মাঠে নামার আগেই বিদায় সাকিব-মুশফিকদের!
‘আমি মনে করি যে এ বছর ভালো একটা সুযোগ আছে। আমাদের টিমটাই ওভাবে বানানো হয়েছে। দলের শক্তিমত্তা অনেক বেশি। সাকিব-রিয়াদের রিপ্লেসমেন্ট তো আপনি কোথাও পাবেন না। আমার কাছে মনে হয় তরুণ-অভিজ্ঞতার মিশেলে বেশ ভালো দল হয়েছে।’- এবার ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগ (ডিপিএল) শুরুর আগে এভাবেই বলছিলেন মোহামেডানে স্পোর্টিং ক্লাবের দায়িত্বপ্রাপ্ত অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম।
ভাগ্য বটে! মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ কটা ম্যাচ খেলার সুযোগ পেলেও উপরের কথাগুলো যে (মুশফিক) বলেছিলেন আর যাকে (সাকিব আল হাসান) নিয়ে বলেছিলেন, তারা দুইজন এবার ডিপিএলের স্বাদটাই যে পেলেন না! মাঠে নামার আগেই বিদায় নিলো মুশফিক, সাকিব, রিয়াদদের মোহামেডান।
বিজ্ঞাপন
ডিপিএল শুরুর আগে রাজধানী একটি পাঁচ তারকা হোটেলের বলরুম তারায় তারায় পূর্ণ হয়ে ওঠে। দেশের ক্রিকেটের একের পর এক নক্ষত্র সেখানে জমা হন। সাকিব, রিয়াদ, মুশফিকের সঙ্গী হন মেহেদী হাসান মিরাজ, তাসকিন আহমেদ। সঙ্গে নাজমুল ইসলাম অপু, শুভাগত হোম, হাসান মাহমুদের মতো নামকরা ক্রিকেটাররা। সৌম্য সরকার আর আবু জায়েদ চৌধুরী রাহি ক্রিকেটীয় ব্যস্ততার জন্য উপস্থিত হতে পারেননি। তাতে অবশ্য উৎসব আর রঙে ভাটা পড়েনি মোটেও।
মোহামেডানের জার্সি উন্মোচন অনুষ্ঠান। সেখানেই আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়, এই মৌসুমে দলকে নেতৃত্ব দেবেন মুশফিক। ডিপিএল এমন ঘটা করে জার্সি আর অধিনায়কের নাম ঘোষণা, উদাহরণ বটে! তবে এই আলোক রশ্মির তীব্রতা সইতে পারলো না মোহামেডান। দীর্ঘ ১ যুগের শিরোপা আক্ষেপ ঘোচাতে গিয়ে পা হড়কালো লিগ পর্বে। সুপার লিগের টিকিটই যে কাটা হলো না, লিগ শেষ হলো সাত নম্বরে থেকে।
মোহামেডান এবার জাতীয় দলের অধিকাংশ ক্রিকেটারের দলে টানলেও ভুলটা যেন করে বসে টিম সিলেকশনেই। বাংলাদেশ দলের দক্ষিণ আফ্রিকা সফর থাকায় মাঠে নামার সুযোগই পাননি মুশফিকুর রহিম, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাসকিন আহমেদ আর আবু জায়েদ চৌধুরী। সাকিব আল হাসান পারিবারিক সমস্যায় না থাকলেও তাকে পাওয়া যেত না। তবে এও শোনা গেছে, সাকিবের সঙ্গে যেরকম কথাবার্তা ছিল, তাতে লিগ পর্ব নয়, সুপার লিগ থেকেই খেলার কথা এই বাঁহাতি অলরাউন্ডারের।
সাকিব, মুশফিক, তাসকিন, মিরাজ, রাহিরা আক্ষেপ করতেই পারেন, এমন এক টিমে নাম লিখিয়েছেন যে তাদের ডিপিএল ২০২২ মৌসুমের স্বাদটাই পাওয়া হলো না আর!
তবে প্রশ্ন উঠতে পারে, মোহামেডান বাদ পড়াতেই আসলেই কী এবার ডিপিএলে আর দেখা যাবে না জাতীয় দলের এই তারকা ক্রিকেটারদের?
এ প্রসঙ্গে ঢাকা পোস্টকে সিসিডিএমের এক সদস্য বলেন, ‘তারা (ক্রিকেটার) এবার যেহেতু কোনো ম্যাচ খেলেননি, চাইলে অন্য টিমের হয়ে সুপার লিগে খেলতে পারবেন। তবে এ ক্ষেত্রে কিছু নিয়মনীতি আছে। যেহেতু তারা এবার একটা টিমের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ, ক্লাব অনুমিত দেবে কিনা সেটা বড় একটা ব্যাপার।’
এ বিষয়ে মোহামেডান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ক্লাবটির ক্রিকেট কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুজ্জামান বললেন, ‘এখনো কোনো ক্রিকেটার আমাদের সঙ্গে এই বিষয়ে যোগাযোগ করেননি। কেউ অন্য টিমের হয়ে খেলতে চেয়ে আমাদের কাছে আবেদন করলে আমরা বিষয়টি নিয়ে ভাববো।’
২০২২ ডিপিএল মৌসুমে মোহামেডানের দলটিকে তারকার হাট বললে নেহায়েত ভুল বলা হবে না। সাকিব, মাহমুদউল্লাহ, মুশফিকের সঙ্গে সৌম্য সরকার, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাসকিন আহমেদ, শুভাগত হোম, আবু জায়েদ চৌধুরী রাহি, হাসান মাহমুদদের সঙ্গে বিদেশি কোটায় খেলেছেন পাকিস্তানি অলরাউন্ডার মোহামেডান হাফিজ আর শ্রীলঙ্কান ব্যাটসম্যান কুশল মেন্ডিস। তবুও ব্যর্থ একটি মৌসুম পার করতে হলো ঐতিহ্যবাহী মোহামেডানকে।
টিআইএস/এমএইচ/এনইউ