মুশফিক, জাহানারাদের ম্যাচ ফি নিয়ে সুখবর
টেস্ট ক্রিকেটে সম্প্রতি একেবারেই ভালো করছে না বাংলাদেশ দল। মাউন্ট মঙ্গানুই জয় এক পাশে রাখলে সাদা পোশাকে বিবর্ণ টাইগাররা। কীভাবে টেস্টে ভালো ফল করা যায়, সেটি নিয়ে ভাবছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। এজন্য মুশফিকুর রহিমদের ম্যাচ ফি বাড়িয়ে অনুপ্রাণিত করতে চাইছে বিসিবি। সঙ্গে ম্যাচ ফি বাড়বে নারী ক্রিকেটারদেরও।
আজ বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) মিরপুরে সংবাদমাধ্যমকে বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান জালাল ইউনুস বলছিলেন, ‘ম্যাচ ফি হয়ত বেড়ে যাবে। আরও কী কী করতে পারি সেই চিন্তাভাবনা আছে।’
বিজ্ঞাপন
শুধু ম্যাচ ফি বাড়ানোই নয়, টেস্টে ভালো করতে একাধিক পরিকল্পনা হাতে নিতে যাচ্ছে ক্রিকেট বোর্ড। এ নিয়ে ঈদের পরে বোর্ডে হবে বিস্তর আলোচনা।
আরও পড়ুন >> হজ পালন করতে সৌদি আরবে পৌঁছালেন মুশফিক
জালাল ইউনুস বলেন, ‘টেস্টে আমরা ওভাবে পারফর্ম করছি না। দক্ষিণ আফ্রিকায় সেভাবে ভালো করতে পারিনি, ওয়েস্ট ইন্ডিজেও ভালো করতে পারিনি। আমরা এটা নিয়ে অনেক উদ্বিগ্ন। সভাপতি সাহেব ওয়ার্কিং গ্রুপ করেছেন। সবাইকেই এটা নিয়ে ভাবতে হবে। ক্রিকেট অপারেশন্স, গেম ডেভেলপমেন্ট, হাই পারফরম্যান্স, এইজ গ্রুপ কমিটির চেয়ারম্যানরা শীঘ্রই মিটিংয়ে বসব, হয়ত ঈদের পরপরই।’
সঙ্গে যোগ করেন জালাল ইউনুস, ‘দীর্ঘমেয়াদী একটা পরিকল্পনা করতে হবে। টেস্টে কীভাবে আরও ভালো করা যায়, টেস্ট খেলোয়াড়দের জন্য কী কী সুবিধা বা ব্যবস্থা নেওয়া যায় এদিকে আরও বেশি নজর দিতে চাই। যাতে টেস্টে আগ্রহ আরও বাড়ে। একটা টেস্ট দলে যারা খেলবে তাদের যেন পূর্ণ মনোযোগ এখানে থাকে। অনেকে সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে বেশি খেলতে চায়। যারা বেশি আগ্রহী, নিবেদিত এদের জন্য কি করা যায় এগুলো নিয়ে বসতে চাচ্ছি। এটার জন্যই ওয়ার্কিং গ্রুপের কথা বলেছেন।’
এদিকে যুগান্তকারী এক সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট। আইসিসির পূর্ণ সদস্যদেশগুলোর মধ্যে তারাই প্রথম পুরুষ ও নারীদের সমান ম্যাচ ফি ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার নিয়ম চালু করেছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অবশ্য এখনই এটা সম্ভব নয়।
আরও পড়ুন >> পুরুষদের সমান আয় হতে যাচ্ছে নারী ক্রিকেটারদের
মুশফিকসহ তিন ফরম্যাটে খেলা ‘এ প্লাস’ ক্যাটাগরির খেলোয়াড় যারা আছেন, তারা মাসে পান ১০ লাখ টাকার ওপরে। ‘এ’ গ্রেডে থাকা একজন ক্রিকেটার শুধু টেস্ট আর ওয়ানডে খেলেই পান সাড়ে ৬ লাখ টাকা। সবচেয়ে নিচে ‘ডি’ গ্রেডে থাকা একজন ক্রিকেটার তিন সংস্করণ খেলে বেতন পান মাসে ৩ লাখ টাকা। অথচ জাহানারা আলম, সালমা খাতুনদের বেতন বাড়িয়েও বৈষম্য ঢের। সর্বোচ্চ ‘এ’ গ্রেডে বেতন ৮০ হাজার টাকা। ‘বি’ গ্রেডে বেতন ৬০ হাজার টাকা। ‘ডি’ গ্রেডে বেতন পান ৩০ হাজার টাকা।
এখন না হলেও নারী ক্রিকেটারদের ভবিষ্যতে বেতন বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিলেন জালাল। তবে এখন বেতন না বাড়লেও ম্যাচ ফি বাড়ছে নারীদের, ‘আমরা আশা করছি মেয়েদের ক্রিকেট আরও উন্নতি করবে। আগে থেকে অনেক ভালো করছে। তারা আরও পেশাদার হচ্ছে। আমরা আশা করি আরও হবে। তাদেরও কার্যক্রম বাড়ানো উচিৎ। যেহেতু এটা নিয়ে চিন্তাভাবনার আলাদা বিভাগ আছে, বোর্ডেও এটা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, আমরা চাইব তাদের পারিশ্রমিক বাড়ানোর। তাদের কাছাকাছি না গেলেও ব্যবধান কমানো উচিৎ।’
আরও পড়ুন >> সাকিব যাচ্ছেন না জিম্বাবুয়ে সফরে
সঙ্গে যোগ করেন জালাল, ‘এটা বোর্ড সভাপতি অনেকবার বলেছেন। উনি এদিকে লক্ষ্য করেছেন। সমান সমান না হলেও আমরা কাছাকাছি যাতে থাকে বা পার্থক্য কমে সেদিকে লক্ষ্য রাখব। বোর্ডেই এটা আলোচনা হবে। বোর্ডে ইতোমধ্যে ম্যাচ ফি বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া আছে।’
যদিও ম্যাচ ফি তেও আছে বিশাল পার্থক্য। পুরুষ ক্রিকেটাররা টেস্টে ম্যাচ ফি পান ৬ লাখ টাকা, ওয়ানডেতে ৩ লাখ আর টি-টোয়েন্টির ২ লাখ। অন্যদিকে একটি ওয়ানডে খেলে মেয়েরা পান ২৮ হাজার টাকা। টি-টোয়েন্টির ম্যাচ ফি তার অর্ধেক অর্থাৎ ১৪ হাজার টাকা।
টিআইএস/এটি/এইচএমএ