পুরনো বিবাদ নতুন করে দেখা গেল আইপিএলের মঞ্চে। গতকাল (সোমবার) রাতে লখনৌ সুপার জায়ান্টস বনাম রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর ম্যাচ শেষে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়েছে গম্ভীর–কোহলির। সতীর্থরা এসে না সরালে এই কথা–কাটাকাটি হাতাহাতির পর্যায়ে চলে যেতে পারতো। মাঠে বিবাদের পর সাজঘরে ফিরেও মেজাজ চড়া ছিল কোহলির। সেখানে গম্ভীরের নাম উল্লেখ না করেই আক্রমণ করেন তিনি। বুঝিয়ে দেন যে, সহজে ছাড়বার পাত্র অন্তত তিনি নন। 

সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা বেঙ্গালুরুর একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, গালি গায়ে ড্রেসিংরুমে হেঁটে বেড়াচ্ছেন আর বলছেন, ‘এটা একটা মধুর জয়। এভাবেই এগিয়ে যাও। প্লে–অফ বিবেচনায় নিলে এটা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ জয় ছিল। ওদের (লখনৌ) মাঠে আমরাই বেশি সমর্থন পেয়েছি। এটা একটা অবিশ্বাস্য অনুভূতি। এটা বুঝিয়ে দিয়েছে, সবাই দল হিসেবে আমাদের কতটা পছন্দ করে। ছোট সংগ্রহ গড়েও আমরা নিজেদের চরিত্র দেখিয়েছি। সবার মধ্যে বিশ্বাস ছিল, আমরা পারব।’

তবে এরপরই গম্ভীরকে উদ্দেশ্য করে মন্তব্য করেন কোহলি। যদিও সরাসরি লখনৌ মেন্টরের নাম বলেননি। তবে কথাটি যে তাকেই উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে তা বুঝতে সমস্যা হয়নি কারও। কোহলি বলেন, ‘যদি তুমি এটা দিতে পারো, তাহলে নিতে পারার মানসিকতাও থাকতে হবে। নিতে না পারলে দিতে এসো না।’

ঘটনার সূত্রপাত সোমবার (০১ এপ্রিল) আরসিবি বনাম লখনৌ ম্যাচে। এদিন ম্যাচ চলাকালীন লখনৌয়ের উইকেট পড়ার পরে নিজের স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে উল্লাস করছিলেন কোহলি। এসময় লখনৌয়ের ডাগআউটের দিকে তাকিয়ে মুখে আঙুল দিয়ে চুপ করে থাকার ভঙ্গি দেখান বেঙ্গালুরুর সাবেক এই অধিনায়ক।

আফগানিস্তানের ক্রিকেটার নাবিন উল হক আউট হওয়ার সময়ও উত্তেজিত হয়ে উল্লাস করেন কোহলি। টুপি খুলে মাটিতে ছুড়ে ফেলেন। সেটা হয়তো ভালোভাবে নেননি নাবিন। তাই ম্যাচ শেষে হাত মেলানোর সময় কোহলিকে কিছু একটা বলতে দেখা যায় এই আফগান ক্রিকেটারকে। সঙ্গে সঙ্গে জবাবও দেন কোহলি। তারপরই সেই বিতর্কে যোগ দেন গম্ভীর। আর তাতেই বিবাদ বেড়ে যায়।

পরিস্থিতি উত্তপ্ত হচ্ছে দেখে সেখানে এসে উপস্থিত হন দু’দলের বাকি ক্রিকেটার ও সাপোর্ট স্টাফরা। কোহলি ও গম্ভীর দু’জনেই দিল্লির। লখনৌয়ের স্পিনার অমিত মিশ্রা ও সহকারী কোচ বিজয় দাহিয়াও একসময় দিল্লির হয়ে খেলেছেন। সেই কারণে তারা কোহলি-গম্ভীরকে ভালোভাবে চেনেন। তাই তারাই বেশি উদ্যোগী হয়ে দু’জনকে সামাল দেন। লখনৌ অধিনায়ক লোকেশ রাহুলও ছিলেন সেখানে। গম্ভীরকে শান্ত করার চেষ্টা করেছেন। আর কোহলিকে সরিয়ে নিয়ে যান আরসিবি অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসি।

কিন্তু সেখানেই সব থেমে যায়নি। তিনি যে গম্ভীরের কথা ভালোভাবে নেননি সেটা কোহলির চোখ-মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছিল। বাউন্ডারির ধারে দাঁড়িয়ে রাহুলের সঙ্গে অনেকটা সময় কথা বলেন তিনি। ঠিক সেই সময় সেখানে উপস্থিত হন লখনৌয়ের মালিক সঞ্জীব গোয়েনকা। তার সঙ্গে অবশ্য হাত মেলান কোহলি।

এদিকে, এমন আচরণের দায়ে দুজনকেই শাস্তি দেওয়া হয়েছে। তাদের ম্যাচ ফি’র শতভাগ জরিমানা করা হয়েছে। মূলত আইপিএল কোড অব কন্ডাক্টের লেভেল-২ এর অপরাধ করায় এই শাস্তি পেলেন কোহলি এবং গম্ভীর। তাছাড়া একই তর্কে জড়িয়ে জরিমানা গুণতে হচ্ছে নাভিন উল হককেও। এই আফগান পেসার লেভেল-১ এর অপরাধ করায় তাকে ম্যাচ ফির ৫০ শতাংশ জরিমানা করা হয়েছে।

এফআই