বিরাট কোহলি ও গৌতম গম্ভীরের মধ্যকার বিবাদ ভারতীয় ক্রিকেটে যেন গ্রীষ্মের উত্তাপ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। তাদের দ্বন্দ্বের বিষয়টি এখন দেশটির আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। ক্রিকেটীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে শাস্তিও পেয়েছেন এই দুজন। কোহলি-গম্ভীরের ম্যাচ ফি’র শতভাগই জরিমানা করা হয়েছে। কিন্তু সাবেক ভারত অধিনায়ক কোহলির জন্য এই শাস্তিও যথেষ্ট নয় বলে মনে করছেন কিংবদন্তি ক্রিকেটার সুনীল গাভাস্কার। তার মতে, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না দেওয়ায় ক্রিকেটাররা বারবারই এমন ভুল করছেন।

ঘটনার সূত্রপাত সোমবার (১ মে) লখনৌ সুপার জায়ান্টস ও রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্সের ম্যাচ শেষে। দু’দলের ক্রিকেটাররা হাত মেলানোর জন্য এগিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু সেখানে ম্যাচ চলাকালীন কোহলির আচরণের রেশ এসে পড়ে। লখনৌয়ের উইকেট পড়ার পরে নিজের স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে উল্লাস করছিলেন কোহলি। এসময় লখনৌয়ের ডাগআউটের দিকে তাকিয়ে মুখে আঙুল দিয়ে চুপ করে থাকার ভঙ্গি দেখান বেঙ্গালুরুর সাবেক এই অধিনায়ক।

আরও পড়ুন >> ‘১৫ বছর পর অনুশোচনা করবে কোহলি-গম্ভীর’

আফগানিস্তানের ক্রিকেটার নাবিন উল হক আউট হওয়ার সময়ও উত্তেজিত হয়ে উল্লাস করেন কোহলি। টুপি খুলে মাটিতে ছুড়ে ফেলেন। সেটা হয়তো ভালোভাবে নেননি নাবিন। তাই হাত মেলানোর সময় কোহলিকে কিছু একটা বলতে দেখা যায় এই আফগান ক্রিকেটারকে। সঙ্গে সঙ্গে জবাবও দেন কোহলি। তার পরই সেই বিতর্কে যোগ দেন গম্ভীর। আর তাতেই বিবাদ বেড়ে যায়।

পরবর্তীতে খেলা সম্প্রচারকারী চ্যানেলে গাভাস্কার বলেন, ‘ওদের ম্যাচ ফি-র ১০০ ভাগ কেটে নেওয়া হয়েছে। মানে বিরাট যে টাকা পায় তাতে ওর ১ কোটি টাকার মতো জরিমানা হয়েছে। সেটা অবশ্য অনেক বড় জরিমানা। গম্ভীরের কত জরিমানা হয়েছে সেটা আমি জানি না। কিন্তু শুধু জরিমানা করে এই ঘটনা থামিয়ে রাখা যাবে না।’

মাঠে প্রতিযোগিতা চলাকালীন কোনো ঘটনায় মাথা গরম হতে পারে বলে স্বীকার করছেন গাভাস্কার। কিন্তু তিনি মনে করেন, সেটা মাঠেই শেষ করে দেওয়া উচিত। খেলা শেষেও সেটা জিইয়ে রাখা উচিত নয়। কড়া শাস্তির ভয় না থাকায় ক্রিকেটাররা বারবার এই ভুল করছেন বলে মনে করছে গাভাস্কার, ‘বিসিসিআইকে নিশ্চিত করতে হবে এই ঘটনা যেন আর না ঘটে। তার জন্য কড়া শাস্তি দিতে হবে। খেলায় প্রতিযোগিতা থাকুক। কিন্তু সেটা শুধু খেলার মধ্যেই থাকুক। এই ধরনের ঘটনা উঠতি ক্রিকেটারদের বিপথে পাঠাতে পারে।’

আরও পড়ুন >> ড্রেসিংরুমে গম্ভীরকে উদ্দেশ্য করে যা বললেন কোহলি (ভিডিও)

একমাত্র নির্বাসনের শাস্তি দিলেই ক্রিকেটাররা ঝামেলায় জড়াবেন না বলে দাবী গাভাস্কারের, ‘হারভজন-শ্রীশান্তের ঘটনার পর তো ওদের নির্বাসিত করা হয়েছিল। তাহলে এক্ষেত্রে কেন হবে না। নির্বাসনের শাস্তি দিলে যেমন ক্রিকেটাররাও সতর্ক হবে, তেমনই প্রতিটা দলও সজাগ থাকবে। বিসিসিআইকে কড়া পদক্ষেপ নিতে হবে। নইলে এ ধরনের ঘটনা চলতেই থাকবে।’

এর আগে ২০০৮ সালে আইপিএলের প্রথম আসরে বিবাদে জড়ান হারভজন সিং ও এস শ্রীশান্ত। একপর্যায়ে শ্রীশান্তকে চড় মেরে বসেন হারভজন। এই ঘটনায় দুজনকেই খেলা থেকে নির্বাসনে দিয়েছিল বিসিসিআই। সেই ঘটনার ১৫ বছর পর এসে অনুতপ্তের কথা জানিয়েছেন হারভজন। সেই একই ঘটনার মুখোমুখি যেন কোহলি-গম্ভীর না হন, সেজন্য হারভজন পরামর্শও দিয়েছেন।

এএইচএস