বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেট নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই! বিভিন্ন সময় বিশেষ কিছু দলকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ নিত্য দিনের। এখানে চ্যাম্পিয়ন মুকুটের থেকে বেশি ভূমিকা পালন করে লিগে সেসব দলকে পয়েন্ট টেবিলে ওপরের দিকে নেওয়া। তাতে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কাউন্সিলরশিপে নাম তোলা যায়। বলা যায় এটি মূলত, বোর্ডের নির্বাচনের ভোটাভুটির যুদ্ধে এগিয়ে থাকার কৌশল। যা নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ বিসিবি।

ঘরোয়া ক্রিকেটের এই বিতর্ক এড়াতে ক্রিকেট কমিটি অব ঢাকা মেট্রোপলিসের (সিসিডিএম) ৪ স্তরে অংশ নেওয়া সবগুলো ক্লাবকে সমান ১টি করে কাউন্সিলরশিপ দেওয়া পরিকল্পনা করেছে বোর্ড। এ বিষয়ে খসড়া আলোচনা হয়েছে বৃহস্পতিবার হয়ে যাওয়া পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে। আগামী ১৯ জুলাই বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) প্রস্তাবটি পাশের জন্য উত্থাপন করা হবে।

বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বলছিলেন, ‘মানুষের মনে একটা সন্দেহ থাকে। এ সন্দেহ দূর করার জন্য, এর পেছনে একটা কারণ আমরা খুঁজচ্ছি কেন করবে? একটা হতে পারে কাউন্সিলরশিপ, ওপরে উঠতে চায় সবাই, কেউ কাউকে হারিয়ে দিতে চায় যেন একটা কাউন্সিলরশিপ পায়। ওই ভোটটা তাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

সঙ্গে যোগ করেন পাপন, ‘আমরা আগেও বলেছি আমরা এ এজিএমে পেশ করব সব ক্লাবের জন্য একটা করে কাউন্সিলরশিপ। তাহলে সবার জন্য যদি সমান হয়ে যায়, তাহলে এটা নিয়ে মারামারির কিছু নেই।’

বর্তমান গঠনতন্ত্র অনুসারে প্রিমিয়ার লিগে অংশ নেওয়া ১২ দলের মধ্যে সুপার সিক্সে খেলা ৬টি দল ২টি করে কাউন্সিলরশিপ পায়, বাকিরা ১টি করে। প্রথম বিভাগে অংশ নেওয়া ১২ দলটি সমান ১টি করে কাউন্সিরশিপ পেয়ে আসছিল। তবে দ্বিতীয় বিভাগে প্রথম ১২ ক্লাব আর তৃতীয় বিভাগে কাউন্সিলরশিপ মেলে প্রথম ৮টি ক্লাবের। এখানে সামঞ্জস্যতা আনতে চাইছে ক্রিকেট বোর্ড। অর্থাৎ এই ৪ লিগে অংশ নিলেই মিলবে কাউন্সিলরশপ। সমান হবে ভোটাধিকার।

পাপনের বলেন, ‘এখন আমাদের সুপার লিগে যারা খেলে তাদের দুটা করে কাউন্সিলরশিপ। আমাদের প্রথম বিভাগ-দ্বিতীয় বিভাগ-তৃতীয় বিভাগে কিছু কিছু পায় কিছু কিছু পায় না।’

পরিচালনা পর্ষদের নেওয়া এই খসড়া সিদ্ধান্ত চলতি বোর্ডের প্রথম এজিএমে পাশ হলে পরিবর্তিত কাউন্সিলরশিপে সংখ্যা বেড়ে যাবে আগের তুলনায় বেশি। অর্থাৎ বিতর্ক এড়াতে ভোট কমিয়ে ভোট বাড়ানোর ভাবনা বোর্ডের।

প্রিময়ার প্রিমিয়ার লিগে ১৮টির মধ্যে ৬টি কমলেও প্রথম ও তৃতীয় বিভাগে সমান ২০ এবং দ্বিতীয় বিভাগে কাউন্সিলর হবে ২৪টি। সেক্ষেত্রে আগে যেখানে সাকুল্য ৫৮ জন কাউন্সিলর বা ভোটার ছিল ক্লাবগুলোতে, সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ৭৬টি। তবে এসব হিসাব মেলাতে এই প্রস্তাব পাশ হতে হবে এজিএমে, সংশোধন আনতে হবে বর্তমান গঠনতন্ত্রের।

বিসিবির এমন সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে আগামীতে ঘরোয়া ক্রিকেট কতটা বিতর্ক মুক্ত হয়, এখন সেটিই দেখার অপেক্ষা।

টিআইএস/এনইউ