ওয়ানডে ম্যাচকে ৪ ভাগ করার প্রস্তাব টেন্ডুলকারের
ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটেই রানের ফোয়ারা ছোটাতেন ভারতের কিংবদন্তী মাস্টার ব্যাটার শচীন টেন্ডুলকার। তিনি ওয়ানডে ফরম্যাটের ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ৪৬৩টি ম্যাচ খেলার কীর্তি গড়েছিলেন। শুধু তাই নয়, একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে ৪৪.৮৩ গড়ে সর্বোচ্চ ১৮ হাজার ৪২৬ করেন এই ক্লাসিক ব্যাটার। বোলারদের মূর্তিমান এই আতঙ্ক ফরম্যাটটিতে সর্বোচ্চ হাঁফ-সেঞ্চুরি ও সেঞ্চুরির রেকর্ডও দখলে নিয়েছেন। কিন্তু তবুও ওডিআই ক্রিকেটে বেশ বিরক্ত শচীন। তার মতে, এই ফরম্যাটটিকে ৪ ভাগে ভাগ করা হোক।
একটি ওয়েবসাইটের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে নিজের এই অভিমত জানিয়েছেন শচীন। সেখানে ওডিআইয়ের ফরম্যাটে তিনি ভিন্নতা আনার প্রস্তাব দেন। সাবেক এই ভারতীয় বলছেন, ‘ওয়ানডে ক্রিকেটে ২৫ ওভারের ইনিংস চালু করা উচিত। ম্যাচটাকে চার ভাগে ভাগ করে দেওয়া উচিত। ঠিক যেভাবে টেস্ট ক্রিকেট হয়। টেস্ট ক্রিকেটে ২০টি উইকেট তুলতে হয়। এখানে ১০টি উইকেট তুললেই চলবে। যদি কেউ প্রথম ইনিংসে আউট হয়ে যায়, সে আর দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে পারবে না। দুটো ইনিংস মিলিয়ে ১০টি উইকেট নিলেই চলবে।’
বিজ্ঞাপন
তবে শচীন প্রস্তাব দিয়েই কেবল থেমে যাননি। কিভাবে ওয়ানডে ফরম্যাটের প্রতি বিরক্তি এলো তার পেছনের কারণও তিনি ব্যাখ্যা করেছেন। শ্রীলঙ্কান এক প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার কথা উল্লেখ করে শচীন বলেন, ‘সেখানে (শ্রীলঙ্কা) ১১৮ ওভার খেলা হওয়ার পরও কোনো ফলাফল হয়নি। প্রথম দিন শ্রীলঙ্কা ব্যাট করার পর আমরা ১০ ওভার ব্যাট করি। ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেস্তে যায়। দ্বিতীয় দিনেও ম্যাচ বাতিল হয়ে যায় বৃষ্টিতে। ১১৮ ওভার খেলার পরেও কোনও ফলাফল পাওয়া যায়নি। অথচ নতুন ফরম্যাটে যদি দু’টি দল অন্তত ২৫ ওভার করে ব্যাট করার সুযোগ পায়, তাহলে একটা সামঞ্জস্য থাকবে। এখন খেলাটা খুব প্রত্যাশিত হয়ে যাচ্ছে। ১৫ থেকে ৪০ ওভারের মধ্যে দারুণ কিছু ঘটছে না। কেউ নজর কাড়তে পারছে না। বিরক্তিকর লাগছে।’
এর আগে একই ফরম্যাটে বিরক্তি দেখিয়েছিলেন সাবেক ভারতীয় কোচ রবি শাস্ত্রী। তখন তিনি বলেছিলেন ওয়ানডেতে ওভার সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া উচিত। পাশাপাশি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা ও ম্যাচপ্রতি আয় নিয়েও বেশ উৎসাহের কথা জানান শাস্ত্রী। তবে টেস্টেও গুরুত্ব দেওয়া উচিত বলে একইসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন।
ওডিআই ফরম্যাটকে কিছুটা মডিফাই করা প্রসঙ্গে সাবেক এই ভারতীয় ক্রিকেটার বলেন, ‘এক দিনের ক্রিকেটকে প্রাসঙ্গিক রাখতে হলে ওভার সংখ্যা কমিয়ে ৪০ করতে হবে। যখন আমরা প্রথম এক দিনের বিশ্বকাপ জিতেছিলাম, তখন ৬০ ওভারের খেলা হত। মানুষের ধৈর্য এবং সময় কমার কারণে সেটা কমিয়ে ৫০ ওভার করা হয়েছিল। আমার মনে হয় বর্তমানে আরও ১০ ওভার কমানোর সময় এসে গেছে।’
এদিকে, স্পিনারদের প্রসঙ্গ টেনে এনে শচীন বলছেন, ‘কয়েক জন স্পিনারের সঙ্গে কথা বলেছি। বৃত্তের মধ্যে পাঁচ জন ফিল্ডার থাকার সময় ওদের মানসিকতা কেমন থাকে সেটা জানার চেষ্টা করছিলাম। ওরা বলল, সেই সময় লাইন পরিবর্তন করতে পারে না। তাতে বিরাট মূল্য চোকাতে হচ্ছে। অপেক্ষা করতে হয় ব্যাটারদের ভুলের জন্য।’
এএইচএস