দেখতে দেখতে শেষ প্রান্তে বিপিএল। দুই দিনের বিরতি শেষে মঙ্গলবার নিয়ম রক্ষার ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল প্লে-অফের দৌড় থেকে আগেই ছিটকে যাওয়া চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স এবং ঢাকা ডমিনেটরস। শেষটা চট্টগ্রাম রাঙাতে পারলেও হার দিয়ে আসর শেষ করেছে নাসিরের ঢাকা।

ম্যাচটিতে ভিন্ন এক উদ্যোগ গ্রহণ করে প্রশংসায় ভাসছে চট্টলার ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। এদিন ২০০ জন পথশিশুকে মাঠে বসে খেলা দেখার সুযোগ করে দিয়েছে তারা। এসব সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা ‘জুম বাংলাদেশ’নামের এক স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এসেছে বলে জানা গেছে।

মিরপুর স্টেডিয়ামের গড়িতে তখনও দুপুর বারোটা বাজেনি। খেলা দেখতে একে একে প্রবেশ করে পথশিশুরা। এরপর চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের সব খেলোয়াড়দের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। পরবর্তীতে গ্রুপ ছবি তোলার মাধ্যমে শেষ হয় এই পর্ব। জুম বাংলাদেশ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ শাহিন ঢাকা পোস্টের সঙ্গে এই উদ্যোগ সম্পর্কে বিস্তারিত কথা বলেছেন।

এসব শিশুদের নিয়ে সব মিলিয়ে ৬ টা ব্র্যাঞ্চ রয়েছে তাদের। শাহিন বলছিলেন, 'জুম বাংলাদেশে আসলে আমরা বিগত ৬ বছর ধরে কাজ করে চলেছি। সুবিধাবঞ্চিত এবং পথশিশুদের নিয়ে আমরা কাজ করে থাকি। এর মধ্যে শিক্ষা স্বাস্থ্য এবং ওদের বাসস্থান নিয়ে কাজ করে থাকি। আমাদের সব মিলিয়ে ৬ টা ব্র্যাঞ্চ রয়েছে। ঢাকার বাইরে রয়েছে চট্টগ্রাম, যশোর ও গাইবান্ধা। এর মধ্যে থেকেই আমরা সকল শিশুর পাশে রয়েছি। কেউ এখন নবম-দশম শ্রেণিতে পড়ছে।'

আখতার গ্রুপের সঙ্গে পরিচয় প্রসঙ্গে শাহিন বলেন, 'আখতার গ্রুপের সঙ্গে আমাদের পরিচয় হয়েছিল আরও ৬ মাস আগে। উনারা আমাদের কর্মকান্ড দেখেছেন এবং স্কুলের যেসব একাডেমি রয়েছে সেগুলো জন্য বেঞ্চ দিয়েছিল তারা। এরপর চলতি বছরের জানুয়ারিতে আমরা বই উৎসব করেছিলাম তখন আখতার গ্রুপের এমডি রিফাতউজ্জামান এসেছিলেন। এরপর উনি তাদের বিপিএলের দল সম্পর্কে বলেন। তার ইচ্ছার কথা জানিয়েছিলেন যে বিপিএলে এখানকার বাচ্ছারা খেলা দেখবে। সেখান থেকেই মূলত আলোচনা শুরু এরপর আজকে আমরা আসলাম।'

এসব বাচ্চারা ঢাকার মধ্যে থেকে এসেছে জানিয়ে শাহিন বলেন, 'সবাই ঢাকার আশপাশের এলাকার। আমাদের অফিস সেগুনবাগিচায়। কেউ হাতিরঝিল থেকে এসেছে আবার কেউ কমলাপুর থেকে এসেছে। সেগুনবাগিচারও রয়েছে। সব মিলিয়ে এখানে তিন ব্র্যাঞ্চের বাচ্চারা রয়েছে। এসব বাচ্চাদের কাছে ক্রিকেট খেলা অনেক পছন্দের। এই বাচ্চারা সবসময় টিভি বা চায়ের দোকানে খেলা দেখে থাকে। কিন্তু স্টেডিয়ামে বসে যে খেলা দেখবে এটা তাদের কাছে স্বপ্নের মত ছিল। আজকে তারা সরাসরি খেলোয়াড়দেরও দেখতে পাচ্ছে। এতে করে আমি মনে করি তাদের স্বপ্নটা পূরণ হয়েছে।'

চট্টগ্রাম দল থেকে কি কি উপহার সামগ্রী পেলেন এমন প্রশ্নে শাহিন বলেন, 'সবমিলিয়ে এখানে বাচ্চা আছে ২০০ জন এবং ৫০ জন স্বেচ্ছাসেবক রয়েছেন। চট্টগ্রামের পক্ষ হতে দুপুরের খাবার টিকিট এবং জার্সি দিয়েছে বাচ্চাদের। যাতায়াতটা আমাদের নিজেদের। আমাদের ক্রিকেট নিয়ে পরিকল্পনা রয়েছে ভবিষ্যতে যে ৬ টা ব্র্যাঞ্চ আমাদের রয়েছে তাদের মধ্যে একটা ক্রিকেট টুর্নামেন্ট আয়োজন করার। এতে করে তারা খেলাধুলার প্রতি উৎসাহ পাবে। তবে আগামী বছর নতুন করে একটা গ্রুপ করতে চাই যারা অধিক মেধাবী তাদের নিয়ে। আমাদের আর্থিক সহায়তা দিয়ে থাকেন কিছু ব্যবসায়ী, ১৮তম বিসিএস ক্যাডার গ্রুপ এবং প্রবাসী কিছু ভাইয়েরা।'

এসএইচ/এফআই