বাড়ি বাড়ি সিলিন্ডার পৌঁছে দেওয়া বাবাকে বিশ্রাম দিতে চান রিংকু
সর্বশেষ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) নিজেকে নতুনভাবে চিনিয়েছেন রিংকু সিং। এক ওভারে পাঁচ ছক্কা মেরে কেকেআরকে জেতানো অনবদ্য ইনিংসটি জীবনই বদলে দিয়েছে আলিগড়ের এই ক্রিকেটারের। অবশেষে জাতীয় দলের অপেক্ষাও ফুরিয়েছে আইপিএল তারকার। প্রথমে এশিয়ান গেমস, তারপর আয়ারল্যান্ড সফর। পরপর দুটি প্রতিযোগিতায় ভারতীয় দলে সুযোগ পেয়েছেন রিংকু।
ভারতীয় দলের হয়ে খেলতে নামবেন ভেবে রিংকু খুশি ঠিকই, কিন্তু এ নিয়ে অতিরিক্ত ভাবতে চান না তিনি। তার প্রধান লক্ষ্য যত বেশি সম্ভব রান করা। পাশাপাশি, তিনি চান বাবা যাতে গ্যাস সিলিন্ডার বয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ বন্ধ করে এবার বাড়িতে আরাম করেন।
বিজ্ঞাপন
এক সাক্ষাৎকারে রিংকু বলেছেন, ‘আমার কাজ শুধু রান করা। ম্যাচ খেলতে পারলে ভাল খেলার চেষ্টা করব। এর থেকে বেশি ভাবি না। বর্তমানটা নিয়ে বাঁচতে ভালবাসি। ঈশ্বর নিশ্চয়ই আমাকে এভাবেই আশীর্বাদ করবেন। পরিশ্রমটাই শুধু আমার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সেটাই ভাল করে করতে চাই। বাবা-মা, ভাই, ছোটবেলার কোচ মাসুদ আমিনি সবাই খুশি। সবাই চাইত আমি ভারতের হয়ে খেলি।’
আলীগড়ের এক নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম রিংকুরা। ‘নুন আনতে পান্তা ফুরোয়’ দশা ছিল। রিংকুর বাবা খানচাঁদ সিংহ গ্যাসের সিলিন্ডার বিলির কাজ করতেন। পরের দিকে নিজেও সেই কাজ করেছেন। ছোট দুটি কামরায় চার ভাই-বোন এবং মা-বাবাকে নিয়ে ঠাসাঠাসি করে থাকতেন। দু’বেলা ঠিকমতো খাবারও জুটত না। এখন অবস্থা অনেকটাই বদলেছে। তাই নতুন বাড়িতে গোটা পরিবারকে নিয়ে গিয়েছেন।
রিংকু চান, বাবা এবার কাজ ছেড়ে দিয়ে বাড়িতেই আরাম করুক। বলেন, বাবাকে বলেছি এবার তুমি আরাম করো। কিন্তু এখনও সিলিন্ডার বয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ওই কাজটা উনি ভালবাসে। কিছু কিছু সময়ে আমিও ওর ব্যাপারটা বুঝি। জানি যে বাড়িতে আরাম করা শুরু করলে খুব তাড়াতাড়ি একঘেয়ে লাগবে। সারা জীবন ধরে যদি কেউ কাজ করেই যায়, তা হলে সে নিজে না চাইলে থামানো সম্ভব নয়।”
আইপিএলের সুবাদে তাকে গোটা দেশ চিনেছে। কিন্তু তাঁকে নিয়ে খুব বেশি মাতামাতি হোক, এটা চাইছেন না রিঙ্কু। বলেছেন, ‘জীবন অনেকটাই বদলে গিয়েছে। এখন আমাকে অনেক বেশি লোকে চেনে। কিন্তু তা বলে বেশি বাড়াবাড়ি ভাল না। তা হলে অহংবোধ এসে যায়। আমি সব কিছু স্বাভাবিক রাখতে চাই এবং স্বাভাবিক ভাবে ক্রিকেট খেলতে চাই।’
এফআই