লখনৌ সুপার জায়ান্টসের দেওয়া সমীকরণ প্রায় মিলিয়েই ফেলেছিল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। তবে তারা যেভাবে শেষদিকে আশা জাগিয়েছিল, একইভাবে পুড়িয়েছে ৫ রানের আক্ষেপে। শেষ ২ ওভারে ৩০ রান দরকার থাকায়, প্রথম ওভারেই ১৯ রান তুলে নেয় মুম্বাইয়ের টিম ডেভিড। কিন্তু শেষ ওভারে নিতে পারেন মাত্র ৫ রান। ফলে লড়াই জমিয়ে তুলেও হার নিয়েই মুম্বাইকে মাঠ ছাড়তে হয়েছে। এই জয়ে পয়েন্ট টেবিলের তিনে উঠে এলো লখনৌ, রোহিত শর্মারা নেমে গেছেন চারে।

আরও পড়ুন >> ভাঙা হাত নিয়েই আইপিএলে নাচলেন চিয়ারলিডার?

অটল বিহারী স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি স্বাগতিক লখনৌর। ১২ রানে পরপর দুই উইকেট হারিয়ে তারা কঠিন চাপে পড়ে যায়। দীপক হুদা এবং প্রেরাক মাকান্দকে দুজনকেই ফেরান জেসন বেহেরনড্রফ। ফলে ৬ ওভারের পাওয়ার প্লে-তে লখনৌর সংগ্রহ ছিল মাত্র ৩৫ রান। এর ঠিক পরের বলেই আউট হয়ে চাপ আরও বাড়িয়ে দেন প্রোটিয়া ব্যাটার কুইন্টন ডি কক। ফর্মে থাকা সত্ত্বেও বিদেশি অন্যদের পারফর্মের কারণে ডি কক সুযোগ পাচ্ছিলেন না। কিন্তু এদিন পিযূশ চাওলার বলে তিনি ফেরেন ১৫ বলে মাত্র ১৬ রানে।

সূর্যকুমারের আউটের পর সৃষ্ট দৃশ্যের মতোই ছিল মুম্বাইয়ের ফলাফল

এরপর আর উইকেট হারায়নি লখনৌ। তখন তাদের ঘুরে দাঁড়ানোর পালা। সেখানে দারুণ আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে নেতৃত্ব দেন অস্ট্রেলিয়ান অলরাউন্ডার মার্কোস স্টয়নিস। তার সঙ্গে দলের বিপর্যয়ে হাল ধরেন অধিনায়ক ক্রুনাল পান্ডিয়া। পান্ডিয়া রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে ফেরার আগপর্যন্ত দুজনের জুটিতে ৫৯ বলে ৮২ রান আসে। ৪২ বলে ৪৯ রান করেন পান্ডিয়া। এরপর একপ্রান্ত আগলে নিকোলাস পুরানকে সঙ্গে নিয়ে দলকে শেষ পর্যন্ত ১৭৭ রানে পৌঁছে দেন স্টয়নিস। ৪৭ বলে ৪ চার ও ৮ ছক্কায় ৮৯ রানে অপরাজিত থাকেন স্টয়নিস। 

আরও পড়ুন >> আইপিএলে ছন্দহীন, যা বলছেন সুনীল নারাইন

রান তাড়ায় মুম্বাইয়ের শুরুটা ছিল লখনৌর ঠিক উল্টো। ফলটাও তার বিপরীতই এসেছে। দারুণ শুরুর পরও মাঝপথে খেই হারিয়েছে রোহিত শর্মার দলটি। অথচ ১১ ওভার শেষে ১ উইকেটে ১০৩ রান করে একসময় জয়ও দেখছিল মুম্বাই। লক্ষ্য তাড়ায় মুম্বাইকে দারুণ শুরু এনে দেন ঈশান কিষান ও অধিনায়ক রোহিত। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারেই দলকে ৫৮ রান এনে দেন এ দুজন। দশম ওভারে দলকে জয়ের স্বপ্ন দেখিয়ে ফেরেন অধিনায়ক রোহিত। ২৫ বলে ৩৭ রান করে রবি বিষ্ণুইয়ের তিনি দীপক হুদাকে ক্যাচ দেন। অধিনায়ক ফিরলেও পরের ওভারে চার মেরে নিজের ফিফটি পূরণ করেন ঈশান কিষান। সেই ওভারেই একশ পেরিয়ে যায় মুম্বাইয়ের সংগ্রহ।

ফিফটি করে অবশ্য বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি ঈশান। বিষ্ণুইয়ের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ঈশান ফেরেন ৩৯ বলে ৮ চার ও ১ ছক্কায় ৫৯ রান করে। অল্প সময়ের মধ্যে ২ উইকেট হারিয়ে বেশ চাপে পড়ে মুম্বাই। এরপরই অতিথিরা পথ হারিয়ে ফেলে। তারা চেষ্টা করেও আর পথে ফিরতে পারেনি। সে সময় ২ ওভারে আসে মাত্র ৪ রান। ১৩ ওভার শেষে অতিথিদের সংগ্রহ ছিল ২ উইকেটে ১০৭ রান। ৪২ বলে তখন মুম্বাইয়ের প্রয়োজন ছিল ৭১ রান।

এদিন দারুণ ছন্দে থাকা সূর্যকুমার যাদবকে (৭) বোল্ড করে ম্যাচ জমিয়ে তোলার ইঙ্গিত দেন ইয়াশ ঠাকুর। মহসিন খানের বলে নেহাল ওয়াদহেরাও (১৬) ফিরে গেলে চাপ আরও বাড়ে মুম্বাইয়ের। ১৭ বলে ২৯ রান করে সেই চাপ থেকে দলকে উদ্ধারের চেষ্টা করেন টিম ডেভিড। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর পারেননি। মুম্বাই ম্যাচ হারে শেষ ওভারে। অপরাজিত ডেভিড ১ চার ও ৩টি ছয়ে ১৯ বলে ৩২ রানের ইনিংস খেলেন। 

এই জয়ে লখনৌ প্লে–অফ খেলার সম্ভাবনা আরও উজ্জ্বল করল। ১৩ ম্যাচ শেষে তৃতীয় স্থান উঠে আসা দলটির পয়েন্ট ১৫। আর সমান ম্যাচে চারে নেমে যাওয়া মুম্বাইয়ের ১৪ পয়েন্ট।

এএইচএস