শ্রীলঙ্কার মাঠে চলছে এসিসি মেন’স ইমার্জিং এশিয়া কাপ। এশিয়ান ক্রিকেট খেলুড়ে দেশগুলোর তরুণ ক্রিকেটারদের প্লাটফর্ম হিসেবেই যাকে চেনার কথা সবার। তবে, সেই ধারা যেন বেমালুম বদলে গেলো এবার। প্রায় সব দলেই দেখা পাওয়া গেলো জাতীয় দলে খেলা অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের। যেন উঠতি তরুণ না, বরং দল থেকে ছিটকে পড়াদের ফিরে আসার টুর্নামেন্ট এটি। 

সাধারণত ইমার্জিং এশিয়া কাপে বয়সভিত্তিক দলকেই সুযোগ দেয়ার পক্ষপাতী এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল। তবে ব্যতিক্রম দেখা গেলো এবারের আসরকে কেন্দ্র করে। এর আগে সব আসরে দলগুলোকে অনূর্ধ্ব-২৩ দল পাঠাতে বলা হলেও, এবার তুলে নেয়া হয়েছে বয়স সংক্রান্ত সেই বিধিনিষেধ। যার ফলে একাধিক অভিজ্ঞ আর বুড়ো খেলোয়াড়ের দেখা মিলেছে প্রায় সব দলে। 

বাংলাদেশ ইমার্জিং দল দিয়েই শুরু করা যাক। দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য সৌম্য সরকার। বর্তমানে ত্রিশের ঘরে পা দিয়েছেন এই খেলোয়াড়। ২০১৩ সালের ইমার্জিং এশিয়া কাপেও ছিলেন তিনি। দশ বছর পর আবার ফিরে এসেছেন এই টুর্নামেন্টে। মাঝে খেলেছেন দুইটি বিশ্বকাপও। 

দলে আছেন ৩৮ টি-টোয়েন্টি খেলা শেখ মাহেদি হাসান। জাতীয় দলের হয়ে যাকে বড় দলের বিপক্ষেও দেখা গিয়েছে, সেই মাহেদিই আবার সুযোগ পাচ্ছেন নিজেকে ঝালিয়ে নেয়ার। একইরকম অবস্থা মোহাম্মদ নাঈম শেখের বেলায়। তামিমের বদলি হিসেবে আফগানিস্তানের বিপক্ষেই সুযোগ পেয়েছিলেন এই তরুণ। তবে সুযোগ কাজে লাগেনি। এখন ইমার্জিং দলের হয়ে খেলছেন শ্রীলঙ্কায়। 

টেস্ট দলের হয়ে অভিষেকের স্বাদ পাওয়া জাকির হোসাইন আর মাহমুদুল হাসান জয়কেও দেখতে পাবেন ইমার্জিং দলের জার্সিতে। 

আরও পড়ুন: সৌম্য-বিজয়কে নিয়েই বাংলাদেশ টাইগার্সের ক্যাম্প

একই অবস্থা আফগানিস্তানের ইমার্জিং দলেও। ৩৫ বছর বয়েসী নুর আলী জাদরান খেলছেন ‘উদীয়মান’ দলের জার্সিতে। যদিও তারই ভাতিজা ইব্রাহিম জাদরান এবং মুজিব উর রহমান আছেন বাংলাদেশে মূল দলের সাথে।

৭১ ওয়ানডে খেলা নুর আলী জাদরানকে বলা হয় আফগানিস্তানের প্রথম প্রজন্মের ক্রিকেটারদের একজন। ২০১৯ বিশ্বকাপেও দেখা গিয়েছিলো তাকে। এবার সেই জাদরানই খেলছেন ইমার্জিং দলের হয়ে। এছাড়াও ইকরাম আলী খীলের মত অভিজ্ঞ খেলোয়াড়ও খেলছেন তাদের দলে। আফগানিস্তান দলের বেশিরভাগই তরুণ। তবে, প্রায় সবারই আছে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা। 

পাকিস্তান দলের দিকে তাকালে চোখ পড়ে শাহনেওয়াজ দাহানি, মোহাম্মদ ওয়াসিমের মত তারকাদের। দলের অধিনায়ক হিসেবে আছেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলে আসা মোহাম্মদ হারিস। আর দুই পেসার দাহানি এবং ওয়াসিম জুনিয়ারের ক্যারিয়ারও বলার মতোই। ১৪ ওয়ানডে আর ২৭ টি-টোয়েন্টির সাথে দুটো টেস্ট ম্যাচও খেলেছেন মোহাম্মদ ওয়াসিম। দাহানির ক্ষেত্রে অবশ্য টি-টোয়েন্টির অভিজ্ঞতাই বেশি। 

আরও পড়ুন: বাংলাদেশের জয়ের নায়ক আকবর-মেহেদী, অনুজ্জ্বল সৌম্য

তবে নজর কাড়ার মত পারফর্ম না করায় দুজনেই ছিটকে গিয়েছেন দল থেকে। আর দলে ফেরার রাস্তা হিসেবে সুযোগ পাচ্ছেন ইমার্জিং এশিয়া কাপে। একই রকম অবস্থানে থেকেই ইমার্জিং দলে সুযোগ পেয়েছেন শ্রীলঙ্কার চামিকা কারুনারাত্নে। ৪২ টি-টোয়েন্টি আর ২৩ ওডিআই খেলা চামিকা কখনোই জাতীয় দলে স্থায়ী হতে পারেননি। এবার হয়ত ফেরার সেই রাস্তাটাই খুঁজবেন তিনি। 

তবে এতসবের মাঝেও ব্যতিক্রম ভারত। দেশটির ক্রিকেট পাইপলাইন ঠিক কতখানি সমৃদ্ধ তার একটি নমুনা পাওয়া গেলো এবারের ইমার্জিং এশিয়া কাপে। ইয়াশ ধুলের নেতৃত্বে একেবারেই তরুণ এক পাঠিয়েছে দেশটির ক্রিকেট বোর্ড। 

জেএ