যে ৪ কাজে মুমিনের সফলতা বলেছেন নবীজি
শুধু নামাজ নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত আদায় করলেই কি জান্নাতে চলে যাওয়া যায়? আমরা এমন মনে করলেও বিষয়টি মূলত এমন নয়। অথচ আরও কতো শত কিছু আছে, যেগুলোর মাধ্যমে সহজে জান্নাতে যাওয়া যায়। কিন্তু আমরা না জানার কারণে সেসব আমল করি না।
উপরন্তু এছাড়া আরও কিছু বিষয় আছে, যেগুলোকে আমরা খুব হালকা মনে করি। অথচ এ বিষয়গুলোই মানুষের জান্নাতে যেতে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে এবং এ বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিলে ইহকালীন ও পরকালীন সফলতা অর্জন করা যাবে।
বিজ্ঞাপন
রাসুল (সা.) তার প্রিয় উম্মতকে এমন চারটি বিষয়ে সতর্ক করেছেন, যেগুলোকে গুরুত্ব দিলে— সেই উম্মত উভয় জাহানের সফলতা অর্জন করতে পারবে। উম্মত যদি আমার থেকে এই চারটি বিষয় নিতে পারে—
এক. আমনত রক্ষা করা
বান্দার মধ্যে যার ওপর আমার হক আছে, তা আমানতের সঙ্গে আদায় করা। আমানতের ব্যাপারে কারো সঙ্গে প্রতারণা না করা। এটাকে ‘হিফজু আমানাতিন’ বলা হয়েছে হাদিসে। অতএব, কারও আমানত নিজের কাছে থাকলে— তা তার কাছে যথাযথ পৌঁছে দেওয়া।
দুই. সর্বাবস্থায় সত্য কথা বলা
সব সময় ও সব অবস্থা এবং পরিবেশে সত্য কথা বলা। সর্বদা চেষ্টা করতে হবে যেন— মুখ থেকে কোনো ধরনের মিথ্যা, অবাস্তব এবং ধোঁকাবাজির কথা বের না হয়। হাদিসে এটাকে ‘সিদকু হাদিছিন’ বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন : যে ৫ কাজ উত্তম বলেছেন নবীজি
তিন. উত্তম চরিত্রের অধিকারী হওয়া
উৎকৃষ্ট ও সর্বোচ্চ উত্তম চরিত্রের অধিকারী হওয়া প্রত্যেক মুমিনের জন্য জরুরি। অর্থাৎ যে চরিত্র দেখলে আল্লাহও খুশি, বান্দাও খুশি হয়। এটাকে হাদিসে ‘হুসনু খালিক্বাতিন’ বলা হয়েছে।
চার. হালাল রিজিক উপার্জন করা
ইবাদত কবুল হওয়ার জন্য রিজিক হালাল হওয়া আবশ্যক। হারামের একটু হলেও ছোঁয়া আছে, এমন রিজিকধারীর ইবাদত কবুল হয় না আল্লাহর কাছে। তাই হালাল উপায়ে রিজিক অন্বেষণ করা এবং হালাল উপায়ে জীবন যাপন করা জরুরি। হাদিসে এটাকে ‘রিজকে হালাল’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘আমার উম্মত যদি আমার থেকে এই চারটি জিনিস নিতে পারে, তাহলে দুনিয়া ও আখিরাত তার হাতের মুঠোয় এসে পড়বে।’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ৬৬৫২)
সুবহানাল্লাহ, একটা মানুষের এর চেয়ে বড় প্রাপ্তি আর কী হতে পারে, যে দুনিয়া-আখিরাত দুটিই হাতের মুঠোয় পেয়ে যাবে। তবে এর জন্য নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত ইত্যাদি পালনের পাশাপাশি নিজের জীবনের অন্যান্য অধ্যায়ও ইসলামের আলোকে সাজাতে হবে।
আরও পড়ুন : যেমন মানুষকে বন্ধু বানাতে বলেছেন নবীজি
উল্লিখিত হাদিসে মহানবী (সা.) মানুষকে যে বিষয়গুলোতে সতর্ক করেছেন, সেগুলোকে আমরা সাধারণত ইবাদতের বাইরে মনে করি; যেমন— ব্যবসা-বাণিজ্য ও ব্যক্তিগত জীবনে আমানত রক্ষা করা, সদা সত্য কথা বলা, উত্তম চরিত্র অর্জন করা, হালাল রিজিক অন্বেষণ করা। এগুলোকে আমরা ইবাদতই মনে করি না, অথচ এগুলো ইবাদতের অংশ।
কোনো মানুষ যদি নিজের জীবনে এই বিষয়গুলোতে সতর্ক হয়ে যায় এবং নবীজির বাতলানো পথে চলে, তাহলে তার পুরো জীবনই পবিত্র হয়ে যাবে। মহান আল্লাহ সবাইকে পবিত্র জীবন গঠনের তাওফিক দান করুন। আমিন।