এশিয়ার জায়ান্ট ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে চোখে চোখ রেখে লড়াই করেও সিরিজ হারের আক্ষেপে পুড়তে হয়েছিল বাংলাদেশ নারী দলকে। তবে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের শুরুতেই দাপুটে জয়ে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে ফরম্যাটে ভারতের বিপক্ষে জয় পেল টাইগ্রেসরা। মিরপুরের মাঠে বাংলাদেশের কাছে রীতিমতো অসহায় আত্মসমর্পণ করেছে ভারতীয়রা। 

রোববার মিরপুর শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে টস হেরে আগে ব্যাট করে বাংলাদেশ। অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতির ৩৯ রান আর ফারজানা আকতারের ২৭ রানের সুবাদে ৪৪ ওভারে ১৫২ রান সংগ্রহ করে টাইগ্রেসরা।

জবাবে ভারতীয়রা অলআউট হয়ে যায় ১১৩ রানে। বাংলাদেশের বোলার মারুফা আক্তার ৪ উইকেট আর রাবেয়া খান নেন ৩ উইকেট। ৪০ রানের জয়ে ইতিহাস গড়ে বাংলাদেশ। 

১৫৩ রানের ছোট টার্গেট হলেও রান তাড়ায় শুরুতেই হোঁচট খায় ভারত। মারুফা আক্তারের করা দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে নিগার সুলতানার কাছে ক্যাচ দিয়ে মাঠ ছাড়েন ভারতীয় তারকা ওপেনার স্মৃতি মান্ধানা। দলীয় ১৩ রানে প্রথম উইকেট হারায় ভারত। 

উইকেট শিকারের পর বাংলাদেশের মেয়েরা

পাওয়ারপ্লে শেষের আগে আরও দুই উইকেট খোয়ায় সফরকারীরা। অষ্টম ওভারে মারুফার দ্বিতীয় শিকার হন আরেক ওপেনার প্রিয়া পুনিয়া। মুর্শিদার হাতে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় তার ২৭ বলে ১০ রানের ইনিংস। আর পাওয়ারপ্লের শেষ বলে নাহিদার বলে এলবিডব্লিউ’র ফাঁদে পড়েন অধিনায়ক হারমানপ্রিত কৌর। ৫ রানেই থামে তার ইনিংস। 

এরপর উইকেটে বেশিক্ষণ থিতু হতে পারেননি স্বস্তিকা ভাটিয়া এবং জেমিমা রড্রিগেজও। রাবেয়া খানের জোড়া শিকারে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন দুজনে। ব্যক্তিগত ১৫ রানে বোল্ড হন স্বস্তিকা আর মুর্শিদার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন জেমিমা। স্কোরবোর্ডে ভারতের সংগ্রহ তখন ৫ উইকেটে ৬১ রান। 

এরপর ভারতের হয়ে হাল ধরেন দীপ্তি শর্মা ও আমানজোত কৌর। দুজনের জুটি ছিল ত্রিশ রানের। তবে দলীয় ৯১ রানের মাথায় পরপর তিন উইকেট হারিয়ে বসে ভারত। মারুফা আক্তারের জোড়া আঘাতের পর বিধ্বংসী হয়ে ওঠা দীপ্তি শর্মাকে আউট করেন নাহিদা। 

দীপ্তির বিদায়ে নিশ্চিত জয়ের পথেই এগোতে থাকে স্বাগতিকরা। সফরকারীদের হয়ে পুজা কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন। সুলতানা খাতুনের বলে অধিনায়ক জ্যোতির কাছে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনিও। সাজঘরে ফেরার আগে ১১ বলে ৭ রান আসে তার ব্যাট থেকে। শেষ ব্যাটার হিসেবে রানআউটের শিকার হন বারেদি আনুশা।

বাংলাদেশের হয়ে ৪ উইকেট শিকার করেন মারুফা আক্তার। ৩ উইকেট পেয়েছেন রাবেয়া খান। একটি করে উইকেট গেছে নাহিদা আক্তার এবং সুলতানা খাতুনের ঝুলিতে। 

বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্কোরার অধিনায়ক জ্যোতি

এর আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ ব্যাটিং বিপর্যয়ের মুখে পড়েছিল। দলীয় ১৪ রানে ফিরে যান দুই ওপেনার মুর্শিদা খাতুন ও শারমিন আক্তার।

এরপর দলের হাল ধরেন অধিনায়ক জ্যোতি ও ফারজানা। দুজনে গড়েন ৪৯ রানের মূল্যবান জুটি। ব্যক্তিগত ২৭ রানে ফারজানা ফিরে গেলেও অধিনায়ক জ্যোতি এক পাশ আগলে রেখে ব্যাটিং করে যান। 

দলীয় ১০৩ রানের মাথায় এলবিডব্লিউ’র ফাঁদে পড়েন অধিনায়ক জ্যোতি। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৯ রান আসে তার ব্যাট থেকে। 

শেষ দিকে ফাহিমার ২৯ বলে ১২ আর সুলতানার ২০ বলে ১৬ রানের সুবাদে দেড়শ পার করে বাংলাদেশের মেয়েরা। ভারতের পক্ষে আমানজত কৌর নিয়েছেন ৪ উইকেট।

জেএ/এফআই