এক শানাকাতেই নাস্তানাবুদ ভারত
ম্যাচের দুই ইনিংসের শেষ দুই ওভার যদি বাদ দেওয়া হয়, তাহলে ভারত আর শ্রীলঙ্কার অবস্থান থাকত সাম্যাবস্থায়। খেলাটা হতো টাই। সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে দুই ইনিংসের শেষ ওভারেই ম্যাচের পার্থক্যটা গড়ে দিলেন শ্রীলঙ্কান অধিনায়ক দাসুন শানাকা। নিজেদের মাটিতে এই শানাকার কাছেই মূলত হেরে বসেছে ভারত।
শ্রীলঙ্কার ইনিংসের শেষ ওভারে করেছিলেন ২০ রান। বোলার ছিলেন শিবম মাভি। ব্যাটার ছিলেন সেই শানাকা। তিন ছক্কায় ভারতের সামনে ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন ২০৭ রানের বিশাল লক্ষ্য।
বিজ্ঞাপন
ভারতীয় ইনিংসের শেষ ওভারে হার্দিক পান্ডিয়ার দল শ্রীলঙ্কার চেয়ে সেই ২০ রান দূরেই দাঁড়িয়ে ছিল। ব্যাট হাতে ছিলেন সেই শিবম মাভি, বল হাতে যিনি শানাকার তোপের মুখে পড়েছিলেন। সেই তিনি নিজের ব্যর্থতা ঝেড়ে ফেলার মোক্ষম সুযোগ পেয়েছিলেন কাল। শেষ ওভারের আগে ১২ বলে করে ফেলেছিলেন ২৫ রান, মঞ্চটা প্রস্তুত ছিল তার জন্য। ওপাশে ছিলেন ২৯ বলে ৬৩ করা অক্ষর প্যাটেল, যারা আগ্রাসে ব্যাটিংয়ের হাত থেকে আজ রক্ষা পাননি শ্রীলঙ্কার একজন বোলারও।
তখন বল করতে এলেন সেই শানাকা, শুরুর ইনিংসের শেষ ওভারে ২০ রান তোলা লঙ্কান অধিনায়ক সবশেষ বল হাতে তুলে নিয়েছিলেন সেই অক্টোবরে। সেই তিনিই ফেরালেন প্রতিশোধের নেশায় উন্মত্ত থাকা মাভিকে, সঙ্গে ফেরালেন আগ্রাসী অক্ষরকেও।
এর আগে শ্রীলঙ্কার ব্যাটিংয়ের সময় যখন মাঠে নেমেছিলেন তখন বাড়তি বাউন্সের সুবিধা নিয়ে আগুন ছড়াচ্ছিলেন উমরান মালিক। হ্যাটট্রিকের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন জম্বু কাশ্মীরের পেশার এবং স্ট্রাইকে ছিলেন শানাকা। প্রবল গতিতে ধেয়ে আসা ডেলিভারিটাকে উমরানের মাথার ওপর দিয়ে সীমানাছাড়া করে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, আজ দিনটা তারই। শেষ পর্যন্ত সে ইঙ্গিতটা সত্যই প্রমাণ করলেন তিনি।
ব্যাট হাতে রীতিমতো তাণ্ডব বইয়ে দিলেন, শ্রীলঙ্কার আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ইতিহাসের দ্রুততম ফিফটিও তুলে নেন তিনি। ২২ বলে অপরাজিত ৫৬ রান করলেন এবং প্রতিটি সঠিক বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন যে গত বছরের শ্রীলঙ্কার এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা কোন ফ্লুক ছিল না।
শ্রীলঙ্কা ভারতের মাটিতে সিরিজ জিতবে কিনা সেই জবাব পাওয়া যাবে ভবিষ্যতে। কিন্তু দাসুন শানাকার হাত ধরে টালমাটাল শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট যে ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রচেষ্টা করছে তাতে কোন সন্দেহ নেই।
এনইউ