি উইকেট নেন এই টাইগার অলরাউন্ডার। পরে ব্যাট হাতে ১৫ বলে ২ চারে ১৭ রান করেন। ব্যাটিং ব্যর্থতার দিনে তিনি ইনিংস লম্বা করতে পারলে ভিন্ন কিছুও হতে পারত। অন্যদিকে ওপেনিংয়ে প্রমোশন পেয়ে দুটি চারে শুরুটা ভালো হয়েছিল লিটনের। পরবর্তীতে ১৯ বলে ৪টি চারে তিনি ২৫ রানে থামেন। এটাই এবারের এলপিএলে তার সর্বোচ্চ রান।

এর আগের এলিমিনেটর ম্যাচ জিতেও ফাইনালেও ওঠার জন্য দ্বিতীয় পরীক্ষায় নামতে হয় ক্যান্ডিকে। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম চার ওভারে ১৯ রানের মধ্যে তারা দুই ওপেনারকে হারায়। পঞ্চম ওভারে প্রথমবার আক্রমণে এসে স্রেফ ১ রান দিয়ে একটি উইকেট নেন সাকিব। ওই ওভারে চতুর্থ বল বেরিয়ে এসে খেলার চেষ্টায় ব্যর্থ হন আরাচিগে। কিপারও পারেননি বল গ্লাভসে জমাতে। ব্যাটসম্যান ফিরলে হয়তো বেঁচেও যেতে পারতেন, কিন্তু পেছনে ফিরেও তাকাননি তিনি, চলে আসেন প্রায় উইকেটের মাঝপথে। সামনে এসে বল ধরে স্টাম্প ভাঙেন কিপার।

নিজের পরের ওভারে খরুচে বোলিং করেন সাকিব। দুটি চার হজম করে এই ওভারে রান দেন সব মিলিয়ে ১২। শুরুতে তিন ব্যাটসম্যানকে হারানোর ধাক্কা ক্যান্ডি সামাল দেয় দিনেশ চান্দিমাল ও হাসারাঙ্গার পঞ্চাশোর্ধ জুটিতে। ত্রয়োদশ ওভারে বোলিংয়ে ফিরে সাকিব দেন কেবল ৪ রান। পরের ওভারেই হাসারাঙ্গাকে ফিরিয়ে ৫২ বলে ৭২ রানের জুটি ভাঙেন দিনুশা।

সপ্তদশ ওভারে কোটার শেষ ওভারে প্রথম তিন বলে কোনো রান দেননি সাকিব। এরপর একটি ছক্কা মারেন ম্যাথিউস। এই ওভারে আসে ৭ রান। ক্যান্ডির হয়ে ৩০ বলে ৪ ছক্কা ও ৩ চারে ৪৮ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন হাসারাঙ্গা। পরে বল হাতে ২১ রানে ২ উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরাও এই লেগ স্পিনিং অলরাউন্ডার।

১৫৮ রানের জবাবে প্রথম ৬ বলে লিটনের রান ছিল ৫। পরের ৫ বলে তিনি মারেন চারটি চার। এর মধ্যে দ্বিতীয় ওভারে আফগান স্পিনার মুজিব উর রহমানের শেষ চার বলের মধ্যে আসে তিনটি বাউন্ডারি। চতুরঙ্গ ডি সিলভার বলে তিনি দলীয় ৩৮ রানে ফেরেন। এরপর পরবর্তী ৭ রানের মধ্যে বিদায় নেন গলের আরও দুই ব্যাটার। এরপর ক্রিজে এসে সাকিব প্রথম ৪ বলে করেন ২ রান। এরপর মুজিবকে কাট শটে চার মেরে পাল্টা জবাব দেওয়ার ইঙ্গিত দেন টাইগার অধিনায়ক।

তবে এদিনও ইনিংস বড় করতে ব্যর্থ সাকিব। আগের ম্যাচগুলোতেও ১৫-১৯ রানের বৃত্তে আটকে ছিলেন, এবারও তেমনই দৃশ্য দেখা গেল। তবে ১১ রানে একবার জীবন পান সাকিব। ডিপ এক্সট্রা কভারে কঠিন ক্যাচ মুঠোয় জমাতে পারেননি ফিল্ডার, ফলে সেটি বাউন্ডারি হয়ে যায়। এরপর সাকিব যোগ করতে পারেন আর কেবল ২ রান। সাহান আরাচিগেকে স্লগ সুইপ করে বাউন্ডারিতে ধরা পড়েন তিনি।

এরপর নিয়মিত উইকেট হারায় গল, ফলে লক্ষ্যের ধারেকাছেও যেতে পারেনি তারা। সর্বোচ্চ ২৮ রান করেন সোনাল দিনুশা। ক্যান্ডির হয়ে সর্বোচ্চ দুটি করে উইকেট নেন হাসারাঙ্গা, ডি সিলভা ও মোহাম্মদ হাসনাইন। শিরোপা লড়াইয়ে আজ (রোববার) ডাম্বুলা অরার মুখোমুখি হবে ক্যান্ডি।

এএইচএস