প্রতীকী ছবি

‘রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন’। প্রচলিত বাক্যটি অনেকেই জানেন। আসল কথা হলো- রাগ স্বাস্থ্যপ্রদ একটি স্বাভাবিক আবেগ। কিন্তু মাত্রা ছাড়িয়ে গেলে বা রাগের বিস্ফোরণ ঘটলে, এর গুরুতর পরিণতি হতে পারে। এটা পারস্পরিক সম্পর্ক, স্বাস্থ্য ও মনের অবস্থা— সবকিছুর ক্ষেত্রেই।

স্বাভাবিকতই ইসলাম রাগকে একটি মানবীয় ত্রুটি হিসেবে উল্লেখ করেছে। পাশাপাশি রাগ সংবরণ ও দমনে নানা রকম নির্দেশনা ও উৎসাহ দিয়েছে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, এক ব্যক্তি নবী (সা.)-কে বলল, ‘আমাকে উপদেশ দিন, হে আল্লাহর রাসুল।’ তিনি বললেন, ‘রাগ কোরো না।’ রাসুল (সা.) ‘রাগ কোরো না।’— কথাটি কয়েকবার বলেছেন। (বুখারি, হাদিস : ৬১১৬)

রাগের অনুভূতিটি হয়তো সমস্যা নয়। কিন্তু কীভাবে রাগ সামলানো যায়— সেটিই গুরুত্বপূর্ণ কথা। রাগ দমনের কিছু পদ্ধতি হাদিসে বর্ণিত হয়েছে—

আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা

রাসুল (সা.)-এর কাছে বসে দুই ব্যক্তি পরস্পর কটু বাক্যালাপ করছিল। ফলে একজনের চোখ লাল হয়ে উঠে এবং গলার শিরা ফুলে যায়। তখন রাসুল (সা.) বললেন— 

‘আমি একটি বাক্য জানি, যদি সে তা পড়ে তবে তার এ অবস্থা কেটে যাবে। সে বাক্যটি হলো, (আউজুবিল্লাহি মিনাশ শায়তানির রাজিম) আমি আল্লাহর কাছে অভিশপ্ত শয়তান থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৬৮১২)

চুপ থাকা

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা শিক্ষা দাও এবং সহজ করো। কঠিন কোরো না। যখন তুমি রাগান্বিত হও তখন চুপ থাকো; যখন তুমি রাগান্বিত হও তখন চুপ থাকো; যখন তুমি রাগান্বিত হও তখন চুপ থাকো।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ৪৭৮৬)

শারীরিক অবস্থার পরিবর্তন

রাসুল (সা.) হাদিসে বলেন— 

যখন তোমাদের কেউ রাগ করে, তখন সে দাঁড়ানো থাকলে, সে যেন বসে পড়ে। এতে যদি তার রাগ চলে যায় ভালো। না হয়, তবে সে যেন শুয়ে পড়ে।

(সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৪৭৮৪)

অজু করা

আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয় রাগ শয়তানের পক্ষ থেকে। আর শয়তান আগুনের তৈরি। নিশ্চয় পানির দ্বারা আগুন নির্বাপিত হয়। অতএব তোমাদের কেউ যদি রাগান্বিত হয়, সে যেন অজু করে।’ (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৪৭৮৬)