সর্বোচ্চ রানের ম্যাচে বেঙ্গালুরুকে হারাল চেন্নাই
আইপিএলের চলতি আসরে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ রানের ম্যাচ হয়ে গেল সোমবার (১৭ এপ্রিল) রাতে। চেন্নাই সুপার কিংস ও রয়েল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর সেই ম্যাচে দু’দলই রানের পসরা বসিয়ে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই জমিয়ে তুলেছিল। তবে শেষ পর্যন্ত জয়ের হাসি হেসেছে মহেন্দ্র সিং ধোনির চেন্নাই। এদিন প্রথমে ব্যাট করে প্লেসি-কোহলিদের বেঙ্গালুরুকে ২২৭ রানের লক্ষ্য দেয় চেন্নাই। বেঙ্গালুরু অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসির ব্যাটিংয়ে এক সময় সেটি প্রায় হাতের মুঠোয় চলে এসেছিল। কিন্তু ডেথ ওভারের বোলিং পারফরম্যান্সে ৮ রানে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন ধোনিরা।
এদিন টস হেরে চিন্নাস্বামীর ঘরের মাঠে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে তৃতীয় ওভারেই ফেরেন চেন্নাই ওপেনার রুতুরাজ গায়কোয়াড়। এরপর দলটি আর পেছনে ফিরেও তাকায়নি। অজিঙ্কা রাহানে ও ডেভন কনওয়ে দ্বিতীয় উইকেটেই তোলেন ৪৩ বলে ৭৪ রান। রাহানে থামেন ২০ বলে ৩৭ রান করে, কনওয়ে ১৬তম ওভারে আউট হন ৪৫ বলে ৮৩ রান করে, সেই ইনিংসে ছিল ৫টি করে চার ও ছক্কা।
বিজ্ঞাপন
কেবল রাহানে-কনওয়েই নয়, স্বাগতিকদের হয়ে ব্যাট হাতে ঝড় তুলেছেন শিবম দুবে, শেষে আম্বাতি রাইডু ও মঈন আলীরা। কনওয়ের পর ২৭ বলে ২ চার ও ৫ ছক্কায় ৫২ রান করা দুবেকে থামায় বেঙ্গালুরু। কিন্তু রাইডুর ৬ বলে ১৪ ও মঈনের ৯ বলে ১৯ রানের ছোট অথচ ঝড় তোলা ইনিংস চেন্নাইকে এগিয়ে নেয়। মৌসুমে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ২২৮ রানের স্কোর গড়েছে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। মাত্র ২ রানের জন্য সেই স্কোর পার করতে না পারলেও, চেন্নাই ৬ উইকেট হারিয়ে জয় তুলে নেওয়ার মতো সংগ্রহই পেয়েছিল।
চেঙ্গালুরুর হয়ে এক সিরাজ (৪ ওভারে ৩০ রান) ছাড়া সব বোলারই দিয়েছেন ওভারপ্রতি ১০-এর অধিক রান। পেসার বিজয়কুমার বিশাক ৪ ওভারে দেন সর্বোচ্চ ৬২ রান। এছাড়া তাদের ছয় বোলারের সবাই একটি করে উইকেট পেয়েছেন।
রান তাড়ায় চেন্নাইকে চোখ রাঙানিই দিয়েছেন বেঙ্গালুরুর ব্যাটাররা। তবে এতে চেন্নাইয়ের অবদান কম নয়। কোহলি, প্লেসি ও দীনেশ কার্তিক তিনজনের ক্যাচই মিস করেছেন দলটির ফিল্ডাররা। সেই ফলও তারা পেয়েছে। ইনিংসের প্রথম ওভারেই বিরাট কোহলির আকাশে তোলা ক্যাচ ছাড়েন চেন্নাইয়ের মহেশ থিকসেনা। কোহলি ৬ রানের বেশি করতে না পারায় হয়তো ওই ক্যাচ নিয়ে আক্ষেপ থাকবে না। সেই লঙ্কান স্পিনারই পরে আবার প্লেসির ক্যাচ ছাড়েন।
দুটি দুর্দান্ত ইনিংসে ভর করে চেন্নাইয়ের দুইশোর্ধ্ব সংগ্রহকে তাড়া করেছে বেঙ্গালুরু। ৪ ছক্কা ও ৫ চারে ভর করে ডু প্লেসির ৬২ এবং পাঁচে নামা গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের ৩৬ বলে ৭৬ রানের ‘টর্নেডো’—এ দুটি ইনিংসে ভর করেই পাল্টা লড়াই করেছে বেঙ্গালুরু। ৮ ছক্কা ও ৩ চারে ইনিংসটি সাজান ম্যাক্সওয়েল।
ডু প্লেসি ৫২ রানে অপরাজিত থাকতে তিনি দ্বিতীয় জীবন পান। ১৪তম ওভারে ডু প্লেসি (৩৩ বলে ৬২) আউট হওয়ার পর ৩৬ বলে ৬৮ রান দরকার ছিল বেঙ্গালুরুর। হাতে ছিল ৬ উইকেট। এখান থেকে ম্যাচ জেতা এমন কঠিন কিছু ছিল না। ১৭তম ওভারে রুতুরাজ গায়কোয়াড় দীনেশ কার্তিকের ক্যাচ ফেলার পর পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে উঠেছিল চেন্নাইয়ের জন্য। কিন্তু ওই ওভারেই কার্তিককে (১৪ বলে ২৮) তুলে নিয়ে বেঙ্গালুরুর জয়ের সমীকরণ ১৮ বলে ৩৫ রানে নামিয়ে আনেন চেন্নাইয়ের বোলার তুষার দেশপান্ডে। এখান থেকেও ম্যাচটা জেতা একদম কঠিন ছিল না বেঙ্গালুরুর জন্য।
কিন্তু পরের ওভারে লঙ্কান পেসার মাথিশা পাথিয়ারানা মাত্র ৪ রানে ১ উইকেট নেন। ১৯তম ওভারে দেশপান্ডে এসে ১২ রানে নেন ১ উইকেট। ব্যস, এই দুই ওভারেই ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ার খুব কাছাকাছি চলে যায় বেঙ্গালুরু। শেষ ওভারে জয়ের জন্য ১৯ রানের সমীকরণ মেলাতে পারেনি চেন্নাইয়ের লোয়ার অর্ডাররা। শেষ ওভারে তারা মাত্র ১০ রান তুলতে পেরেছে। ৮ উইকেটে ২১৮ রানে থেমেছে বেঙ্গালুরুর ইনিংস।
এএইচএস