‘একটা দল হুট করে চাইলেই চ্যাম্পিয়ন হতে পারে না। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে থেকে মনেপ্রাণে চায় বলেই কুমিল্লা এতবার চ্যাম্পিয়ন হতে পেরেছে। তারা মূলত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্যই দল গড়ে।’

ঢাকা পোস্টকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দেশের ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে বারবার কুমিল্লার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পেছনের প্রেক্ষাপট এভাবেই তুলে ধরেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। 

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৪ বার শিরোপা ঘরে তুলেছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। একইসঙ্গে দলের অধিনায়ক হিসেবেও চ্যাম্পিয়ন হওয়ার হ্যাটট্রিক গড়েছেন ইমরুল কায়েস। যদিও সর্বোচ্চ ৪ বার অধিনায়ক হিসেবে মাশরাফি বিন মর্তুজা আসরসেরার ট্রফি জিতেছেন। কিন্তু এক দলের হয়েই বিপিএলে হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন হওয়ার রেকর্ড একমাত্র ইমরুলের দখলে। 

যদিও টুর্নামেন্টের শুরুর ম্যাচগুলো মোটেও সুখকর ছিল না। তবে শেষ পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন হয়েই টুর্নামেন্ট শেষ করেছে কুমিল্লা। টানা তিন ম্যাচ হারের পর ফিরে আসা, স্পিনার তানভীর ইসলামের অনবদ্য পারফরম্যান্স, কুমিল্লার ফাইনাল না হারার রহস্যসহ আরো বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ঢাকা পোস্টের সঙ্গে কথা বলেছেন শিরোপাজয়ী অধিনায়ক ইমরুল কায়েস।

তৃতীয়বারের মতো বিপিএল চ্যাম্পিয়ন, কেমন লাগছে?

ইমরুল কায়েস : খুব ভালো লাগছে। টুর্নামেন্টজুড়ে ইনজয় করার চেষ্টা করেছি। আলহামদুলিল্লাহ।

তিন ম্যাচ হারের পর নিশ্চয়ই চাপ ছিল, ফিরে আসার গল্পটা কেমন ছিল?

ইমরুল কায়েস : আসলে প্রথমদিকে আমাদের কম্বিনেশন ভালো ছিল না। যার জন্য আমরা টানা তিনটা ম্যাচ হেরেছিলাম। পরে কম্বিনেশন ঠিক করে ফেলেছি তারপর থেকে তো দেখলেনই, আলহামদুলিল্লাহ ফল ভালো হতে শুরু করেছে। 

তিন ম্যাচ যখন হেরেছিলেন তখন চাপ অনুভব করছিলেন কি না?

ইমরুল কায়েস : এমন একটা চ্যাম্পিয়ন ফ্র্যাঞ্চাইজি দলে খেলতে গেলে চাপ তো থাকবেই। অবশ্যই একটা প্রেশার ছিল। 

ফাইনালে কুমিল্লা মানেই চ্যাম্পিয়ন, এর কি কোনো রহস্য আছে?

ইমরুল কায়েস : ফাইনালে আমরা হারিনি, তবে এর আগের সব গুলাতেই ক্লোজ ম্যাচ জিতেছি। হয়তো আমার ভাগ্যের কারণে এমনটা হয়েছে। কুমিল্লা সব সময়ই মনে প্রাণে চ্যাম্পিয়ন হতে চায়, সে লক্ষ্যেই তারা দল গড়ে। একটা দল হুট করে চাইলেই চ্যাম্পিয়ন হতে পারে না। কুমিল্লার আগে থেকেই পরিকল্পনা থাকে বলে তারা সফল হয়।

দল গঠন করার সময় মালিকপক্ষ কি কোচ বা আপনার সাথে আলোচনা করে নেয়?

ইমরুল কায়েস : মোটামুটি। একটা আলোচনা তো থাকেই। 

শিরোপা জয়ের মঞ্চে ছিলেন তিন বিদেশি ক্রিকেটার

নারিন, রাসেল, মঈন আলি এদের মত বিশ্বমানের ক্রিকেটারদের সামলানো কঠিন কিছু কি?

ইমরুল কায়েস : কোনো কিছুই কঠিন নয়। তারা সবাই তো প্রফেশনাল ক্রিকেটার। তারা জানে কিভাবে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট খেলতে হয়। কোন কোন অবস্থায় কিভাবে বল করতে হয়। তো ওরা সেই সম্মানটা দিতে জানে অধিনায়ক ও কোচকে।  সেজন্যই মাঠে তাদের সামলাতে কোনো সমস্যা হয় না।

তানভীর ইসলাম

তানভীর ইসলামের পারফরম্যান্সকে কিভাবে দেখবেন?

ইমরুল কায়েস : তানভীর তো সবসময় ভালো করছে, ঘরোয়া বলেন কিংবা বিপিএলে। যেখানে খেলে সেখানেই পারফর্ম করে সে। সে বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য দারুণ সম্ভাবনাময়।

আসন্ন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে তানভীরের সুযোগ দেখছেন কি না?

ইমরুল কায়েস : দেখেন এটা তো আমি বলতে পারব না। এটা নির্বাচকদের ব্যাপার। যারা নির্বাচক আছেন তারাই এর সিদ্ধান্ত নিবেন, আমার হাতে কিছু নেই। 

মোস্তাফিজুর রহমান

মোস্তাফিজের কাছ থেকে এই আসরে কুমিল্লা সর্বোচ্চ পারফরম্যান্স নিতে পেরেছে?

ইমরুল কায়েস : মোস্তাফিজ আলহামদুলিল্লাহ ঠিক আছে। আমার মনে হয় সে অবশ্যই সবটুকুই দিতে পেরেছে। যখন মাঠে ঢুকে তখন কেউ ফিফটি পার্সেন্ট দেয় না সবাই হান্ড্রেড পার্সেন্টই দেয় বা দেওয়ার চেষ্টা করে।

প্রসঙ্গত, এবারের বিপিএলে ১৩ ইনিংস ব্যাট করে ১১৯ স্ট্রাইকরেটে ২১৮ রান করেছেন অধিনায়ক ইমরুল কায়েস।

এসএইচ/এএইচএস