একে অপরকে এড়িয়ে গেলেন গাঙ্গুলি-কোহলি!
দুজনই ভারতীয় ক্রিকেটের অনন্য সম্পদ। অথচ কথিত আছে তাদের কেউ কারও ছায়া মাড়ান না, সামনাসামনি দেখায়ও করেন না চোখাচোখি। মূলত এই শীতল সম্পর্কের সূত্রপাতটা হয়েছে বিরাট কোহলি জাতীয় দলের অধিনায়ক থাকাকালে। একই সময় দেশটির ক্রিকেটীয় মহারাজা সৌরভ গাঙ্গুলি ছিলেন বোর্ড (বিসিসিআই) প্রধান। দুজনের দ্বন্দ্বের জেরে সেই সময় ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের নেতৃত্ব থেকে কোহলিকে সরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। যৌথ সম্পর্কের সেই শীতলতা আবারও নজরে পড়েছে দর্শকদের।
ভারতীয় ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট আইপিএলের ১৬তম আসর চলছে। চলতি আসরে সবচেয়ে নিচের সারির দল দিল্লি ক্যাপিটালস। এখন পর্যন্ত অনুষ্ঠিত পাঁচটি ম্যাচে মুস্তাফিজুর রহমানদের দলটি সবকটিতেই হেরেছে। অথচ এই দলের ডাগআউট সব তারকা-মহাতারকাতেই ভরপুর। সৌরভ গাঙ্গুলি ছাড়াও দিল্লিতে আছেন রিকি পন্টিং এবং শেন ওয়াটসনের মতো সাবেকরা।
বিজ্ঞাপন
অন্যদিকে চার ম্যাচে দুই জয়ে রয়েল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু আছে টেবিলের সপ্তম অবস্থানে। টুর্নামেন্টটির শুরু থেকেই দলটির হয়ে খেলছেন বিরাট কোহলি। এই মাস্টার ব্যাটার চার ম্যাচের তিনটিতেই হাফসেঞ্চুরি করেছেন। যদিও চলতি আসরে তিনি খেলছেন প্রোটিয়া ব্যাটার ফাফ ডু প্লেসির নেতৃত্বে।
— R e t i r e d (@Sense_detected_) April 15, 2023
শনিবার (১৫ এপ্রিল) সৌরভ গাঙ্গুলির দিল্লিকে ২৩ রানে হারায় কোহলিদের বেঙ্গালুরু। ম্যাচজুড়ে কোহলি ও গাঙ্গুলির মধ্যকার বিরূপ সম্পর্কের উষ্ণতা বারবারই দেখা মিলেছে। যার ধারাবাহিকতায় ম্যাচ শেষে দেখা যায়, দু’দলের খেলোয়াড় ও কোচিং প্যানেলের সদস্যরা পরস্পরের সঙ্গে সৌজন্য হাত মেলাচ্ছেন। কিন্তু যখন কোহলি ও গাঙ্গুলি হাত মেলানোর সময় আসে, একে অপরকে এড়িয়ে যান। পরবর্তীতে সে সময়কার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
ওই ভিডিওতে দেখা যায়, ফাফ ডু প্লেসির পেছনেই ছিলেন কোহলি। গাঙ্গুলি প্লেসির সঙ্গে যখন হাত মেলাচ্ছেন, সেই সময় কোহলি গাঙ্গুলির সামনে থাকা পন্টিংয়ের সঙ্গে কথা বলছিলেন। এরপর গাঙ্গুলি কোহলিকে টপকে তার পেছনে থাকা অন্যদের সঙ্গে হাত মেলাতে থাকেন। গাঙ্গুলি-কোহলি কেউই হাত মেলানোর চেষ্টাও করেননি। যদিও ব্যাপারটি ইচ্ছাকৃত নাকি অনিচ্ছাকৃত সেটা স্পষ্ট নয়!
— CricTracker (@Cricketracker) April 15, 2023
এদিন বেঙ্গালুরুর করা ১৭৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দিল্লির ইনিংস থামে ১৫১ রানে। প্রথমে ব্যাট করা বেঙ্গালুরুর হয়ে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ কোহলি ৫০ রান করেন। অন্য ব্যাটাররা থিতু হতে না পারলেও কোহলিই মূলত গাঙ্গুলির দলের সামনে বড় লক্ষ্য দাঁড় করাতে ভূমিকা রাখেন। এরপর ফিফটি পূর্ণ করার পর দেখা যায় আগ্রাসী কোহলিকে। তাকে ডাগআউটের দিকে তাকিয়ে বুনো উল্লাস করতে দেখা যায়।
প্রসঙ্গত, গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগমুহূর্তে ওই ফরম্যাটের অধিনায়কত্ব ছাড়েন কোহলি। তবে তিনি ওয়ানডে ফরম্যাটের নেতৃত্বভার ধরে রাখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তার সেই ফরম্যাটের দায়িত্বও কেড়ে নেয় সৌরভ গাঙ্গুলির বিসিসিআই। যার ব্যাখ্যা হিসেবে গাঙ্গুলি বলেছিলেন, কোহলিকে নিষেধ করা হয়েছিল টি-টোয়েন্টি অধিনায়কত্ব ছাড়তে। কিন্তু তিনি শোনেননি। পরবর্তীতে নির্বাচকদের মনে হয়েছে, সাদা বলের ক্রিকেটে দু’জন অধিনায়ককে নিয়ে চলা সম্ভব নয়।
এরপর কোহলি গাঙ্গুলিকে ‘মিথ্যেবাদী’ আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘বোর্ড একবারও আমাকে টি-টোয়েন্টি অধিনায়কত্ব ছাড়তে নিষেধ করেনি। শুধু তাই নয়, আমার ওয়ানডে অধিনায়কত্ব যে যাচ্ছে, সেটাও জানানো হয় দল নির্বাচনের দিন মাত্র ঘণ্টা দেড়েক আগে।’
এএইচএস