নারীদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ৬ষ্ঠ বারের মতো শিরোপা জয়ের রেকর্ড গড়েছে অস্ট্রেলিয়া। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠা প্রোটিয়া নারীদের তারা হারিয়েছে ১৯ রানে।

এর আগে ক্যাপটাউনের নিউল্যান্ডসে শিরোপা জয়ে লড়াইয়ে নামে দুই দল। টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন অজি অধিনায়ক মেগ ল্যানিং।

ওপেনার বেথ মুনি ফাইনালের মতো বড় মঞ্চকে বেশ ঝমকালোভাবেই রাঙিয়েছেন। তার অপরাজিত ৭৪ রানের ইনিংসে ১৫৬ রানের লড়াকু টার্গেট দাঁড় করায় অস্ট্রেলিয়া।

এদিন ম্যাচের শুরু থেকেই প্রোটিয়া বোলারদের ওপর চড়াও হন দুই অজি ওপেনার। উইকেটরক্ষক ব্যাটার অ্যালিসা হিলিকে সঙ্গে নিয়ে মুনি দারুণ শুরু এনে দেন। পাঁচ ওভারে যখন তাদের সংগ্রহ ৩৬ রান, তখনই প্রথম আঘাত আনেন আফ্রিকার মিডিয়াম পেসার ম্যারিজেন ক্যাপ। ১৮ রান করে আউট হওয়ার আগে হিলি ডি ক্লার্ককে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন।

এরপর মুনিকে সঙ্গ দিতে ক্রিজে আসেন ব্যাটিং অলরাউন্ডার অ্যাশলে গার্ডনার। দুজনের জুটিতে স্কোরবোর্ডে ৪৬ রান যোগ হয়। দলীয় ৮২ রানে গার্ডনারকে বাঁ-হাতি স্পিনে কাবু করেন ক্লো ট্রায়ন। ২১ বলে ২৯ রান করার পর তিনি প্রোটিয়া অধিনায়ক সুনে লুসের তালুবন্দি হন।

এরপর নিয়মিত বিরতিতে আরও দুই উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। ওই সময়ও একপাশ আগলে রাখেন মুনি। শেষদিকে আর কোনো অজি ব্যাটারই উল্লেখযোগ্য রান করতে পারেননি। এক্ষেত্রে ৫৩ বলে অপরাজিত ৭৪ রান করে পুরো আলো কেড়ে নেন মুনি। নির্ধারিত ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে অস্ট্রেলিয়া ১৫৬ রান সংগ্রহ করে।

প্রোটিয়াদের হয়ে শাবনিম ইসমায়েল ও ক্যাপ ২টি এবং মালাবা ও ট্রায়ন ১টি করে উইকেট নেন।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে মন্থর গতিতে ব্যাট করতে থাকে দক্ষিণ আফ্রিকা। দলীয় ১৭ রানে প্রথম উইকেট হারিয়ে বিপদ আরও বাড়িয়ে তোলেন ওপেনার তাজমিন ব্রিটস। মুনির মতো প্রোটিয়া ওপেনার লরা ভলভার্টও নিজের কাঁধে দায়িত্ব তুলে নেন। পুরো টুর্নামেন্টেই দুর্দান্ত পারফর্ম করে আসছেন ভলভার্ট।

রান তাড়ায় প্রোটিয়াদের কোনো জুটি বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে পারেনি৷ রান ব্যবধান বাড়তে থাকায় উল্টো চাপ বাড়তে থাকে তাদের। একপাশ ভলভার্ট আগলে রাখলেও অন্যপাশে একের এক ব্যাটার নামতে থাকেন। প্রোটিয়া অধিনায়ক সুনে লুসও বিশ্বজয়ের মঞ্চে ব্যর্থ। শেষদিকে কেবল ট্রায়ন ভলভার্টকে কিছুক্ষণ সঙ্গ দেন। 

তবে পরপর উইকেটের পতনে রানরেট বাড়তে থাকে। সর্বশেষ দুই ওভারে প্রোটিয়াদের সামনে ৩০ ঊর্ধ্ব রান দরকার ছিল। কিন্তু নির্ধারিত ওভার শেষে ৬ উইকেটে ১৩৭ রান তুলতে সক্ষম হয় তারা। ভলভার্ট ৪৮ বলে ৬১ রান করেন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৫ রান করেন ট্রায়ন।

অজিদের হয়ে মেগান, গার্ডনার, ব্রাউন ও জনাসেন একটি করে উইকেট নেন। প্রোটিয়াদের বাকি দুটি উইকেট কাটা পড়ে রান আউটের ফাঁদে।

২০০৯ সালে প্রথম নারী টি-২০ বিশ্বকাপের আসর বসে। শিরোপা জয়ের মঞ্চে ধরাছোঁয়ার বাইরে অজি নারীরা। অস্ট্রেলিয়ার ছেলেদের মতো নারীরাও ক্রিকেটের বিশ্বমঞ্চে রাজত্ব করে চলেছে। এ ফরম্যাটে এখন পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হওয়া সাতটি আসরের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার নারীরা সর্বোচ্চ পাঁচবার বিশ্বকাপ জিতেছে৷ ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের নারীরা শিরোপা জিতেছে একবার করে।

এএইচএস