পাপন ক্রীড়া মন্ত্রী, যেভাবে দেখছে বাফুফেসহ অন্যরা
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি (বিসিবি) নাজমুল হাসান পাপন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন। ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি হলেও পাপনের মন্ত্রিত্বকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন ক্রীড়াঙ্গনের অন্য ফেডারেশনের ব্যক্তিবর্গ।
বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের সঙ্গে পাপনের বচসা হয়েছিল গত বছরের শুরুতে। ফুটবল ফেডারেশনের সঙ্গে বিসিবি’র একটা স্নায়ুযুদ্ধ ছিল। তবে এখন সম্পর্ক অনেকটাই শীতল। বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন শারীরিকভাবে অসুস্থ। ফেডারেশনের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তি সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী পাপনের মন্ত্রিত্ব সম্পর্কে বলেন, ‘তিনি ক্রীড়াঙ্গনের লোক। আশা করি ভালোই করবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যাদের মন্ত্রিত্ব দিয়েছেন, অবশ্যই সব কিছু বিচার-বিবেচনা করেই দিয়েছেন।’
বিজ্ঞাপন
বাফুফের আরেক সহ-সভাপতি কাজী নাবিল আহমেদও সালাম মুর্শেদীর সুরে কথা বলেছেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমি বেশ খুশি ক্রীড়াঙ্গন থেকেই ক্রীড়ামন্ত্রীর দায়িত্ব পেলেন একজন। আমার প্রত্যাশা ক্রীড়াঙ্গনের সামগ্রিক উন্নয়নে তিনি ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারবেন। তিনি অত্যন্ত অভিজ্ঞ এবং সমৃদ্ধ ক্রীড়া সংগঠক।’
ফেডারেশন ফোরামের সভাপতি বাংলাদেশ হ্যান্ডবল ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান কোহিনূর। গত প্রায় তিন দশক হ্যান্ডবল ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অনেক মন্ত্রীর আগমন-প্রস্থান দেখেছেন। নতুন ক্রীড়া মন্ত্রী সম্পর্কে তার পর্যবেক্ষণ ও প্রত্যাশা, ‘তিনি ক্রীড়াঙ্গনে দীর্ঘদিন রয়েছেন সঠিক। তবে প্রায় পুরোটাই ক্রিকেট কেন্দ্রীক। ক্রিকেটের সঙ্গে দেশের অন্য খেলার চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। অন্য খেলাগুলোর দিকেও তাকে বিশেষ নজর দিতে হবে।’
সামগ্রিকভাবে পাপনের ওপর আস্থা রাখতে চান এই বর্ষীয়ান সংগঠক, ‘যতটুকু জানি তিনি বেশ ডাইনামিক ব্যক্তি। ক্রীড়া ও যুব উভয় খাতে অনেক কিছু করার রয়েছে। আশা করি তিনি নতুনত্ব দেখাতে পারবেন।’
জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক পরিষদের মহাসচিব আশিকুর রহমান। ভলিবল ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মিকু পাপন সম্পর্কে বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমার সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে বলে নয়, সত্যিকার অর্থেই তিনি আন্তরিক লোক। ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে আন্তরিকভাবে তিনি কাজ করলে অবশ্যই ভালো কিছু সম্ভব।’
আরও পড়ুন
পাপন ক্রীড়া মন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই আলোচনায় বিসিবি’র সভাপতিত্ব নিয়ে। ক্রীড়া মন্ত্রী এবং বিসিবি সভাপতি একই ব্যক্তি হওয়ার বিষয়টি খানিকটা সাংঘর্ষিক। এই বিষয়ে মিকুর পর্যবেক্ষণ, ‘অনেক কিছুতেই তো সাংঘর্ষিকতা রয়েছে। ক্রীড়া মন্ত্রী জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের চেয়ারম্যান। এনএসসিতে তিনি যেটা সুপারিশ করেন মন্ত্রণালয়ে সেটা আবার অনুমোদন দেন। এরকম সাংঘর্ষিকতা তো ক্রীড়াঙ্গনে অনেক ক্ষেত্রেই রয়েছে। এরপরও আশা করি পাপন ভাই সামগ্রিকভাবে ভালোই পরিচালনা করতে পারবেন।’
ক্রিকেট বোর্ডের সাবেক পরিচালক ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সিরাজউদ্দিন আলমগীর বলেন, ‘পাপন ভাই ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি থাকায় ক্রীড়াঙ্গনের অনেক ব্যক্তিকেই চেনেন। যারা অন্য ফেডারেশনগুলোতে কাজ করছেন এবং রয়েছেন তৃণমূল পর্যায়ে। পাপন ভাই অবশ্যই তৃণমূলেও নজর দেবেন এই প্রত্যাশা থাকছে।’
নতুন এই ক্রীড়া মন্ত্রীকে বিসিবির আগে অভিনন্দন জানিয়েছে দাবা ফেডারেশন। অন্য ফেডারেশনগুলোর অভিনন্দন বার্তা এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। ক্রীড়া সাংবাদিকদের দুই সংগঠন বাংলাদশে ক্রীড়া লেখক সমিতি ও বিএসজেএ দুটি পৃথক বার্তায় পাপনকে অভিনন্দন জানিয়েছে।
এজেড/এএইচএস