বিশ্ব হিজাব দিবসের সূচনা করেন বাংলাদেশি নাজমা
আজ বিশ্বব্যাপী হিজাব দিবস পালিত হচ্ছে। আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক হিজাব দিবস পালন শুরু হয় ২০১৩ সালে। অত্যন্ত গর্বের বিষয় যে, একজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত নারীর আহ্বানেই এই দিবসের যাত্রা শুরু। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বসবাসরত ওই নারীর নাম নাজমা খান।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি সর্বপ্রথম হিজাব দিবস পালনের পক্ষে প্রচারণা চালান। এর ধারাবাহিকতায় পরে মুসলিম দেশগুলোতে দিবসটি পালনের প্রচলন শুরু হয়। এভাবে হিজাব দিবস বিশ্বজুড়ে দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করে।
বিজ্ঞাপন
নাজমা খান ১১ বছর বয়সে বাংলাদেশ থেকে আমেরিকায় গিয়েছিলেন। তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে মুসলিম নারীরা ছাড়াও খ্রিস্টান, ইহুদি, হিন্দু, বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী নারীরা হিজাব পরিধান করে দিবসটি পালন করেন। মুসলিম নারীদের হিজাব পরিধানের সংস্কৃতি দেখে তারাও হিজাবের দৃষ্টিনন্দন সংস্কৃতির প্রতি আকৃষ্ট হয়ে থাকেন। হিজাব পরিহিতা অমুসলিম নারীরা হিজাবের ব্যাপারে তাদের নিজ নিজ অনুভূতিও ব্যক্ত করেন।
বিশ্ব হিজাব দিবস অনুষ্ঠিত হওয়ার আগে এ ধরনের একটি ইভেন্টের আয়োজিত হয়েছিল। ২০০৪ সালের ১৭ জানুয়ারি। নাম ছিল ‘অ্যাসেম্বলি ফর প্রটেকশন অব হিজাব’। সার্বিক আয়োজন ব্যবস্থায় ছিল দ্য মুসলিম ওইমেন সোসাইটি (এমডব্লুএস) ও মুসলিম অ্যাসোসিয়েশন অব ব্রিটেন (এমএবি) দুইটি সংগঠন। এটি পরিচালনা করেন ড. আল্লামা ইউসুফ আল-কারজাভি।
বাংলাদেশের এই ইভেন্টের সমর্থনে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করতে দেখা যায়। অ্যাসেম্বলি ফর প্রটেকশন অব হিজাব বর্তমানে সমাজসচেতনতামূলক বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে থাকে।
এই দিক বিবেচনা করে বিভিন্ন দেশে হিজাব-সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য হিজাব মেলার আয়োজন করা হয়ে থাকে। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো হিজাব মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে ২০১৪ সালে। মেলার আয়োজক ছিলেন মার্সি মিশন বাংলাদেশ ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট। মেলার আয়োজকেরা সংবাদমাধ্যমকে জানান, মেলার মূল উদ্দেশ্য ছিল নারী-পুরুষ সবাইকে শালীন পোশাক সম্পর্কে সচেতন করা ও ইসলামি সংস্কৃতির সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ততা বাড়ানো।
আমেরিকার বিখ্যাত মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসক ড. এডওয়ার্ড বগলারের একটি কথা জানা যায়, প্রত্যেক মানুষের মনের আড়ালে আত্মা ধ্বংসকারী একটিউপাদান অতি সংগোপনে অবস্থান করছে। এর অস্তিত্ব সম্পর্কে মানুষ সচেতন নয়। অনেক সময় এর প্রভাবে মানুষ অজানা কারণে মানবিক অস্বস্তি ও অহেতুক নানা প্রকার শারিরীক ও মানসিক ব্যাধিতে ভুগে থাকেন। এই মারাত্মক উপাদানই স্নায়ুবিক বিকৃতি ও দুর্বলতার মূল কারণ। কুচিন্তা ও কুভাবনা এই উপাদানকে আরো শক্তিশালী করে তোলে। খারাপ চিন্তা-ভাবনা পরিহারই এই ক্রিয়াকে কেবল নিষ্ক্রিয় ও দমন করতে পারে। বলা বাহুল্য যে, এমন আত্মঘাতী বিষক্রিয়া থেকে মানুষকে রক্ষা করার জন্য নারীকে পর্দার আড়ালে অবস্থানের নির্দেশ দিয়েছে ইসলাম।
প্রসঙ্গত নারীদের কাছে ফ্যাশন অনুষঙ্গ হিসেবে হিজাব একটি চলমান ট্রেন্ড। কিন্তু পর্দা রক্ষা ছাড়াও হিজাবের নানা উপকারী দিক রয়েছে। বাইরের ধুলাবালি থেকে ত্বক ও চুলের সুরক্ষায় হিজাবের তুলনা হয় না। পাশাপাশি রয়েছে সৌন্দর্যের ব্যাপার। তাই আজকাল পর্দার সঙ্গে হিজাবের চাহিদা অনেক বেড়েছে।