টি-টোয়েন্টিকে বিদায় বলা তামিম ইকবাল চাইলে বলতেই পারেন, ওই ফরম্যাটের ব্যর্থতায় দায় নেবেন না তিনি এবং তার দল। কিন্তু যে জার্সিটির প্রতিনিধিত্ব করছেন তামিম, সেটি কীভাবে অস্বীকার করবেন তিনি? আধুনিক ক্রিকেটে জার্সি দিয়ে ফরম্যাট আলাদা করা গেলেও অর্জন আর বিসর্জনের যে স্বাদ, সেটি জমা হয় বাংলাদেশ দলের নামেই পাশেই। সে কথা অজানা নয় তামিমের।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ক্রিকেটের যে চিত্র, তাতে ওয়ানডে সিরিজ শুরুর আগে অধিনায়ক তামিমকে বলতে হচ্ছে, ঘুরে দাঁড়াবে টাইগাররা। কিন্তু কেন? একদিনের ক্রিকেটে যে উত্তরোত্তর সাফল্য লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের‍, তাতে বরং তামিমের জোর গলায় বলার কথা, সাফল্যের ধারাবাহিকতা ধরে রাখবে দল। কিন্তু তামিম পাচ্ছেন কই?

ফল হয়েছে এমন শেষ ৮টি ওয়ানডে সিরিজের ৭টিতে জয় বাংলাদেশ দলের। আইসিসি সুপার লিগেও দাপুটে অবস্থান তামিমদের। ১২০ পয়েন্ট নিয়ে আছে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে। সেজন্য সবশেষ আইসিসি সভায় বেশ প্রশংসিত হয়েছে বাংলাদেশ। তবে বর্তমান পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, তামিম কোনো সিরিজের আগে নিজেদের ফেভারিট ভাবতে পারছেন না।

এই না পারার কারণ টি-টোয়েন্টির ব্যর্থতা। কুড়ি ওভারের ফরম্যাটে একের পর এক পরাজয় বাংলাদেশ দলের। ওয়ানডে সিরিজ শুরুর আগে টি-টোয়েন্টি খেলতে নামা টাইগাররা একেবারেই সুবিধা করতে পারছে না। উইন্ডিজের পর সিরিজ হার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। সব মিলিয়ে তাই ওয়ানডে সিরিজ শুরুর আগে সংবাদ সম্মেলনে এই ফরম্যাটের অধিনায়ক তামিমকে প্রতিপক্ষকে প্রয়োজনের থেকে বেশিই মূল্যায়ন করতে হচ্ছে, দিতে হচ্ছে ঘুরে দাঁড়ানোর বার্তা। 

সেই ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে আজ শুক্রবার তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়ের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ দল। হারারের স্পোর্টস ক্লাব মাঠে ম্যাচটি শুরু হবে স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ১৫ মিনিট অর্থাৎ বাংলাদেশ সময় দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে। 

সিরিজ শুরুর আগে তামিম বলেন, ‘যদি দুটি দলের হিসাব করেন তাহলে আমরা ভালো দল। কিন্তু ক্রিকেট খেলা আসলে ভালো দল দিয়ে হয় না। নির্দিষ্ট দিনে কে ভালো বা খারাপ খেলছে, হারজিত সেটা দিয়েই নিশ্চিত হয়।’

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই ওয়ানডে সিরিজটি সুপার লিগের অংশ নয়। ৩-০ ব্যবধানে জিতলে নামের পাশে যোগ হবে মাত্র ১ রেটিং পয়েন্ট। তবুও তামিমের কাছে সিরিজটি গুরুত্বপূর্ণ, ২০২৩ ভারত বিশ্বকাপের আগে নিজেদের পরীক্ষা করার মঞ্চ।

সঙ্গে যোগ করেন তামিম, ‘এটা ঠিক যে দলে একটা ভালো মিশ্রণ আছে। কিন্তু আমি সবসময় বয়স, অভিজ্ঞতা না দেখে দেখি কে যোগ্য। যে পারফর্ম করবে, সেই দলে সুযোগ পাবে। বেশ কয়েকজন রোমাঞ্চকর ক্রিকেটার আছে তরুণদের মধ্যে। আশা করি ওরা ভালো করবে। দলে জায়গা পাকা করবে।’

ওয়ানডেতে দুই দলের শক্তির ফারাক বিস্তার। বাংলাদেশ দলের অবস্থান যেখানে ৭, সেখানে স্বাগতিকরা আছেন ১৫তম স্থানে। পরিসংখ্যান বলছে, মুখোমুখি ৭৮ দেখায় জিম্বাবুয়ের ২৮ জয়ের বিপরীতে বাংলাদেশ জিতেছে ৫০টি। জিম্বাবুয়েতে খেলা ৩১ ওয়ানডেতে ১৬টি জয় আছে সফরকারীদের, সেখানে জিম্বাবুয়ে জিতেছে ১৫ ম্যাচ। এসব পরিসংখ্যান আর শক্তিমত্তায় জিম্বাবুয়ের থেকে ঢের এগিয়ে থাকলেও ওয়ানডে সিরিজটি টাইগারদের জন্য টি-টোয়েন্টি হারের ক্ষতে প্রলেপ দেওয়ার উপলক্ষ।

এক নজরে প্রথম ওয়ানডের জন্য বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ-
তামিম ইকবাল, লিটন দাস, এনামুল হক বিজয়, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, আফিফ হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম ও মুস্তাফিজুর রহমান।

টিআইএস/এনইউ