ভারতকে ফাইনালে চেয়েছিল পাকিস্তানি সমর্থকরাও
রিচমন্ড স্ট্রিট ট্রেন স্টেশনে নামতেই চোখে পড়ল পাকিস্তানি দর্শকরে মিছিল। কারও হাতে জাতীয় পতাকা, কারও কাছে বাদ্যযন্ত্র আর জাতীয় দলের জার্সি তো সবারই গায়ে! আবহাওয়া বিশ্লেষকদের ভুল করে আপাতত বৃষ্টি নামেনি, তাতেই স্বস্তি সবার! মাঠের লড়াইয়ে যাই হোক, মাঠের বাইরে লড়াইটা কিন্তু একপেশেই হচ্ছে। বিখ্যাত মেলবোর্ন ক্রিকেট স্টেডিয়ামের প্রতিটি গেটের সামনেই চোখে পড়ল পাকিস্তানি সমর্থকদের আধিপত্য।
আজ রোববার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচটা যে ইংল্যান্ডের সঙ্গে সেটা অন্তত মাঠের বাইরে থেকে টের পাওয়ার উপায় নেই। পুরোটাতেই একটা স্লোগান-পাকিস্তান জিন্দাবাদ, দিল দিল পাকিস্তান! কিন্তু মাঠের বাইরে কিংবা গ্যালারিতে এমন একেপেশে লড়াটাইটা খোদ চায়নি পাকিস্তানিরাও!
বিজ্ঞাপন
এই ফাইনাল ম্যাচটা দেখবেন বলে সুদূর কানাডার টরেন্টো থেকে এসেছেন পাকিস্তানি তরুণ জাভেদ ইমতিয়াজ। যেমনটা বলছিলেন এই পড়ুয়া, ‘যখন ফাইনালের টিকিটটা কাটি, তখন কিন্তু মনে করেছিলাম ফাইনাল ম্যাচটা ভারতের সঙ্গে হবে। ভারত-পাকিস্তান ফাইনাল দেখতেই এসেছিলাম। ওদের সঙ্গে লড়াইটা তো হয়ই না। তাছাড়া এবার গ্রুপে পর্বে ভারতের সঙ্গে হেরেছি, সেই প্রতিশোধটা নিতে চেয়েছিলাম ফাইনালে! কিন্তু ওদের পেলাম না।’
পাশেই দাঁড়িয়েছিলেন অ্যাডিলেড থেকে দশ ঘণ্টার ভ্রমণ শেষে মেলবোর্নে আসা আরেক পাকিস্তানি যুবক ফাইয়াজ। হাসিমুখে ঢাকা পোস্টের সঙ্গে বলছিলেন, ‘ভারতকে হারিয়েই ট্রফিটা জিততে চেয়েছিলাম। কিন্তু ওরা তো ফাইনালেই আসতে পারল না। তবে বিশ্বকাপ ট্রফির তো আলাদা গুরুত্ব আছেই। ইংল্যান্ডকে হারিয়ে আশা করছি ছেলেরা আমাদের আজ আনন্দে ভাসাবে।’
বিখ্যাত মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড মানে এমসিজিতে মাঠে নামার আগে ৩০ বছর আগের স্মৃতি চাঙ্গা করে রাখছে পাকিস্তানকে। ১৯৯২ সালে বিশ্বকাপ ফাইনালে এই মাঠেই ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হয়েছিল পাকিস্তান।
যেখানে ইমরান খানের হাত ধরে প্রথমবারের মতো বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল পাকিস্তান। এবার বাবর আজমের পালা।
স্লোগানে মুখর করে রাখা আরেক পাকিস্তানি তরুণ এমসিজির ফ্যানজোনে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘এই দিনটা আমাদের। দেখুন, শুনেছিলাম বৃষ্টি আসবে। কিন্তু আকাশ দেখুন-সকাল থেকেই কেমন উজ্বল। বৃষ্টি হবে না ইনশাআল্লাহ। আর ম্যাচটাও পাকিস্তান জিতবে। এমন সুযোগ বারবার আসে না। সেটা বাবর আজমরা ভাল করেই জানেন!’
ট্রফি জেতার সমান সুযোগ অব্শ্য এসেছে ইংল্যান্ডের জন্যও। পরিসংখ্যানে চোখ রাখলে এগিয়ে রাখতে হবে ইংলিশদেরই। যেখানে আগের সাক্ষাতের মধ্যে ১৮বার জিতেছে তারা। ৯বার পাকিস্তান।
সেই সাফল্য এগেয়ে নেওয়ার পালা জস বাটলারদের। যদিও গ্যালারির দর্শক সমর্থনে আপাতত পরিস্কার ব্যবধানে এগিয়ে পাকিস্তান।
মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডের পুরোটাতেই একটাই স্লোগান, ‘জিতেগা ভাই জিতেগা পাকিস্তান জিতেগা!’ সেই স্লোগান বাবর আজমদের জাগিয়ে দিতে পারে কি-না সেটা সময়ই বলে দেবে। তার আগে বৃষ্টি যেন না আসে সেই প্রার্থনাও চলছে। ছুটির দিনে মাঠে আসা এক পাকিস্তানি সমর্থক বলছিলেন, ‘সোমবার থেকেই তো ফের অফিস, টানা ব্যস্ততা। আজ ফাইনালটা না দেখতে পারলে বড্ড ক্ষতি হয়ে যাবে!’
এটি/এনইউ