ছবি: সংগৃহীত

গত কয়েক বছরে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট যেন বাংলাদেশ দলের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিছুতেই যেন ২০ ওভারের ক্রিকেট হজম করতে পারছিলেন না সাকিব-মুস্তাফিজরা। দলের টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে অধিনায়ক, মাস কয়েকের ব্যবধানে পরিবর্তন এসেছে সব জায়গায়। শুধুই অপরিবর্তিত ছিল পারফরম্যান্সের চাকা! এবার সেটিও ঘুরেছে। তারুণ্যের ছোঁয়ায় বদলে যাওয়া বাংলাদেশ ক্রিকেটে একটু দেরিতে হলেও এবার বসন্ত এসেছে!

নানা অলিগলি পেরিয়ে টি-টোয়েন্টিতে আবারো নতুন শুরুর দিকে তাকিয়ে ছিল বাংলাদেশ। এসেছেন নতুন কোচ, বিপিএলে ভালো করে সুযোগ পেয়েছেন একঝাঁক নতুন মুখ। সবমিলিয়ে তারুণ্য নির্ভর একটা দল নিয়েই ঘরের মাঠে 'ইংলিশ পরীক্ষায়' বসেছিল টাইগাররা।

এক সাকিব ছাড়া এই দলের বেশিরভাগ ক্রিকেটারই তরুণদের কাতারেই পড়ে। যদিও মেহেদি মিরাজ কিংবা মুস্তাফিজুর রহমানরাও লম্বা সময় ধরে ক্রিকেট খেলছেন। সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ পর এই দলের পারফরম্যান্স কাটা-ছেড়া করলে দেখা যাবে বদলে যাওয়ারই বার্তা দিচ্ছে তরুণরা।

টি-টোয়েন্টিতে এমন বদলে যাওয়ার গল্পটা একটা জায়গায় ওয়ানডের সঙ্গে মিলে গেছে। ২০১৫ সালের ৯ মার্চ বাংলাদেশের বিপক্ষে হেরে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিয়েছিল ইংল্যান্ড। এই হার ইংলিশদের ক্রিকেটে নিশ্চই এক কালো অধ্যায়। বিপরীতে বাংলাদেশের ক্রিকেট আকাশে এটা ছিল নতুনের সূর্যোদয়। কারণ এরপর থেকেই ওয়ানডেতে বদলে যায় বাংলাদেশ দলের চেহারা।

সেই শুরুটা হয়েছিল পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করে ঘরের মাঠে। এরপর ভারত এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও সিরিজ জেতে বাংলাদেশ। সেই সময়ের অধিনায়ক মাশরাফির নেতৃত্বে তারণ্য নির্ভর স্কোয়াড গঠনে নজর দেয় টাইগাররা। সময়ের ব্যবধানে তার সুফলও পাচ্ছে বাংলাদেশ।

২০১৫ থেকে ২০২৩, আট বছর পর আরও একটি ৯ মার্চ। এদিন সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতেব চট্টগ্রামে ইংল্যান্ডকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। মাস, দিন আর প্রতিপক্ষ হয়তোবা কাকতালীয় ভাবে মিলে গেছে। কিন্তু দুইটা ম্যাচ দুই ফরম্যাটের, এখানেতো আর মিল নেই! তবে আপনি চাইলে ব্যাপারটা এভাবে দেখতে পারেন, বিশ্বকাপের সেই ম্যাচের পর বাংলাদেশের ওয়ানডে ক্রিকেটে বসন্ত এসেছিল। এবার সেই টি-টোয়েন্টি জয়ের পরও কিন্তু একই রঙ লেগেছে লাল-সবুজের জার্সিতে।

বাংলাদেশের ক্রিকেটে যে বসন্তের ছোয়া লেগেছে তা মাশরাফিও টের পেয়েছেন। সাবেক এই অধিনায়ক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, 'ভালো উইকেটে এই দলটারও কঠিন সময় আসবে, কিন্তু সবার ধৈর্য রাখা জরুরী। তরুণদেরকে এই ফরম্যাটে খেলার সুযোগ করে দিতে হবে এবং এর মধ্য দিয়েই আস্তে আস্তে দারুণ একটা দল হবে ইনশাআল্লাহ। অনেক দেরিতে হলেও এই পরিবর্তনটা টি-টোয়েন্টিতে খুব প্রয়োজন ছিলো। যদিও এটা একান্তই আমার মতামত।' 

চলমান সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচেই সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তরুণরা। প্রথম ম্যাচে নাজমুল হোসেন শান্ত ফিফটিতে ভালো ভিত পেয়েছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচেও দুর্দান্ত ছিলেন এই ব্যাটার। বোলিং বিভাগেও মিরাজ কিংবা হাসান মাহমুদের মতো ক্রিকেটাররা নিজেদের সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েছেন।

এই সিরিজে তরুণদের পারফরম্যান্সের প্রশংসা করতে গিয়ে মাশরাফি লিখেছেন, 'শান্ত ইউ বিউটি ম্যান, মিরাজ অসাধারণ, পুরো বোলিং ইউনিট দারুণ। অভিনন্দন বাংলাদেশ।' 

এইচজেএস