বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে দলের সঙ্গে থাকলেও মাঠে নামা হয়নি তরুণ ভারতীয় ব্যাটার যশস্বী জয়সওয়ালের। তবে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে চাপাতে বেশি দিন অপেক্ষা করতে হলো না আইপিএল মাতানো যশস্বীর। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের একাদশে সুযোগ পেয়ে দারুণভাবে কাজে লাগালেন তিনি। 

অভিষেক টেস্ট খেলতে নেমে অসাধারণ এক সেঞ্চুরিতে তিনি পাশে বসলেন লালা অমরনাথ, বিশ্বনাথ, আজহারউদ্দিন, সৌরভ গাঙ্গুলী, বীরেন্দর শেবাগ, শিখর ধাওয়ান ও রোহিত শর্মাদের মতো খেলোয়াড়দের। ২১ বছরের তরুণ এই ক্রিকেটার প্রথম টেস্ট শতরান উৎসর্গ করেছেন তার বাবা-মাকে। জানিয়েছেন, সবে শুরু করলেন। আরও সাফল্য পেতে চান।

অভিষেক টেস্টে শতরান করে উচ্ছ্বসিত জয়সওয়াল। ম্যাচের দ্বিতীয় দিনের শেষে তিনি অপরাজিত রয়েছেন ১৪৩ রান করে। বৃহস্পতিবার খেলা শেষ হওয়ার পর যশস্বী বলছেন, ‘এটা আমার অন্যতম আবেগপূর্ণ একটা ইনিংস। ভারতীয় দলে সুযোগ পাওয়া খুব কঠিন। এই সুযোগের জন্য আমি দলের সবাইকে ধন্যবাদ দিতে চাই। অবশ্যই অধিনায়ক রোহিত শর্মাকে। ধন্যবাদ দেব দর্শকদেরও।’ 

নিজের ইনিংস নিয়ে বলছেন, ‘সবে শুরু করলাম। ভবিষ্যতেও ভালো পারফরম্যান্স করতে চাই।’প্রথমবা টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়ে দারুণ খুশি যশস্বী। বলছেন, ‘আমি টেস্ট ক্রিকেট ভালবাসি। টেস্টের চ্যালেঞ্জ আমার ভাল লাগে। বিশেষ করে বল স্যুইং করলে দারুণ উপভোগ করি। টেস্টে সফল হতে গেলে পরিশ্রম প্রয়োজন। ক্রিকেটের সব দিক নিয়ে কাজ করতে হয়। মাঠে নেমে আমি শুধু নিজেকে মেলে ধরতে চেয়েছিলাম।’

আরও পড়ুন: ভারতের বেশি মুনাফায় আইসিসির অনুমোদন

জীবনের প্রথম টেস্ট শতরান কাকে উৎসর্গ করবেন? যশস্বী বলেছেন, ‘শতরানের মুহূর্তটা ভীষণ আবেগের ছিল। নিজেরই গর্ব হচ্ছিল। সবার কাছে কৃতজ্ঞ আমি। এই শতরান বাবা-মাকে উৎসর্গ করছি।’

আইপিএলে ৬০০-র বেশি রান করে নজরকাড়ার পরই যশস্বী জানিয়ে ছিলেন, টেস্ট ক্রিকেট খেলতে চান। তিনি বলেছিলেন, ‘লাল বলের ক্রিকেট অনেক বড় পরীক্ষা। আইপিএলে যে ধরনের শট সহজে খেলা যায়, রঞ্জি ট্রফিতে তা কিন্তু সহজে হয় না। কয়েকটি ওভারের পরে সাদা বল নড়াচড়া করা বন্ধ করে দেয়। কিন্তু লাল বল শেষ পর্যন্ত সুইং করে। পুরনো হয়ে গেলে রিভার্স সুইং করে। ব্যাটার হিসেবে অনেক বড় পরীক্ষা দিতে হয় লাল বলে। টেস্টে যদি ভাল করতে পারি, তবেই নিজেকে ভালো ব্যাটার ভাববো।’

প্রথম ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ১৫০ রানের জবাবে অধিনায়ক রোহিতের সঙ্গে ইনিংস ওপেন করতে নামেন জয়সওয়াল। শুরু থেকেই নিখুঁত খেলে গেছেন তিনি। গএর পুরস্কারই হিসেবেই পেলেন ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্টে সেঞ্চুরি।

প্যাডল সুইপ করে ফাইন লেগে বল ঠেলে দিয়ে সেঞ্চুরি করা রানটি নেন জয়সওয়াল। এরপর দুই হাত ওপরে তোলেন, মাথা থেকে হেলমেটটা খোলেন। হেলমেটে চুমো আঁকেন, এরপর অপার্থিব এক হাসি দেন এই তরুণ ওপেনার। সেই সময় তাকে অভিনন্দন জানান তার পর এ ম্যাচে সেঞ্চুরি পাওয়া রোহিত।

জয়সওয়াল সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ২১৫ বলে, মেরেছেন ১১টি চার। দ্বিতীয় দিন শেষে তিনি অপরাজিত আছেন ১৪৩ রানে। রোহিত আউট হয়ে গেছেন ১০৩ রান করে। তিনে নেমে সুবিধা করতে পারেননি শুবমান গিল। দিনশেষে ২ উইকেট হারিয়ে ভারত তুলেছে ৩১২ রান। 

এফআই