ছবি: সংগৃহীত

২০১৯ অ্যাশেজের হেডিংলি টেস্টের সেই সেঞ্চুরিটা কোনোরকম শর্ত ছাড়াই বেন স্টোকসের ক্যারিয়ার সেরা। আজ লর্ডসে তার ব্যাটিং দেখে সেই ইনিংসের ছবিগুলো মনে ভাসছিল। ইংলিশ ক্রিকেট ভক্তরা হয়তোবা মনের কোণে জয়ের স্বপ্নও বুনতে শুরু করেছিলেন! বিশেষ করে জনি বেয়ারস্টোর অমন অদ্ভুদ আউটের পর স্টোকস যেভাবে ব্যাটিং করেছেন। তাতে মনে হয়েছে, হেডিংলির সেই ইনিংসটাই প্যারালাল কোনো ইউনিভার্সে বসে দেখছি! যেটা ছায়াপথ থেকে চার আলোকবর্ষ দূরে!  

বেয়ারস্টো যখন সাজঘরে ফেরেন তখন স্কোরবোর্ডে ইংল্যান্ডের নামের পাশে ৬ উইকেটে ১৯৩ রান। জয়ের জন্য তখন ইংলিশদের প্রয়োজন ১৭৮ রান, হাতে ছিল ৪ উইকেট। তবে বাকি পাঁচ ব্যাটারের মধ্যে স্বীকৃত ব্যাটার কেবল স্টোকসই। ম্যাচের পরিস্থিতি বুঝে সেভাবেই পরিকল্পনা সাজালেন ইংলিশ অধিনায়ক। সাম্প্রতিক সময়ে বাজবলে সফলতা পাওয়া ইংল্যান্ড এদিনও সেই থিওরিতেই বিশ্বাস রাখলো।

৫৬তম ওভারে হ্যাটট্রিক ছক্কাসহ ২৪ রান তুললেন স্টোকস। তবে অপর প্রান্তে থাকা স্টুয়ার্ড ব্রডের ওপর খুব একটা আস্থা রাখতে পারছিলেন না। প্রত্যেক ওভারেই শেষদিকে এসে এক রান নেওয়ার চেষ্টা করেছেন। যেন নতুন ওভারে শুরু থেকে স্ট্রাইক পান। যেমনটা স্টোকস করেছিলেন হেডিংলিতে নিজের সেই বিখ্যাত ইনিংস খেলার পথে।  

ব্যাট হাতে দলকে একাই টানছিলেন অধিনায়ক। দলও জয়ের পথ ধরেই হাঁটছিল। কিন্তু ৭৩তম ওভারে এসে হাঠাৎ ছন্দ পতন। হ্যাজেলউডের করা শর্ট বলে পুল করতে গিয়েই যেন ভুল করলেন। টপ এজ হয়ে বল জমা পরলো ক্যারির গ্লাভসে। সমান ৯টি করে চার-ছক্কায় ১৫৫ করে তিনি যখন সাজঘরের পথে হাঁটছেন তখন ইংলিশদের জয়ের জন্য আরও প্রয়োজন ৭২ রান।

শেষ ৩ উইকেট হাতে নিয়ে ৭২ রানের সমীকরণ মেলানোটা ইংল্যান্ডের জন্য প্রায় অসম্ভবই ছিল। রীতিমতো খালি হাতে আটলান্টিক পাড়ি দেওয়ার মতোই! এমন জায়গা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে হলে মিরাক্কল কিছু প্রয়োজন ছিল। কিন্তু ইংলিশ টেলেন্ডাররা তেমন কিছুই করতে পারলেন না। উল্টো অজিদের গতি আর বাউন্সের সামনে দাঁড়িয়ে থাকায় যেন দায় ছিল!

নিজেদের ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান তাড়া করতে নেমে শেষ পর্যন্ত ৩২৭ রানে থেমেছে ইংল্যান্ড। ফলে ৪৩ রানের জয় পেয়েছে অস্ট্রেলিয়া। সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে টানা জয়ে ইতোমধ্যেই ২-০ ব্যবধানের লিড অজিদের।

এইচজেএস