ইংল্যান্ডের এজবাস্টনে শুরু হয়েছে ঐতিহাসিক অ্যাশেজ সিরিজ। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে রোমাঞ্চকর এই লড়াইয়েও স্বাগতিকরা আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের ধারা বজায় রেখেছে। অবশ্য ইংলিশদের টেস্ট খেলার স্টাইলে পরিবর্তন এসেছে আরও আগেই। সাদা পোশাকে দলটির প্রধান কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককালাম এবং অধিনায়ক বেন স্টোকস ‍জুটি রীতিমতো টেস্ট খেলার ধরনকে আমুল বদলে দিয়েছেন। এতে তারা সফলও হয়েছেন, গত বছর ১০ টেস্টের সবকটিতেই জয়ের মুখ দেখেছে ইংল্যান্ড।

সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখার ঘোষণা দিয়েই আজ (১৬ জুন) থেকে পাঁচ ম্যাচের অ্যাশেজ শুরু হয়েছে। এদিন টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ইংলিশ অধিনায়ক বেন স্টোকস। আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করতে গিয়ে মাত্র ২২ রানেই ওপেনার বেন ডাকেটকে হারিয়েছে ইংলিশরা। ইনজুরি থেকে ফেরা জশ হ্যাজলউডের বলে তিনি ১২ রান (১০ বল) করে উইকেটরক্ষক অ্যালেক্স ক্যারির তালুবন্দী হয়েছেন।

ইংল্যান্ডের এমন আগ্রাসী মনোভাবের সঙ্গেও লড়াই জমিয়ে তুলতে প্রস্তুত, তারই যেন ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছে অস্ট্রেলিয়া। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে তারা ভারতকে হারিয়ে শিরোপা ছিনিয়ে নিয়েছে। অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের নেতৃত্বে মিচেল স্টার্ক এবং স্কট বোল্যান্ডরা নাস্তানাবুদ করে রেখেছিলেন ভারতীয় ব্যাটারদের। ফলে দাপুটে জয়ে টেস্টের ফাইনালকে পরিণত করেন একপেশে।

আরও পড়ুন >> উইজডেনের বর্ষসেরা স্টোকস-মুনি

এদিকে, উইকেট হারানোয় চাপে পড়া তো দূরে থাক, নিজেদের স্বভাবসিদ্ধ পারফর্ম করে যাচ্ছে ইংলিশ ব্যাটাররা। দ্বিতীয় উইকেটে ওপেনার জ্যাক ক্রাউলির সঙ্গে ওয়ানডাউনে নামা ওলি পোপ ৭০ রানের জুটি বাঁধেন। এরপর অজিদের হয়ে ব্রেক থ্রু এনে দেন অফস্পিনার নাথান লায়ন। ২টি চারের বাউন্ডারিতে ৩১ রান (৪৪ বল) করা পোপকে তিনি এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন। এরপর ৩২ রানের ব্যবধানে আরও একটি উইকেট হারিয়েছে স্বাগতিকরা।

প্রথম বলে চার দিয়ে অ্যাশেজ শুরু করেছেন জ্যাক ক্রাউলি, থেমেছেন ৬১ রানে

এক প্রান্ত আগলে রাখা ক্রাউলিকে ফিরিয়েছেন বোল্যান্ড। আউট হওয়ার আগে তিনি ৭টি চারের বাউন্ডারিতে ৭৩ বলে ৬১ রান করেন। টেস্টে এটি ক্রাউলির নবম ফিফটি। লাঞ্চ বিরতিতে যাওয়ার আগপর্যন্ত ইংল্যান্ড ৩ উইকেটে ১২৪ রান তুলেছে। ৪.৬৫ গড়ে ওভারপ্রতি রান নিয়েছেন স্বাগতিক ব্যাটাররা। ক্রিজে ২০ রানে অপরাজিত আছেন অভিজ্ঞ ব্যাটার জো রুট।

আরও পড়ুন >> অ্যাশেজে ফেরার প্রস্তাবে মঈন বলেছিলেন ‌‘লল’

খেলোয়াড় হিসেবে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক দর্শনে বিশ্বাসী ছিলেন নিউজিল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক ম্যাককালাম। কোচিং ক্যারিয়ারে এসেও তার দর্শন বদলায়নি। একইসঙ্গে তার শিষ্য স্টোকসও বরাবরই লড়াকু মানসিকতার। আক্রমণাত্মক খেলতে পছন্দ করেন, কখনও হাল ছাড়েন না। আক্রমণাত্মক মানসিকতার এই দুজনকে ইংল্যান্ডের টেস্ট ক্রিকেটের দায়িত্ব দেওয়ায় অনেকের মাঝে হিতে বিপরীত হওয়ার শঙ্কাও ছিল। তবে সব শঙ্কা দূর করে অভিষেক সিরিজেই বাজিমাত করেছে তারা। বাজিমাত করেছে বাজবল তত্ত্ব!

দ্রুত ৩ উইকেট নিয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে আছে অস্ট্রেলিয়া

নিউজিল্যান্ডকে ঘরের মাঠে হোয়াইটওয়াশ করে যাত্রা শুরু করে স্টোকস-ম্যাককালাম জুটি। ওই সিরিজে নতুন ব্র্যান্ডের এক ইংল্যান্ড দল দেখেছে ক্রিকেট বিশ্ব। মাঠের ক্রিকেটে স্টোকসের আক্রমণাত্মক মনোভাব আর ড্রেসিংরুমে ম্যাককালামের মাস্টার মাইন্ড। সবমিলিয়ে এই সিরিজ দিয়ে নতুন যুগে পা রাখে ইংলিশদের টেস্ট ক্রিকেট। এরপর একে একে ১১টি টেস্ট খেলেছে ইংল্যান্ড। যার মধ্যে ১০টিতেই তারা জয় পেয়েছে। 

এএইচএস