কিউইদের ৯৪ রানে গুঁড়িয়ে বাবরদের বড় জয়
দলের প্রধান কয়েকজন খেলোয়াড় ছাড়াই পাকিস্তানে টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডে সিরিজ খেলতে গেছে নিউজিল্যান্ড। টি-টোয়েন্টি দিয়ে শুরু করা সিরিজের প্রথম ম্যাচে তুলনামূলক খর্বশক্তির সফরকারী দল কোনো পাত্তাই পায়নি। হারিস রউফ ও শাহিন আফ্রিদিদের বোলিং তোপে তারা মাত্র ৯৪ রানেই গুঁড়িয়ে গেছে। এর আগে ব্যাটে ঝড় তুলেছিলেন পাকিস্তানের ফখর জামান ও সাইম আইয়ুবরা। লড়াই জমাতে ব্যর্থ কিউইরা ৮৮ রানের বড় ব্যবধানে হার দিয়ে সিরিজ শুরু করেছে।
এই ম্যাচ দিয়ে বিশ্রাম থেকে ফিরেছেন পাক অধিনায়ক বাবর আজম, মোহাম্মদ রিজওয়ান ও শাহিন আফ্রিদিরা। এর আগে আফগানদের বিপক্ষের সিরিজে তাদের ছাড়াই পাকিস্তান মাঠে নেমেছিল। কিন্তু শাদাব খানের নেতৃত্বাধীন দলটি ২-১ ব্যবধানে সেই সিরিজ হেরে যায়। তবে মাঠে ফেরার শুরুটা ভালো হয়নি ওপেনার বাবর-রিজওয়ানের।
বিজ্ঞাপন
শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নামে স্বাগতিকরা। যদিও শুরুটা ভালো হয়নি তাদের। পাওয়ার প্লেতেই আউট হন টি–টোয়েন্টির উদ্বোধনী জুটিতে রেকর্ডের সমার্থক হয়ে ওঠা বাবর (৯) ও রিজওয়ান (৮)। দুজনকেই ফেরান অ্যাডাম মিল্নে। এরপর ফখর ও সাইমের জুটিতে আসে ৭৯ রান। যা স্বাগতিক পাকিস্তানকে বড় রানের পুঁজি এনে দিয়েছে।
চার–ছক্কার ফুলঝুরি ছড়িয়ে দুজনই করেন সমান ৪৭ রান। এক সময় মনে হচ্ছিল, অনায়াসে ২০০ পার করে ফেলবে পাকিস্তান। কিন্তু ১২তম ওভারে দলীয় ১০৯ রানে সাইমের রানআউটে জুটি ভাঙলে মড়ক লাগে তাদের ইনিংসে। এ সময় ম্যাট হেনরি ও ইশ সোধির দুর্দান্ত বোলিংয়ে ২২ রানের ব্যবধানে ৪ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। শেষ ৪ উইকেট হারায় ২৩ রানের ব্যবধানে। ৩২ রানে ৩ উইকেট নিয়ে নিউজিল্যান্ডের সেরা বোলার হেনরি। দুটি করে উইকেট নেন মিল্নে ও বেন লিস্টার। নির্ধারিত ওভার শেষ হওয়ার ১ বল থাকতেই অলআউট হওয়া পাকিস্তানের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৮২ রান।
এদিন ৫ মাস পর পাকিস্তানের জার্সিতে খেলতে নেমেছিলেন শাহিন আফ্রিদি। এর আগে ২০২২ সালের ১৩ নভেম্বর টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে তিনি দেশের হয়ে শেষবার মাঠে নেমেছিলেন। সেদিন হাঁটুতে চোট পেয়ে ছিটকে যান ২৩ বছর বয়সী তারকা ফাস্ট বোলার। এরপর মাঠে ফেরেন পিএসএলে। তার নেতৃত্বে ঘরের মাঠেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে লাহোর কালান্দার্স।
লাহোর কালান্দার্সের হয়ে শিরোপা জেতা তিন পেসার হারিস, জামান খান ও আফ্রিদির তোপে তিন অঙ্কও ছুঁতে পারেনি কিউইরা। পাকিস্তানের বোলারদের সামনে কিউই ব্যাটারদের কেউ দাঁড়াতেই পারেননি। এক মার্ক চ্যাপম্যান ছাড়া সবাই যেন আসা–যাওয়ার মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন। চ্যাপমান ২৭ বলে করেন ৩৪ রান। আর কেউই বলার মতো রান করতে পারেননি। অধিনায়ক টম ল্যাথামও ফিরেছেন ২৪ বলে ২০ রান করে। পাওয়ার প্লেতে ৩ উইকেট হারানোর পর অধিনায়ক ল্যাথাম বিপর্যয় কাটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তার কচ্ছপ গতির ইনিংস টি–টোয়েন্টির দাবি মেটাতে পারেনি। সর্বশেষ ১৫.৩ ওভারে ৯৪ অলআউট হয়ে যায় কিউইরা।
স্বাগতিকদের হয়ে সর্বোচ্চ ৪টি উইকেট পেয়েছেন হারিস রউফ। এছাড়া ইমাদ ওয়াসিম ২টি এবং আফ্রিদি, জামান, ফাহিম আশরাফ ও শাদাব নিয়েছেন একটি করে উইকেট। এদিন সাত বোলারকে কাজে লাগিয়েছেন বাবর। ইফতিখার আহমেদ ছাড়া বাকি সবাই উইকেটের দেখা পেয়েছেন। দলে না রাখা হলে ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেওয়া ইমাদ শেষ দিকে নেমে ১৬ রানের পাশাপাশি দুটি উইকেটও নেন।
এই ম্যাচ জয়ে পাঁচ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল বাবরের দল। আইপিএলে দল পাওয়া সব ক্রিকেটারকেই পাকিস্তান সফর থেকে ছুটি দিয়েছিল নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড। বলতে গেলে তারা দ্বিতীয় সারির দল পাঠিয়েছে। ফলে এক রকম অনুমিতই ছিল পাকিস্তানের জয়টা।
এএইচএস