প্রথম কোরআন অবতীর্ণ হয় যে পাহাড়ে
জাবালে নুর বা নুর পর্বত। এই পাহাড়ের একটি বিশেষ স্থান গারে হেরা বা ‘হেরা গুহা’। যেখান থেকে সারা বিশ্ব মানবতার জন্য আলোর বার্তা নিয়ে এসেছিলেন— মহানবী (সা.)। এই গুহায় তিনি নবুওয়তের আগে ধ্যানমগ্ন থাকতেন। একদিন আচমকা হজরত জিবরিল (আ.) ওহি নিয়ে তার কাছে আসেন। সেখানে নবী করিম (সা.) নবুওয়ত প্রাপ্ত হন।
হেরা গুহা কোথায় অবস্থিত?
বিজ্ঞাপন
জাবালে নুরকে বিশ্ববাসী হেরা গুহার নামে চেনে। সবার কাছে এই পাহাড় হেরা গুহা নামে পরিচিত। এই পাহাড় মসজিদে হারাম থেকে দুই মাইল দূরে অবস্থিত। জাবালে নুরে অবস্থিত হেরা গুহাটি দৈর্ঘ্যে ১২ ফুট ও প্রস্থে ৫ ফুট ৩ ইঞ্চি।
বিগত বছরগুলোতে প্রয়োজনীয় সংস্কার কাজের অভাবে হেরা গুহার ব্যাপক সৌন্দর্যহানি হয়। দর্শনার্থীদের মাত্রাতিরিক্ত চলাচল ও ফেলে আসা বিভিন্ন জিনিসের কারণে মূল অবয়বও অনেকটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। দীর্ঘদিন ধরেই সংস্কারের পরিকল্পনা থাকলেও স্বাভাবিক সময়ে হেরা গুহায় বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত হাজিদের ভীড়ের কারণে তা সম্ভব হয়নি। তবে গত বছরের লকডাউনের সুযোগ তৈরি হওয়ায় প্রয়োজনীয় সংস্কার করে নেওয়া হয়।
হেরা গুহা থেকে সরানো হয়েছে ‘সেসব’ জিনিস
অন্যদিকে একসময় অনেকে বিভিন্ন মান্নত পূরণের জন্য পাথরে কালি দিয়ে বিভিন্ন কিছু লিখে আসত। কিন্তু এখন আর হেরা গুহায় কোনো লেখা বা অঙ্কন নেই। সংস্কারের পর সেগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
সংস্কার কাজের অংশ হিসেবে সিঁড়ি সম্প্রসারণ ও রাস্তা বড় করা হয়েছে। গুহার আশেপাশে থাকা অবাঞ্চিত পাথর সরিয়ে ফেলাসহ, বিভিন্ন পাথরের গায়ের লেখা মুছে ফেলা হয়েছে। গুহার পাশে হাজিদের ফেলে আসা নানা জিনিসপত্র, পুঁতে রাখা তাবিজ-কবজ ও অস্থায়ীভাবে নির্মিত অবকাঠামোগুলো অপসারণ করা হয়েছে।
হেরা গুহার উচ্চতা কত?
হেরা গুহায় উঠতে শক্তিশালী ও সামর্থ্যবান মানুষদের প্রায় ১ ঘণ্টারও বেশি সময় লেগে যায়। উচ্চতা ২ হাজার ১০০ ফুট। যে হেরা গুহায় পবিত্র কোরআন নাজিল হয় সেটি পর্বতের ৮৯০ ফুট উঁচুতে অবস্থিত। এর দৈর্ঘ্য ১২ ফুট ও প্রস্থ ৫ ফুট ৩ ইঞ্চি।
হেরা গুহা পাহাড়ের সর্বোচ্চ চূড়ায় না হলেও সেখানে যেতে হলে পাহাড়ের সর্বোচ্চ চূড়ায় ওঠতে হয়। সেখানে ওঠা ছাড়া হেরা গুহায় যাওয়ার কোনো বিকল্প পথ নেই। পাহাড়ের চূড়া থেকে বিপরীত দিকে একটু নিচে অবস্থিত হেরা গুহায় যাওয়া বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। ভয়ঙ্কর এমন পথ পাড়ি দিয়ে পাহাড়ের হেরা গুহায় পৌঁছাতে বেশ কয়েকবার বিশ্রাম নিতে হয়।
পাহাড়ের ওপর থেকে মসজিদের হারামের মিনার দেখা যায়। পাহাড়ের বড় বড় পাথরের ছোট ছোট ফাঁক দিয়ে লোকজন গুহার ভেতরে প্রবেশ করেন। গুহার প্রবেশপথ ছাড়া সবদিক পাথরবেষ্টিত। মেঝেতে রয়েছে পাথর খণ্ড, যেটা জায়নামাজ হিসেবে ব্যবহার করা হয়।