কানাডার জাতীয় টিভিতে প্রথম হিজাবধারী উপস্থাপিকা
হিজাব পরে সংবাদ উপস্থাপন করে ইতিহাস তৈরি করেছেন কানাডার মুসলিম সাংবাদিক জিনেলা মাসা। কানাডা থেকে সম্প্রচারিত জাতীয় টিভিতে তিনি প্রথমবারের মতো হিজাব পরে সংবাদ উপস্থাপন করেছেন।
সোমবার (১১ ডিসেম্বর) কানাডার সিবিসি-তে হিজাব পরে ‘কানাডা টুনাইট উইথ জিনেলা মাসা’ নামে একটি প্রোগ্রাম শুরু করেন। টরেন্টো স্টারে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এমনটা জানা গেছে।
বিজ্ঞাপন
এর আগে প্রথম হিজাবী সাংবাদিক হিসেবে কাজ শুরু করেন মাসা। ২০১৫ সালে অন্টারিও ভিত্তিক টেলিভিশন সিটিভিতে শুরু হয় তারা যাত্রা। এছাড়াও ২০১৬ সালে টরেন্টোতে সিটি নিউজের নিউজকাস্টে কাজ করেন তিনি।
৩৩ বছর বয়সী ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এ শিক্ষার্থী সিবিসি নিউজ নেটওয়ার্কে সাম্প্রতিক ঘটনাবলি নিয়ে সংবাদ উপস্থাপন করেন।
আমার দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে। কানাডার সরকারি টিভিতে যোগদানের মাধ্যমে এটির বাস্তবায়ন হচ্ছে।
সংবাদমাধ্যমকে জিনেলা মাসা
জিনেলা আরো বলেন, ‘আনন্দের এই সন্ধিক্ষণে আমি বেশ আবেগাপ্লুত। বলতে গেছে কিছুটা ভীতও। কারণ স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম থেকে আমি জাতীয় টিভিতে যোগ দিচ্ছি। এতে চ্যালেঞ্জের পাশাপাশি দায়িত্বও বাড়বে। জাতীয় ব্রডকাস্টে যোগ দেওয়ায় সবার দৃষ্টি আমার প্রতি নিবদ্ধ থাকবে।
মাসা আরো বলেন, ‘বিশ্বের সবচেয়ে বৈচিত্রময় শহর টরেন্টো। আর সেখানকার একটি বৃহত্তম মিডিয়ার নিউজরুমে যখন আমি ইন্টার্নশিপ শুরু করি তখন কিছুটা অবাক হয়েছিলাম। কারণ বহুজাতিক পরিবেশে বেড়ে উঠতে গিয়ে আমি যা দেখেছি— ওখানে তা পাইনি।’
কারণ জিনেলার সামনে ওই পরিবেশে আদর্শ হিসেবে কেউ ছিল না। মাসা বলেন—
‘নিজের পথ নিজেকেই তৈরি করতে হয়। আমাকে নিজেই নিজের উদাহরণ হতে হয়। আমাকে বাধা দেওয়া লোকদের চুপ হয়ে যেতে হয়।’
জিনেলা মাসা জাতিগতভাবে ল্যাটিন আমেরিকান। তার জন্ম পানামায়। শৈশবে ছোট বোনসহ মায়ের সঙ্গে কানাডায় পাড়ি জমান।
বাকপটু হিসেবে মাসার খ্যাতি শৈশব থেকে। স্কুলের সব প্রতিযোগিতায় সেরাদের কাতারে থাকতো তাঁর নাম। ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যোগাযোগ শিক্ষা বিষয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেন তিনি। পরবর্তীতে সেনেকা কলেজ থেকে সাংবাদিকতা বিষয়ে ডিপ্লোমা করেন। মূলত মায়ের অনুরোধেই টিভি সম্প্রচার নিয়ে পড়াশোনা করেন তিনি।