বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদকে বসিয়ে শেখ মেহেদী হাসানকে খেলানোয় প্রশ্ন উঠল, জিম্বাবুয়ে একাদশে ডানহাতি ব্যাটসম্যানদের আধিক্য থাকার পরেও কেন বাঁহাতি স্পিনার না নিয়ে অফ স্পিনে ভরসা করল টিম ম্যানেজমেন্ট? সেই অফ স্পিন দিয়েই ইনিংস শুরু করালেন নতুন অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান। তাতেই মিলেছে সফলতা। মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ১৩৫ রানে ইনিংস থেমেছে জিম্বাবুয়ের।

প্রথম ওভারেই জোড়া আঘাত মোসাদ্দেকের। নিজের দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ ওভারে নেন আরো ১টি করে উইকেট। এতে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টিতে ফাইফারের স্বাদ পেলেন তিনি। নিজের কোটার ৪ ওভারের স্পেলে ২০ রান দিয়ে নেন ৫ উইকেট। তার এই বোলিং ফিগার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তো বটেই, তার গোটা ক্রিকেট ক্যারিয়ারেই সেরা। একই সঙ্গে দেশের পক্ষে এই ফরম্যাটে সাকিব আল হাসানের সঙ্গে যৌথভাবে দ্বিতীয় সেরা বোলিং ফিগার।

আরও পড়ুন >> মোসাদ্দেকের ৫ উইকেট, দিশেহারা জিম্বাবুয়ে

টি-টোয়েন্টিতে জিততে ভুলে যাওয়া বাংলাদেশ দলের জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেও হার। এটা যেন মেনে নেওয়াই কষ্টকর! তবুও সত্য তো আর লুকানো যায় না। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম কুড়ি ওভারের ম্যাচে জিম্বাবুয়ে যেন পরাশক্তি বনে যায়, ব্যাটে-বলে টাইগারদের হারিয়ে জিতে নিয়েছে ম্যাচ। মূলত ম্যাচ হেরেছিল বোলারদের ছন্নছাড়া, অনিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের জন্য। এজন্য আজ রোববার দ্বিতীয় ম্যাচে বোলিং লাইনআপে পরিবর্তন। তাতেই সফলতা মিলেছে সফরকারীদের।

তাসকিন আহমেদ আর নাসুমের জায়গা নিয়েছেন শেখ মেহেদী আর হাসান মাহমুদ। তবে সবাইকে ছাপিয়ে দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন মোসাদ্দেক। হারারের স্পোর্টস ক্লাব মাঠে এদিনও টস হেরেছিলেন সোহান।

আরও পড়ুন >> ফের টস হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ

জিম্বাবুয়ের ইনিংসের প্রথম ওভারেই প্রথম আঘাত। আউটসাইড অফের বল ড্রাইভ করতে গিয়ে খোঁচা দিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন রেজিস চাকাভা। শূন্য রানে আউট হন এই ওপেনার। ওভারের শেষ বলে আবার আক্রমণ। এবার আউটসাইড অফের বল ড্রাইভ করতে গিয়ে কাভার পয়েন্টে মেহেদীর হাতে ক্যাচ দেন মাধেভেরে। আগের ম্যাচে তিনি ভুগিয়েছিলেন বাংলাদেশকে। এবার ফিরলেন মাত্র ৪ রানে।

মোসাদ্দেকের ঘূর্ণিতে দিশেহারা জিম্বাবুয়ে তৃতীয় উইকেট হারায় ইনিংসের তৃতীয় ওভারে,  এবার শিকার ক্রেইগ আরভিন। এই অফ স্পিনারকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে বিপাকে পড়েন জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক। টাইমিং হয়নি ঠিকঠাক, বল যায় প্রথম স্লিপে লিটনের হাতে। ৪ বলে ১ রান করে ফেরেন আরভিন। পরের দুই উইকেটও মোসাদ্দেকের দখলে।

নিজের তৃতীয় ওভারে উইলিয়ামসের ফিরতি ক্যাচ নেন মোসাদ্দেক। ৮ রান করে সাজঘরে ফেরেন এই ব্যাটসম্যান। নিজের কোটার চতুর্থ ওভারে আউট করেন মিল্টনকে। অফ স্টাম্পের বল ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে সুইপ করতে গিয়ে হাসানের হাতে ধরা পড়েন এই ব্যাটসম্যান। দারুন ক্যাচ নেন হাসান। ৮ বলে ৩ রান করেন মিল্টন। ৭ ওভারে ৩২ রান তুলতেই ৫ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে জিম্বাবুয়ে।

আরও পড়ুন >> ম্যাচ হেরেও প্রাপ্তি দেখছেন সোহান

তবে মোসাদ্দেকের কোটা শেষ হলেই আবার খেলায় ফেরে স্বাগতিকরা। দলকে টেনে তোলেন রাজা আর রায়ান বার্ল। মুস্তাফিজ, শরিফুল, হাসানদের শাসন করে খেলে টানা দ্বিতীয় ফিফটি তুলে নেন রাজা। ওয়ানডে স্টাইলে ব্যাট করে বার্ল করেন ৩১ বলে ৩২ রান। তাকে হাসান ফেরালে ভাঙে ৬৫ বলে ৮০ রানের পার্টনারশিপ। বার্ল আউট হলে রাজাও ফিরেন কিছুক্ষণ পর। তাকে শিকার বানান মুস্তাফিজ। ৫৩ বলে ৬২ রানের ইনিংসটি রাজা সাজান ৪টি চার ও ২টি ছয়ের মারে।

শেষদিকে ওয়েলিংটন মাসাকাদজার ৬ এবং লুক জংউইয়ের ৫ বলে ১১ রানের সুবাদে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৩৫ রানের পুঁজি পেয়েছে জিম্বাবুয়ে। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচে হারে বাংলাদেশের দলের সিরিজ হার বাঁচাতে এ করতে হবে ১৩৬ রান।

টিআইএস/এইচএমএ