তেল-লোশন লাগানোর পর অজু করলে হবে কি?
শরীরে লোশন, ক্রিম, গ্লিসারিন বা তেল দিলে তা শরীরের চামড়ার সঙ্গে মিশে যাওয়ার কারণে আবরণ থাকে কিনা— বোঝা যায় না। ফলে অজু করার সময় হাতে পানি নিয়ে কনুই পর্যন্ত হাত-পা ভালো করে ঘষে নিলেই হবে? এতে নিঃসন্দেহ হয় যে, লোমকুপের গোঁড়ায় পানি পৌঁছেছে?! নাকি সাবান দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে?
এই প্রশ্নের উত্তর হলো- অজুর ক্ষেত্রে অজুর অঙ্গগুলো এবং ফরজ গোসলের ক্ষেত্রে পুরো শরীর পরিপূর্ণভাবে পানি দিয়ে ভেজানো আবশ্যক। ফলে যদি কোনো অংশ না ভিজে— তাহলে অজু, গোসল ও পবিত্রতা হবে না।
বিজ্ঞাপন
আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত বর্ণিত হাদিসে আছে, ‘কোনো এক সফরে আল্লাহর রাসুল (সা.) আমাদের পেছনে পড়ে গেলেন। পরে তিনি আমাদের কাছে পৌঁছলেন। এদিকে আমরা (আসরের) নামাজ আদায় করতে বিলম্ব করে ফেলেছিলাম। তাই (তা আদায় করার জন্য) আমরা অজু করা শুরু করলাম। এ সময় আমরা আমাদের পা কোনোমতে পানি দ্বারা ভিজিয়ে নিচ্ছিলাম। তখন তিনি উচ্চৈঃস্বরে বলেন, ‘সর্বনাশ! গোড়ালির নিম্নাংশগুলোর জন্য জাহান্নামের আগুন রয়েছে।’ তিনি দুই বা তিনবার এ কথা বললেন। (বুখারি, হাদিস : ৯৬; মুসলিম, হাদিস : ২৪১)
অজুর ক্ষেত্রে শরিয়তের বিধান হলো- যদি হাতের ভেতর কোনো এমন জিনিস লেগে যায়— যেটা চামড়া পর্যন্ত পানি পৌছার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে; আর এটার কারণে যদি আসলেই শরীরে পানি না পৌঁছে, এমনটি হয়ে থাকলে অজু ও গোসল হবে না। সেই অজু বা গোসল দিয়ে নামাজ আদায় করে থাকলে— ওই নামাজগুলো আবার পড়ে নিতে হবে।
আবু তামিম জায়শানি (রহ.) থেকে বর্ণিত আছে, আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) যখন অজু করতেন— আংটি নাড়াচাড়া করতেন। আবু তামিমও তা করতেন। ইবনে হুবায়রাও তা করতেন।
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে ওযু করার সময় হাতে পানি নিয়ে কনুই পর্যন্ত হাত, পা তথা অজুর যেই অঙ্গগুলোতে গ্লিসারিন ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়েছে, সেই অঙ্গগুলো ভালো করে ঘষে নিলেই হবে। সাবান দিয়ে ধোয়ার প্রয়োজন নেই।
তথ্যসূত্র : মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা : ১/৩৭১ (৪৫৬); মাবসুত, সারাখসি : ১/১০; আদ্দুররুল মুখতার : ১/১২৬; আল-বাহরুর রায়েক : ১/১৩; হাশিয়াতুত তাহতাভি আলাল মারাকি : ৪২৮
ঢাকা পোস্টের ইসলাম বিভাগে আপনিও লিখতে পারেন। বিষয়ভিত্তিক প্রবন্ধ-নিবন্ধ এবং জীবনঘনিষ্ঠ প্রশ্ন পাঠাতে মেইল করুন : dhakapostislam@gmail.com