এক ফরম্যাট থেকে অবসর নেওয়া উচিত সাকিবের
শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রস্তুত নন। এমন অবস্থায় খেললে দেশের সঙ্গে গাদ্দারি হয়ে যাবে, এমন কথা বলে ক্রিকেট থেকে কিছু দিন নিজেকে সরিয়ে রাখার কথা বলেছিলেন সাকিব আল হাসান। এরপর থেকেই দেশে বইছে আলোচনা সমালোচনার ঝড়। এরপর এবার টিম ডিরেক্টর খালেদ খালেদ মাহমুদ সুজন জানালেন, খেলাটা যদি উপভোগ না-ই করেন, তাহলে এক ফরম্যাট থেকে অবসর নিয়ে নেওয়া উচিত সাকিবের।
সাকিব আল হাসান দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে টেস্ট খেলতে চান না। এমন কথা শোনা যাচ্ছিল গেল মাসের শুরু থেকেই। এরপর আইপিএল নিলামে দল পাননি সাবেক বাংলাদেশ অধিনায়ক। যার কারণে ধারণা করা হচ্ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে পুরো সিরিজেই তাকে পাবে বাংলাদেশ। এমন কিছু শোনা গিয়েছিল বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের কণ্ঠেও।
বিজ্ঞাপন
তবে গত পড়শু সাকিব আল হাসান ফাটালেন নতুন বোমা। জানালেন, আফগানিস্তান সিরিজেও খেলার মতো মানসিক অবস্থানে ছিলেন না তিনি। যে কারণে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরেও না যাওয়ার কথা জানান সময়ের অন্যতম সেরা এই অলরাউন্ডার। নতুন আলোচনার শুরু এখানেই।
এরপর বিসিবি সভাপতি পাপন জানালেন, এ বিষয়ে তিনিও ছিলেন অন্ধকারে। এমনকি সুজনও জানতেন না সাকিবের না খেলার ব্যাপারে।
তবে তিনি জানালেন, সাকিব যদি না খেলতে চান, তাহলে জোর করতে চান না তিনি। আজ মঙ্গলবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি কথা বললেন এ বিষয়ে। সেখানেই উঠে এলো সাকিব-ইস্যুতে তার মনোভাব।
সাবেক বাংলাদেশ অধিনায়কের ভাষ্য, ‘আমরা জানতাম যে সাকিব দক্ষিণ আফ্রিকায় ওয়ানডে খেলবে, টেস্টেও খেলবে। কিন্তু হুট করেই বলল যে খেলবে না। ও আগে চিঠি দিয়েছিল। বলেছিল খেলবে না। আবার পাপন ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলার পর খেলার সিদ্ধান্ত নিল। এখন আবার বলছে খেলবে না।’
সাকিবের এমন সিদ্ধান্তের পর পাপন বাংলাদেশের শীর্ষ তারকাদের সিরিজের ঠিক আগে, বা সিরিজ চলাকালে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার সমালোচনা করেন। সাকিবের আগে তামিম ইকবাল বিশ্বকাপের আগে জানিয়েছিলেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে না খেলার কথা। এরপর জিম্বাবুয়েতে টেস্ট চলাকালেই মাহমুদউল্লাহ অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন। সে বিষয়গুলো ভালোভাবে মেনে নেয়নি বিসিবি।
এ বিষয়টাকে বড় বাধা হিসেবে দেখছেন খালেদ মাহমুদ। বিষয়টার ব্যাখ্যা দিলেন তিনি, ‘নিজেদের সিদ্ধান্তটা ভালো করে বুঝে নেয়। তারা যদি খেলতে না চায়, খেলার জন্য আগ্রহী না হয় কিংবা মানসিকভাবে কোনো সমস্যা থাকে… তারা তাদের সিদ্ধান্ত নিতে পারে। কিন্তু এটা এমন সময় না যে, আমরা যখন একটা দল নিয়ে সিদ্ধান্তে চলে যাই।’
সাকিবদের এমন সিদ্ধান্ত দলে আসা তরুণদের ওপরও প্রভাব ফেলে বলে জানালেন সুজন, ‘সাকিব-তামিম যখন খেলে তখন কোনো সমস্যা তৈরি হয় না। সমস্যা তখনই তৈরি হয় যখন ওরা খেলে না। ওদের জায়গায় অন্য কাউকে খেলাচ্ছি। নতুন করে তৈরি করছি। সাকিব যখন ফিরে আসবে তখন ওই ছেলেটার কী হবে? আমরা দল তো তৈরি করতে পারছি না। সাকিব যদি খেলতে না চায়, না খেলুক টেস্ট ম্যাচে। আই ডোন্ট কেয়ার। বিসিবি এতটা কনসার্ন না যে, ও খেলতে চায় না।’
এরপরই তিনি জানালেন, উপভোগ না করলে এক ফরম্যাট থেকে অবসর নেওয়া উচিত সাকিবের। বললেন, ‘আপনি জোর করতে পারবেন না। আমরা চাই যে ও খেলুক। যতদিন পর্যন্ত সাকিব ফিট থাকবে খেলুক। কিন্তু ও যদি মনে করে যে খেলা উপভোগ করছে না, তাহলে বলে দেওয়া উচিত, আমি যেকোনো একটা ফরম্যাট আর খেলব না। বা আমি দুইটা ফরম্যাট খেলব না। এটা ঠিক আছে। আমাদের সাকিবের জায়গায় একজনকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।’
এনইউ/এটি