প্রথম ইনিংসে আগ্রাসী মেজাজ দেখাতে গিয়ে অল্প রানে গুটিয়ে যায় ইংল্যান্ডের ব্যাটিং লাইন-আপ। পরবর্তীতে অবশ্য বোলাররা ভালোই ব্যাকআপ দিয়েছে। ফলে অস্ট্রেলিয়া দারুণ শুরুর পরও প্রথম ইনিংসে মাত্র ১২ রানের লিড পায়। দ্বিতীয় ইনিংসেও আগ্রাসী ছিলেন ইংলিশ ব্যাটাররা, তবে পরিস্থিতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ফিফটি হাঁকিয়েছেন তিন ব্যাটার। তবে সেঞ্চুরির আক্ষেপ নিয়ে ফিরেছেন জো রুট, ফিফটি হতে পারত বেন ডাকেট ও বেন স্টোকসের। তবুও দিনশেষে স্বাগতিকদের লিড দাঁড়িয়েছে ৩৭৭ রানে।

ওভালে অ্যাশেজের পঞ্চম ও শেষ টেস্টে নেমেছিল ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া। তৃতীয় দিন নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসের প্রথম বলেই কাভার ড্রাইভে চার হাঁকিয়ে শুরু করেছিলেন ইংলিশ ওপেনার জ্যাক ক্রাউলি। ডাকেটের সঙ্গে তার ওপেনিং জুটিতে ৭৯ রান আসে। এরপরই মিচেল স্টার্কের আউটসুইঙ্গারে কট বিহাইন্ড হন ডাকেট (৫৫ বলে ৪২)। যদিও শুরুতে আম্পায়র আউট দেননি, পরবর্তীতে রিভিউ নিয়ে অস্ট্রেলিয়া উইকেটটি পায়।

ইংল্যান্ডের টপ-অর্ডারের সব ব্যাটারই এদিন রান পেয়েছেন। বিপরীত কেবল আগের ইনিংসে সর্বোচ্চ ৮৫ রান করা হ্যারি ব্রুক। প্রথম উইকেটের পতনের পর লাইন-আপ পাল্টে তিনে নামেন অধিনায়ক স্টোকস। ক্রাউলির সঙ্গে তিনি ৬১ রানের জুটি গড়েন। আক্রমণাত্মক ক্রাউলি ৭৩ রানে শিকার হন অজি অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের। এর আগে ৭৬ বলের ইনিংসে তিনি ৯টি চারের বাউন্ডারি খেলেন।

চলমান সিরিজে ৫ টেস্টের ৯ ইনিংসে ৫৩.৩৩ গড়ে ক্রাউলির রান ৪৮০। ঘরের মাঠে কোনো এক অ্যাশেজ সিরিজে ইংলিশ ওপেনারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রানের তালিকায় তিনি এখন ষষ্ঠ স্থানে।

এরপর শুরু থেকেই আগ্রাসী ব্যাটিং করেন রুট। রিভার্স স্কুপে ছক্কা মারেন মিচেল মার্শকে। স্টার্ককে মারেন টানা তিনটি চার। স্রেফ ৪২ বলে তিনি ফিফটি করেন। ওই ওভারেই টড মার্ফিকে উড়িয়ে মারার চেষ্টায় মিড-অফে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন স্টোকস। তার ৬৭ বলে ৪২ রানের ইনিংসটি গড়া ৩ চার ও এক ছক্কায়। একটি ছক্কা মেরেই কট বিহাইন্ড হয়ে ফেরেন হ্যারি ব্রুক।

এরপর পঞ্চম উইকেটে ১৪৮ বলে ১১০ রানের ইনিংসসেরা জুটি উপহার দেন রুট ও জনি বেয়ারস্টো। সিরিজে দ্বিতীয় শতকের পথেই ছিলেন রুট। কিন্তু ৯ রান দূরে থাকতে মার্ফির নিচু হওয়া ডেলিভারিতে ব্যাটের কানায় লেগে বোল্ড হন সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক। তিনি ১০৬ বলে ১১ চার ও এক ছক্কায় ৯১ রানের ইনিংস খেলেন। এরপর ক্রিজে আসেন আগের ইনিংসে ব্যাটিংয়ের সময় কুঁচকিতে চোট পাওয়া মঈন আলী। স্টার্কের চতুর্থ শিকার হওয়ার আগে ৩৮ বলে ৪টি চারে এই বাঁ-হাতি স্পিনিং অলরাউন্ডার করেন ২৯ রান। তার আগেই বেয়ারস্টো ও ক্রিস ওকসকে ফিরিয়ে দেন স্টার্ক। আলগা শটে কট বিহাইন্ড হন বেয়ারস্টো। ১০৩ বলে ১১টি চারের সাহায্যে তিনি ৭৮ রান করেন।
 
প্রতি ম্যাচের এদিন টেল-এন্ডারে রান পাননি ক্রিস ওকস ও মার্ক উডরা। তাদের ব্যাটেই প্রায় ম্যাচে ঝড়ো ক্যামিও পেত স্বাগতিক দলটি। দিনের শেষ ওভারে মার্ফিকে পরপর দুটি চার মারেন অ্যান্ডারসন। পরের বলে তাকে এলবিডব্লিউ দেন আম্পায়ার। তবে রিভিউ নিয়ে টেস্টের সর্বোচ্চ এই উইকেটশিকারী বেঁচে যান। রিপ্লেতে দেখা যায়, বল স্টাম্পের ওপর দিয়ে যেত। উল্লাসে ফেটে পড়ে স্বাগতিক দর্শকরা। তার সঙ্গে অপরাজিত আছেন এই ম্যাচের পর অবসরের নিতে যাওয়া স্টুয়ার্ট ব্রড। তৃতীয় দিন শেষে ৯ উইকেটে ইংলিশদের সংগ্রহ ৩৮৯ রান।

অস্ট্রেলিয়ার হয়ে সর্বোচ্চ ৪টি শিকার স্টার্কের। এছাড়া মার্ফি ৩টি এবং কামিন্স ও হ্যাজলউড একটি করে উইকেট নেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর : ইংল‍্যান্ড ১ম ইনিংস : ২৮৩, অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস : ২৯৫ 
ইংল্যান্ড ২য় ইনিংস : ৮০ ওভারে ৩৮৯/৯ (ক্রাউলি ৭৩, ডাকেট ৪২, স্টোকস ৪২, রুট ৯১, ব্রুক ৭, বেয়ারস্টো ৭৮, মঈন ২৯, ওকস ১, উড ৯, ব্রড ২*, অ্যান্ডারসন ৮*; স্টার্ক ১৯-২-৯৪-৪, হ্যাজলউড ১৫-০-৬৭-১, কামিন্স ১৬-০-৭৯-১, মার্শ ৮-০-৩৫-০, মার্ফি ২২-০-১১০-৩)

এএইচএস