মৃতের জন্য সওয়াব পৌঁছাতে যা করবেন
অল্পক্ষণের পৃথিবীতে কেউ স্থায়ী নয়। মৃত্যুর দূত হামলে পড়ে ঠিক নির্ধারিত সময়ে। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘প্রত্যেক প্রাণিকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। আর কেয়ামতের দিন তোমাদের পরিপূর্ণ প্রতিদান দেওয়া হবে। তারপর যাকে জাহান্নাম থেকে দূরে রাখা হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে,সেই সফলকাম। আর পার্থিব জীবন ধোঁকার বস্তু ছাড়া কিছুই নয়।’ (সুরা আল ইমরান, আয়াত : ১৮৫)
দোয়া-মাগফিরাত করা
মৃতদের জন্য দোয়া ও মাগফিরাত করা গুরুত্বপূর্ণ। পবিত্র কোরআনে এ প্রসঙ্গে আল্লাহর নবী ইবরাহিম (আ.)-এর দোয়া বর্ণিত হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘হে আমার প্রতিপালক! যেদিন হিসাব প্রতিষ্ঠিত হবে, সেদিন আমাকে, আমার পিতা-মাতা ও সব ঈমানদারকে ক্ষমা করুন।’ (সুরা ইবরাহিম, আয়াত : ৪১)
বিজ্ঞাপন
অন্য জায়গায় নূহ (আ.)-এর এ দোয়া বর্ণিত হয়েছে—
হে আমার প্রতিপালক! আমাকে ক্ষমা করে দিন এবং আমার পিতা-মাতাকেও এবং যে ঈমান অবস্থায় আমার ঘরে প্রবেশ করেছে— আর সমস্ত মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীকেও।
(সুরা নুহ, আয়াত : ২৮)
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘যখন মানুষ মারা যায়, তখন তার সব আমল বন্ধ হয়ে যায়। শুধু তিনটি আমলের উপকার সে ভোগ করতে পারে— এক. সদকায়ে জারিয়া। দুই. এমন জ্ঞান, যার দ্বারা মানুষ উপকৃত হয়। তিন. ওই সুসন্তান, যে তার জন্য দোয়া করে। ’ (মুসলিম, হাদিস : ১৬৩১)
তাদের জন্য দান-সদকা করা
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, একব্যক্তি রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করে, আমার পিতা ইন্তেকাল করেছেন এবং ধন-সম্পদ রেখে গেছেন কিন্তু অসিয়ত করে যাননি। আমি যদি তার পক্ষ থেকে সদকা করি, তবে কি তার (গোনাহের) কাফফারা হবে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। (মুসলিম, হাদিস : ১৬৩০)
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, সাদ ইবনে উবাদা (রা.)-এর অনুপস্থিতিতে তার মা মৃত্যু বরণ করেন। তখন তিনি রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করেন, আমার অনুপস্থিতিতে আমার মা মারা গেছেন। আমি যদি তাঁর পক্ষ থেকে সদকা করি, তবে কি তাঁর কোনো উপকারে আসবে? তিনি বলেন, হ্যাঁ। সাদ (রা.) বলেন, “আমি আপনাকে সাক্ষী রেখে বলছি যে, আমার ‘মিখরাফ’ নামক বাগানটি আমার মায়ের জন্য সদকা করে দিলাম।” (বুখারি, হাদিস : ২৭৫৬)
কবর জিয়ারত করা
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘আমি এর আগে তোমাদের কবর জিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম, তবে এখন থেকে অনুমতি দিলাম, তোমরা কবর জিয়ারত করো। কেননা তা তোমাদের দুনিয়াবিমুখ করে এবং পরকালকে স্মরণ করিয়ে দেয়।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৫৭১)
হাদিসে বর্ণিত কবর জিয়ারতের একটি দোয়া এরকম—
السلام عليكم أهل الديار من المؤمنين والمسلمين وإنا إن شاء الله للاحقون أسأل الله لنا ولكم العافية
উচ্চারণ : আসসালামু আলাইকুম আহলাদ দিয়ারি মিনাল মু’মিনিনা ওয়াল মুসলিমিন; ওয়া ইন্না ইনশা আল্লাহু লালাহিক্বুন, আসআলুল্লাহা লানা ওয়া লাকুমুল আফিয়া।
অর্থ : এই কবরস্থানের বাসিন্দা মুসলিম-মুমিনদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক। আমাদের পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সকলের প্রতি আল্লাহ রহম করুন। ইনশাআল্লাহ আমরাও আপনাদের সাথে মিলিত হব। আমাদের জন্য এবং আপনাদের জন্য আল্লাহর কাছে সুরক্ষা কামনা করি।’ (মুসলিম, হাদিস : ৯৭৭)